মাগুরায় শেষ মুহূর্তে জমে উঠেছে পশুর হাট। এ বছর জেলায় স্থায়ী অস্থায়ী মোট ২২টি হাট বসেছে। এগুলোর মধ্যে সদরে ১১টি, শ্রীপুরে ২টি, মহম্মদপুরে ৬টি ও শালিখায় ৩টি হাট বসেছে। এসব হাটে অল্পকিছু ভারতীয় গরু আসায় অন্যান্য বারের তুলনায় এবছর দেশি গরু-ছাগলের দাম একটু বেশি হাকাচ্ছেন বিক্রেতারা। এছাড়া কোনো কোনো হাট-বাজারে অতিরিক্ত খাজনা আদায়ের অভিযোগ রয়েছে ক্রেতাদের। বিকিকিনিতে সন্তুষ্ট নন পশু ব্যবসায়ী ও ক্রেতা উভয়ে। তবে জাল টাকা পরীক্ষা করার মেশিনসহ হাট-বাজারগুলোতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে স্থানীয় প্রশাসন। প্রতিটি হাটেই রয়েছে পুলিশের অস্থায়ী ক্যাম্প।বিভিন্ন হাট ঘুরে দেখা গেছে, এসব হাটে অনেক গরু, ছাগল, মহিষ উঠেছে। কোথাও কোথাও রাস্তার উপরও পশু রাখা হয়েছে। মাঝারি আকারের গরুর চাহিদা বেশি থাকায় দামটাও একটু বেশি গুণতে হচ্ছে সাধারণ ক্রেতাদের। পাশাপাশি বড় গরুর ক্রেতা কম হওয়ায় তুলনামূলক এর দাম কম রয়েছে।ঈদুল আজহার বাকি মাত্র দুই দিন। তাই বৃষ্টি উপেক্ষা করেই সামর্থবানরা ছুটছেন পছন্দের পশু কিনতে এ হাট থেকে ও হাটে। অন্যান্যবারের মত এবারও কাটাখালী, আলমখালী, হাটগোপালপুর, ইছাখাদা, আবালপুরসহ বেশ কয়েকটি হাটে ছাগল গরুসহ কোরবানির পশু বেশি উঠেছে। এসব হাট বাজারগুলোতেই মানুষ ভিড় জমাচ্ছেন।কাটাখালী পশুর হাটে মঘী থেকে আসা বদর উদ্দীন মোল্লা নামের এক ব্যবসায়ী জাগো নিউজকে জানান, ভারত থেকে গরু আসায় দেশি গরুর দাম কমতে শুরু করেছে। তিনি শুক্রবার আটটি গরু হাটে এনেছিলেন। মঙ্গলবার পর্যন্ত একটি গরুও বিক্রি করতে না পারলেও বুধবার দুইটি গরু বিক্রি করতে পেরেছেন।আলমখালী হাটের ইয়াকুব নামের অপর এক ব্যবসায়ী জাগো নিউজকে বলেন, গতবার লাভ ভালো না পাওয়ায় একটি গরু ৩ লাখ টাকা বলা সত্ত্বেও তিনি গরুটি বিক্রি না করে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন। এক বছর টানার পর এবার সেই গরুটি বাজারে নিয়ে এসেছেন তিনি। এবার গরুটির দাম সর্বোচ্চ সাড়ে ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত উঠেছে। তার লক্ষ্য পাঁচ লাখ টাকা। হাটমুখী কয়েকজন ক্রেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, টানা বৃষ্টির কারনে প্রথম দিকে তারা পশু কিনতে না আসলেও এখন বাধ্য হয়েই বৃষ্টি উপেক্ষা করে ছুটছেন হাটে। কিছু ক্রেতা আবার পশুর দাম যাচাইয়ের জন্য এ হাট ও হাট করছেন। তাদের অনেকেই জানান শহুরে লোকদের জায়গা সংকট থাকায় শেষভাগে গরু কিনে থাকেন তারা। এবছর খাশির বাজার মন্দা হওয়ায় অনেক ক্রেতাকে খাসিও কিনতে দেখা গেছে। মাগুরার সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার সুদর্শন কুমার রায় জাগো নিউজকে জানান, অজ্ঞান পার্টি, মলম পার্টিসহ দালাল চক্রের খপ্পরে কোনো ব্যবসায়ী বা ক্রেতা যাতে ক্ষতিগ্রস্থ না হয় সেজন্য তারা প্রতিটি হাটে পুলিশের অস্থায়ী ক্যাম্প বসিয়েছেন। এসব ক্যাম্পে জাল টাকা পরীক্ষা করা হয়। বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি ব্যাংক তাদের সহযোগিতা করছে। পুলিশের এ কর্মকর্তা আরো বলেন, ক্রেতারা যাতে পশু নিয়ে সুষ্ঠুভাবে বাড়ি ফিরতে পারেন এবং মহাসড়কে যাতে যাত্রাপথে দূরপাল্লার যাত্রীদের কোনো বিঘ্ন না ঘটে সেজন্য পুলিশ টহল বাড়ানো হয়েছে।মো. আরাফাত হোসেন/এমজেড/এমএস
Advertisement