বহু আলোচনা-সমালোচনার পর অবশেষে ১ নভেম্বর থেকে কার্যকর হচ্ছে ‘সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮’। মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) আইনটি কার্যকরের তারিখ ঘোষণা করে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ থেকে আদেশ জারি করা হয়েছে। পরে এটি গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়।
Advertisement
সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব মো. নজরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত আদেশে বলা হয়, ‘সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮’ এর ধারা ১ এর উপ-ধারা (২) এ দেয়া ক্ষমতাবলে সরকার ১ নভেম্বর তারিখকে আইন কার্যকর হওয়ার তারিখ নির্ধারণ করল।
গত বছরের ৮ অক্টোবর ‘সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮’ এর গেজেট জারি করা হয়।
পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের বাধার মুখে এতদিন আইনটি বাস্তবায়নে যায়নি সরকার।
Advertisement
২০১৭ সালের ২৭ মার্চ সড়ক পরিবহন আইনের খসড়াটি নীতিগত অনুমোদন দিয়েছিল মন্ত্রিসভা। এরপর থেমে ছিল উদ্যোগ। ২০১৮ সালের ২৯ জুলাই রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে বাস চাপায় দুই শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার পর নিরাপদ সড়ক বাস্তবায়নের দাবিতে রাজধানীজুড়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী আইনটি মন্ত্রিসভায় উপস্থাপনের নির্দেশ দেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের পর আইন মন্ত্রণালয় খসড়া আইনটি দ্রুত ভেটিং (পরীক্ষা-নিরীক্ষা) করে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ে পাঠায়। অল্প সময়ের মধ্যে আইনটি সংসদেও পাস হয়।
বেপরোয়া গাড়ি চালিয়ে দুর্ঘটনার মাধ্যমে গুরুতর আহত করলে বা প্রাণহানি ঘটালে চালকের সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের কারাদণ্ড বা অর্থদণ্ডের বিধান রাখা হয় এ আইনে। একই সঙ্গে আইনে ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার ন্যূনতম যোগ্যতা অষ্টম শ্রেণি নির্ধারণ ও বিভিন্ন অপরাধের ধারাগুলো জামিন অযোগ্য রাখা হয়।
নতুন সড়ক পরিবহন আইনের বিভিন্ন ধারার বিরোধিতা করে আসছেন পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা। তারা আইনের বিভিন্ন ধারা বাতিলের দাবিতে আন্দোলনেও নামেন। মালিক-শ্রমিকদের দাবির মধ্যে রয়েছে- সড়ক পরিবহন আইনের সব ধারা জামিনযোগ্য করা, সড়ক দুর্ঘটনায় শ্রমিকের অর্থদণ্ড পাঁচ লাখ টাকার বিধান বাতিল করা, ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার শিক্ষাগত যোগ্যতা পঞ্চম শ্রেণি করা ইত্যাদি।
এই প্রেক্ষাপটে গত ১৭ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সড়ক নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে সড়ক বাস্তবায়নে চ্যালেঞ্জ নির্ধারণ ও বাস্তবসম্মত সমাধানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি উপ-কমিটি করা হয়। কমিটিতে সদস্য হিসেবে ছিলেন আইনমন্ত্রী ও রেলপথমন্ত্রী।
Advertisement
গত ২৫ সেপ্টেম্বর পরিবহন মালিক ও শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে উপ-কমিটির সভা শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সড়ক পরিবহন আইন সংশোধনের সুপারিশ সম্বলিত প্রতিবেদন জাতীয় সড়ক নিরাপত্তা কাউন্সিলের কাছে দাখিল করতে যাচ্ছেন বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।
তবে পরে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী আইনটি সংশোধনের বিষয়টি নাকচ করেন।
আরএমএম/এসএইচএস/এমএস