ফিটনেসবিহীন গাড়ি এবং লাইসেন্স ছাড়া চালকদের যানবাহন বা গাড়িতে তেল, গ্যাস, পেট্রল এবং জ্বালানি সরবরাহ না করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। সংশ্লিষ্টদের এ নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে, ফিটনেসবিহীন প্রায় চার লাখ যানবাহন নবায়ন করতে আরও দুই মাস সময় দিয়েছেন আদালত।
Advertisement
ফিটনেস নবায়নে সময় বেঁধে দেয়ার পর এ সংক্রান্ত বাংলাদেশ বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) প্রতিবেদন আদালতে উপস্থাপনের পর বুধবার (২৩ অক্টোবর) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কেএম হাফিজুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে বিআরটিএর পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মঈন ফিরোজী, রাফিউল ইসলাম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল হেলেনা বেগম চায়না।
এর আগে প্রায় পাঁচ লাখ গাড়ির মধ্যে হাইকোর্টের বেঁধে দেয়া দুই মাস সময়ের মধ্যে শুধুমাত্র ৮৯ হাজার ২৬৯ গাড়ি ফিটনেস নবায়ন করা হয়েছে বলে প্রতিবেদন দিয়েছে বিআরটিএ।
Advertisement
গত ২৩ জুলাই এক আদেশে ঢাকাসহ সারাদেশে লাইসেন্স নিয়ে ফিটনেস নবায়ন না করা গাড়িগুলো দুই মাসের মধ্যে ফিটনেস নবায়ন করতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। তারও আগে ১ আগস্ট থেকে ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে এটি সম্পন্ন করতে নির্দেশ দেয়া হয়।
পরে মঈন ফিরোজী জানান, ফিটনেসবিহীন যত গাড়ি রাস্তায় চলছে তাদের গ্যাস-ফুয়েল সাপ্লাই বন্ধ করার আদেশ দিয়েছেন।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক বলেন, দুই মাস অথবা ফিটনেস নবায়ন না করা পর্যন্ত তাদের জ্বালানি সরবরাহ না করতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আদালত পরবর্তী আদেশের জন্য ১০ জানুয়ারি দিন ধার্য করেছেন।
প্রতিবেদনে বিআরটিএ জানায়, হাইকোর্টের বেঁধে দেয়া সময়ের মধ্যে শুধুমাত্র ৮৯ হাজার ২৬৯ গাড়ি ফিটনেস নবায়ন করেছে। গত ২৩ জুলাই এক আদেশে ঢাকাসহ সারা দেশে লাইসেন্স নিয়ে ফিটনেস নবায়ন না করা গাড়িগুলো দুই মাসের মধ্যে নবায়ন করতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। ১ আগস্ট (বৃহস্পতিবার) থেকে ৩০ সেপ্টেম্বরের (সোমবার) মধ্যে এটি সম্পন্ন করতে নির্দেশ দেয়া হয়।
Advertisement
এর আগে আদালতে দাখিল করা বিআরটিএর প্রতিবেদনে বলা হয়, ঢাকাসহ সারা দেশে ফিটনেস নবায়ন না করা গাড়ির সংখ্যা চার লাখ ৭৯ হাজার ৩২০। এর মধ্যে ঢাকা বিভাগে দুই লাখ ৬১ হাজার ১১৩, চট্টগ্রামে এক লাখ ১৯ হাজার ৫৮৮, রাজশাহীতে ২৬ হাজার ২৪০, রংপুরে ছয় হাজার ৫৬৮, খুলনায় ১৫ হাজার ৬৬৮, সিলেটে ৪৪ হাজার ৮০৫ এবং বরিশাল বিভাগে পাঁচ হাজার ৩৩৮ গাড়ি ফিটনেসবিহীন রয়েছে।
গত ২৪ জুন আদালত সারা দেশের ফিটনেসবিহীন গাড়ির তথ্য জানতে চেয়েছিলেন। সে অনুসারে বিআরটিএ হাইকোর্টে প্রতিবেদন দেয়। গাড়ি ও চালকের লাইসেন্স এবং ফিটনেসবিহীন গাড়ি সংক্রান্ত একটি গণমাধ্যমে গত ২৩ মার্চ প্রকাশিত প্রতিবেদন আদালতের নজরের আনেন অ্যাডভোকেট সৈয়দ মামুন মাহবুব। এরপর আদালত রুলসহ আদেশ দেন।
‘রুলে ফিটনেসবিহীন গাড়ি, রেজিস্ট্রেশনবিহীন গাড়ি ও ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালানোর বিষয়ে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, পাশাপাশি সংবিধানের ৩২ ধারার আলোকে জীবন বাঁচার অধিকার বাস্তবায়নে কেন মোটর ভেহিক্যাল আইন ১৯৮৩ এর বিধানগুলো সঠিকভাবে পালনের জন্য কেন নির্দেশনা দেয়া হবে না তা জানতে চান আদালত।
রুলের বিবাদীরা হচ্ছেন- সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, পুলিশের আইজি, চেয়ারম্যান বিআরটিএ, ঢাকার ডিসি ট্রাফিক (উত্তর ও দক্ষিণ), বিআরটিএ ডিরেক্টর (রোড নিরাপত্তা) ও দুদক চেয়ারম্যান।
এফএইচ/জেএইচ/এএইচ/জেআইএম/এমএস