দারিদ্র্যকে জয় করেছেন অদম্য মেধাবী সূচী রাণী দাশ। তিনি সুনামগঞ্জের দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার নগর গ্রামের মৃত কার্ত্তিক চন্দ্র দাশের মেয়ে। শত কষ্টের মাঝেও পড়াশোনা চালিয়ে তিনি এবার চাঁদপুর মেডিকেল কলেজে এমবিবিএস কোর্সে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। কিন্তু অর্থাভাবে ভর্তি হতে পারছিলেন না।
Advertisement
মঙ্গলবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে দেখা করতে এলে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ সূচীকে ভর্তির জন্য ২০ হাজার টাকা এবং চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক মো. মাজেদুর রহমান খানের সঙ্গে কথা বলে তার পড়াশোনার বিষয়ে সহযোগিতার আশ্বাস নেন।
সূচী রাণী দাশ জানান, তিনি ২০১৬ সালে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার গণিনগর ষোলগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে মাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন এবং ২০১৮ সালে সিলেট সরকারি মহিলা কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায়ও জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন। কিন্তু পরিবারের অসচ্ছলতার কারণে মেডিকেল কোচিং করতে পারেননি এবং ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারেননি। পরে তিনি সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। এ বছর মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে চাঁদপুর মেডিকেল কলেজ ভর্তির সুযোগ পান।
সূচীর আরও তিন বোন ও এক ভাই রয়েছে। তার বাবার রেখে যাওয়া সামান্য জমি বর্গা দিয়ে বছরের দু-তিন মাস পরিবার চলে। তার ভাই সিলেট এমসি কলেজ সিলেট থেকে এ বছর মাস্টার্স সম্পন্ন করেছেন। টিউশনি করে তিনি কোনো রকমে সংসারের ব্যয় নির্বাহ করছেন। তার বড় বোন এমসি কলেজে ৪র্থ বর্ষে অধ্যয়নরত।
Advertisement
ভর্তির জন্য আর্থিক সহায়তা পেয়ে সূচী রাণী দাশ আবেগাপ্লুত হয়ে বলেন, আমার স্বপ্ন ছিল মেডিকেলে পড়ার। জেলা প্রশাসক স্যার আমাকে পড়াশোনার জন্য যে সাহায্য করেছেন আমি কোনো দিন ভুলবো না। আমি ওনার প্রতি চিরকৃতজ্ঞ।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ বলেন, সূচী মেধাবী শিক্ষার্থী তার উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ রয়েছে। টাকার অভাবে কোনো শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষা থেকে বঞ্চিত হবে তা এই সরকার চায় না। তাই সূচীর ভর্তির জন্য ২০ হাজার টাকা ও চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক মো. মাজেদুর রহমান খানকেও বলেছি তার পড়াশোনার বিষয়ে সহযোগিতা করার জন্য।
মোসাইদ রাহাত/এমবিআর/জেআইএম
Advertisement