ভোলার বোরহানউদ্দিনে পুলিশ এবং স্থানীয়দের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহতের ঘটনাকে ‘গণহত্যা’ আখ্যা দিয়ে আগামী বুধবার (২৩ অক্টোবর) সারাদেশে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করবে বিএনপি।
Advertisement
সোমবার দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
তিনি বলেন, ভোলার হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে বিএনপির উদ্যোগে আগামী বুধবার ঢাকা মহানগরীর থানায় থানায় এবং সারাদেশের জেলা ও মহানগরীতে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালিত হবে।
মোশাররফ বলেন, আমরা সরকারের উদ্দেশে বলতে চাই- জনগণকে যারা অবজ্ঞা করে তাদের পরিণতি শুভ হয় না। গণমানুষের জানমাল নিয়ে ছিনিমিনি খেলবেন না। যথেষ্ট হয়েছে। ভোলার গণহত্যার বিচার করতে হবে। ভোলার জনগণের দাবি অবিলম্বে মেনে নিতে হবে।
Advertisement
তিনি বলেন, আমি ভোলার সাধারণ মানুষের ওপর পুলিশের নির্বিচার গুলিবর্ষণে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।
খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, এই দেশ অনাদিকাল থেকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক অনুপম নিদর্শন হয়ে আছে। এখানে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে মানুষের শান্তিপূর্ণ বসবাস। কোনো ধর্ম নিয়ে কটাক্ষ করা বা কারও ধর্মবিশ্বাসকে অনাকাঙ্ক্ষিত মন্তব্য করায় দেশের আবহমানকালের ঐতিহ্যে নেই। আমরা মনে করি ভোলার ঘটনা পূর্বপরিকল্পিত। যে কারণে ভোলাকে রক্তে রঞ্জিত করা হয়েছে তার সুষ্ঠু তদন্ত ও দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক সাজা দিতে হবে।
ভোলার ঘটনায় নিহতদের রুহের মাগফিরাত এবং যারা আহত হয়েছে তাদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করে মোশাররফ বলেন, মহান আল্লাহ ও মহানবীকে (সা.) কটূক্তির প্রতিবাদে এক প্রতিবাদ সমাবেশে পুলিশের নির্বিচার গুলিবর্ষণ ও ভয়াবহ পৈশাচিকতায় চারজন নিহত ও শতাধিক আহত হয়েছে। যেকোনো ধর্ম সম্পর্কে অশালীন মন্তব্য করলে মানুষের বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠা নতুন কিছু নয় এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু আমরা আশ্চর্যের সঙ্গে লক্ষ্য করছি স্থানীয় প্রশাসন সুকৌশলে মানুষের প্রতিবাদটিকে সাম্প্রদায়িক রূপ দেয়ার ঘৃণ্য চক্রান্ত চালাচ্ছে। ভোলা হত্যাকাণ্ডের পর সরকার ও প্রশাসনের বক্তব্য এবং মন্তব্য শুনলে অনুধাবন করতে পারবেন তারা দুঃখ প্রকাশ না করে হত্যাকাণ্ডের পক্ষে সাফাই গাইছে আর প্রধানমন্ত্রী তার স্বভাবসুলভ ভাষায় প্রতিবাদকারীদের প্রতি হুমকি ধামকি দিচ্ছেন।
মোশারফ আরও বলেন, এই ভোটারবিহীন সরকারের দুঃশাসনে মানুষের জীবনের মূল্য এখন পশুপাখির মূল্যের চেয়ে কমে গেছে। বিদেশে অনেক বড় বড় বিক্ষোভে পুলিশকে একটি বুলেট খরচ না করেও ধৈর্য সহকারে মোকাবিলা করতে দেখেছি আমরা। আর এই দেশে কোনো ঘটনা ঘটলেই অসহিষ্ণু আচরণ করে পুলিশ বাহিনী, ক্ষমতা হারানোর শঙ্কায় প্রতিনিয়ত অস্থির সরকার এবং তাদের রক্ষাকারী বাহিনী। বিক্ষোভ করতে দিলে কি সরকারের পতন হয়ে যেত?
Advertisement
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আতাউর রহমান ঢালী, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মো. সেলিমুজ্জামান সেলিম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
কেএইচ/বিএ/এমকেএইচ