ক্যাম্পাস

জগন্নাথের ১০৪ অধ্যাপকের ১০১ জনই পিএইচডি ডিগ্রিধারী

‘উন্নয়নের জন্য সৃজনশীলতা ও উদ্ভাবন’ স্লোগানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) চতুর্দশ বিশ্ববিদ্যালয় দিবস পালিত হয়েছে নানা কর্মসূচিতে।

Advertisement

রোববার সকাল ৯টা থেকে দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের মধ্যে ছিল শোভাযাত্রা, বার্ষিক চারুকলা প্রদর্শনী, আলোচনা সভা, নাটক পরিবেশনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও প্রকাশনা উৎসব। সকাল ৯ টা ১০মিনিটে শহীদ মিনার চত্বরে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা উত্তোলন করা হয়। বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের শুভ উদ্বোধন করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান।

এরপর উপাচার্যের নেতৃত্বে একটি শোভাযাত্রা শহীদ মিনার চত্বর থেকে শুরু হয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে রায় সাহেব বাজার মোড় ঘুরে, বাংলাবাজার ওভারব্রিজ পরিক্রমণ করে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের দ্বিতীয় গেট দিয়ে প্রবেশ করে শেষ হয়। র্যালি শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনের নিচতলায় চারুকলা বিভাগের উদ্যোগে ২য় বর্ষিক শিল্পকর্ম প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন উপাচার্য। এতে বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের আঁকা ছবি ও অন্যান্য শিল্পকর্ম স্থান পায়।

বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপাচার্য বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সকলের সার্বিক সহযোগিতায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আজ প্রতিষ্ঠিত। একাডেমিকভাবে সেশনজট মুক্ত, কারিকুলামের আধুনিকায়ন ও মেধাবী শিক্ষকবৃন্দের প্রয়াসে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আজ সকল অভিভাবক ও শিক্ষার্থীবৃন্দের ভর্তির জন্য মূল আকর্ষণ। এছাড়াও এই বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর কোনো র্যাগিং ও অন্য রকম অন্যায় আচরণের ঘটনা সংঘটিত হয় না। এই সকল ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অত্যন্ত সজাগ রয়েছেন।

Advertisement

তিনি বলেন, ‘আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ই বাংলাদেশে একমাত্র প্রতিষ্ঠান যেখানে ১০৪ জন অধ্যাপকের মধ্যে ১০১ জন অধ্যাপক পিএইচডি ডিগ্রিধারী। বাকি তিনজনের ডিগ্রি প্রক্রিয়াধীন। আর এই বিশ্ববিদ্যালয়ে আগামী ২০২০ সালের জুন মাসের পর কোন শিক্ষক পিএইচডি ডিগ্রি ছাড়া অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পাবেন না। গবেষণায় তরুণ শিক্ষকবৃন্দ অনেক এগিয়ে গিয়েছে, প্রায় শতাধিক শিক্ষক ইউরোপ, আমেরিকা, কানাডার মতো দেশে তাদের উচ্চশিক্ষা সম্পন্ন করছেন এবং কেউ কেউ ডিগ্রি সম্পন্ন করে আবার বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করেছেন।

তিনি আরো বলেন, অবকাঠামোগত সমস্যা থাকার পরেও আমরা অতি স্বল্প সময়ে অনেক এগিয়েছি। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিবহনের স্বল্পতা দূরীকরণে সম্প্রতি একসাথে ১৫টি বাস নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ক্রয় করা হয়েছে, আর কয়েকদিনের মধ্যে নিজস্ব মালিকানায় দোতলা বাস ক্রয় করা হবে এবং বর্তমান সময়ে পরিবহনের দিক দিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীবৃন্দের সহযোগিতার জন্য জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় অগ্রগামী।’

আলোচনা সভায় রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. ওহিদুজ্জামানের সঞ্চালনায় বিভিন্ন অনুষদের ডিন, শিক্ষক সমিতির সভাপতি, অধ্যাপক ড. দীপিকা রাণী সরকার, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. নূর মোহাম্মাদ, জবি প্রেসক্লাবের সভাপতি জাহিদুল ইসলাম সাদেক, কর্মচারী সমিতির সভাপতি ইসরাফিল, সহায়ক কর্মচারী সমিতির সভাপতি আবু সাঈদ শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করেন।

বলো সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে নাট্যকলা বিভাগের তাদারকিতে শুন্যন নাট্যদলের উদ্যোগে ‘লাল জমিন’ নাটক পরিবেশিত হয়। ‘লাল জমিন’ নাটকটি মুক্তিযুদ্ধের। আর মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস এবং বাংলাদেশ জন্মের ইতিহাস সঠিকভাবে উপস্থাপন করাই ‘লাল জমিন’ নাটকের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য।

Advertisement

এছাড়াও ভাষা শহীদ রফিক ভবনের নিচতলায় দিনব্যাপী প্রকাশনা প্রদশর্নীর আয়োজন ছিল। প্রদর্শনীতে ১৪তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে বিশেষ বার্তার মোড়ক উন্মোচন করা হয়। এরপর দুপুর সাড়ে ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গীত বিভাগের তত্ত্বাবধানে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে সামাজিক বিজ্ঞান ভবন চত্বরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়।

এনএফ/এমএস