গ্যাসের সংকটে খাবার তৈরিতে সবচেয়ে বেশি কাজে আসে রাইস কুকার। বিশেষ করে ভাত-ভর্তা তৈরিতে এর জুড়ি নেই। বর্তমান ব্যস্ত সময়ে কম ঝামেলায় খাবার তৈরি করতে কাজে আসে রাইস কুকার। কিন্তু রাইস কুকারে কি ভাত ছাড়া আর কিছু রান্না করা যায় না? নামে রাইস কুকার হলেও এতে তৈরি করা যায় আরও অনেক মজার খাবার। কিন্তু রাইস কুকারে রান্নার রেসিপি সাধারণ রান্নার রেসিপির থেকে একটু আলাদা। তাই রাইস কুকারে সেসব খাবার রান্নার আগে জেনে নিতে হবে রান্নার প্রণালি। চলুন জেনে নেয়া যাক ভাত ছাড়াও রাইস কুকারে রান্না করা যায় এমন সাতটি খাবার তৈরির রেসিপি-
Advertisement
খিচুড়ি: প্রথমে পরিমাণমতো বাসমতি বা পোলাও চাল এবং পছন্দমতো মসুর বা মুগের ডাল ভালো করে ধুয়ে ভিজিয়ে রাখতে হবে। আধঘণ্টার মতো ভিজিয়ে রাখার পর চাল ও ডালের সাথে একে একে আদা, পেঁয়াজ ও রসুন বাটা, পরিমাণমতো হলুদ, মরিচ, ধনিয়া ও জিরা গুঁড়ো, লবণ, তেজপাতা ও জয়ত্রী একসাথে মিশিয়ে নিতে হবে। এরপর তেল বা ঘি দিয়ে ভালোভাবে মাখিয়ে নিয়ে চাল ও ডালের পরিমাণের দ্বিগুণ পানি দিয়ে কুকারে বসিয়ে দিতে হবে। এবার রাইস কুকার চালু করে দিলেই নির্দিষ্ট সময় পর তৈরি হয়ে যাবে ঝটপট খিচুড়ি। ইচ্ছে করলে স্বাদ অনুযায়ী বিভিন্ন ধরনের শাক সবজি দিয়েও সবজি খিচুড়ি তৈরি করা যায়।
পোলাও: চাল ভালো করে ধুয়ে কিছুক্ষণ পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। এরপর রাইস কুকার ঢাকনা খোলা অবস্থায় ভেতরের প্যানে তেল বা ঘি ঢেলে কুকারটি চালু করে দিতে হবে। তেল কিছুটা গরম হয়ে এলে প্যানে পেঁয়াজ কুচি, গরম মশলা ও পোলাওর চাল দিয়ে কাঠের চামচ অথবা রাইস কুকারের চামচ দিয়ে নাড়তে হবে। চাল হালকা ভেজে আসলে পরিমাণ মতো পানি দিতে হবে। সাধারণত চালের পরিমাণের দ্বিগুণ গরম পানি দিতে হয়। এরপর রাইস কুকারের ঢাকনা বন্ধ করে দিলেই আপনার কাজ শেষ। নির্দিষ্ট সময় শেষে আপনা-আপনি রাইস কুকার ‘ওয়ার্ম’ এ চলে আসবে। চাইলে রান্নার মাঝে ঢাকনা উল্টিয়েও দেখে নিতে পারেন। পোলাও হয়ে এলে দু’চামচ ঘি দিয়ে পরিবেশন করুন মজাদার পোলাও।
মুরগির রোস্ট: মুরগি পছন্দমতো টুকরো করে লবণ, তেল, পেঁয়াজ, রসুন ও আদা বাটা, টক দই, মরিচ, হলুদ, জিরা ও গরম মশলার গুঁড়ো, তেজপাতা দিয়ে মাংস ভালোভাবে মাখিয়ে নিয়ে কিছু সময়ের জন্যে রেখে দিতে হবে। এবার রাইস কুকারের প্যানে হালকা তেল দিয়ে শুধু মুরগির টুকরোগুলো হালকা ভেজে নিতে হবে। এরপর বাকি মিশ্রণটি প্যানে ঢেলে দিয়ে পরিমাণ মতো পানি দিয়ে কুকারের ঢাকনা বন্ধ করে দিতে হবে। রান্না হয়ে যাওয়ার পর ওয়ার্ম সুইচে এলে ঢাকনা উল্টে দেখতে হবে। যদি ঝোলের পরিমাণ কমিয়ে আনতে চান, তাহলে ওয়ার্ম অবস্থায় আরো কিছু সময় রেখে দিতে হবে।
Advertisement
মাছ: রাইস কুকারে মাছ রান্না করার জন্য প্রথমে কয়েক টুকরো মাছ ধুয়ে এর সাথে হলুদ ও মরিচের গুঁড়া মাখিয়ে কিছু সময় রেখে দিতে হবে। এর সাথে পেঁয়াজ ও রসুন বাটা, লবণ ও কয়েক চামচ তেল দিয়ে মিশিয়ে রাইস কুকারে বসিয়ে দিতে হবে। নির্দিষ্ট সময় শেষে মাছ রান্না হয়ে আসলে ঢাকনা খুলে কয়েকটি কাঁচা মরিচ ও ধনেপাতা দিয়ে নামিয়ে নিতে হবে।
কেক: প্রথমে কেকের আকার অনুযায়ী ময়দা, মাখন, ডিম, লবণ, চিনি, দুধ, ভ্যানিলা বা চকোলেট মিশিয়ে রাইস কুকারের প্যানে হালকা তেল মাখিয়ে মিশ্রণটি ঢেলে দিতে হবে। এবার ঢাকনা লাগিয়ে দিয়ে পাঁচ মিনিট অপেক্ষা করার পর কাঁটা চামচ, ছুরি বা একটি টুথপিক দিয়ে কেক হয়েছে কিনা পরীক্ষা করে দেখতে হবে। যদি ছুরির গায়ে কেকের কিছু অংশ লেগে থাকে, তাহলে আরো কিছুক্ষণ রাইস কুকার চালু করে রাখতে হবে।
ডিম: রাইস কুকারে ডিমের অমলেট বানানোর জন্যে প্রথমে একটি বাটিতে ডিম, পেঁয়াজ কুচি, কাঁচা মরিচ ও লবণ দিয়ে ফেটে নিতে হবে। এরপর প্যানে কিছুটা তেল দিতে হবে। তেল গরম হয়ে এলে মিশ্রণটি ঢেলে দিয়ে কুকারের ঢাকনা বন্ধ করে দিতে হবে। কিছুক্ষণ পর ঢাকনা উল্টে ডিম দেখে নিতে হবে। ডিম হয়ে এলে রাইস কুকার বন্ধ করে দিতে হবে।
সবজি সেদ্ধ: রাইস কুকারের সাথে ঝাঁকার মতো একটি স্টিমার সাথে দেয়া থাকে। এই উপকরণটির সাহায্যে খুব সহজেই যেকোনো সবজি সিদ্ধ করে ফেলা যায়। সবজি ভালোভাবে ধুয়ে নিয়ে ছোট ছোট টুকরো করে কেটে নিতে হবে। কুকারে ভাত রান্না করার সময় অথবা প্যানে কিছু পানি দিয়ে স্টিমারে সবজিগুলো রেখে ঢাকনা বন্ধ করে দিলেই হলো। ভাতের সাথে সাথেই সবজি সেদ্ধ হয়ে রান্না হয়ে যাবে।
Advertisement
এইচএন/পিআর