গভীর সমুদ্রে সৃষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে সামুদ্রিক ঝড়ের কবলে পড়ে বঙ্গোপসাগরে ট্রলারডুবিতে নিখোঁজ বরগুনার শতাধিক জেলের এখনো সন্ধান মেলেনি। গত শনিবার রাত থেকে সোমবার সকাল পর্যন্ত উত্তাল বঙ্গোপসাগরে ঝড়ের কবলে পড়ে ডুবে যায় বরগুনার অন্তত ২৫টি মাছ ধরার ট্রলার। এছাড়া ঝড়ের কবলে পড়ে আরো অর্ধ শতাধিক ট্রলারসহ শতাধিক জেলে এখনো নিখোঁজ রয়েছে।বরগুনা জেলা মৎসজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী জাগো নিউজকে জানান, গত শনিবার ভোররাতে ঝড়ের কবলে পড়ে বঙ্গোপসাগরের কচিখালী, নারিকলে বাড়িয়া, কটকা ও সাতবাম এলাকায় অন্তত ১২টি মাছ ধরার ট্রলার ডুবে যায়। এতে ওইসব ট্রলারে থাকা শতাধিক জেলেকে সাগরে ভাসমান অবস্থায় দেখে এফবি আল্লাহর দান ও এফবি মায়ের দোয়াসহ বেশ কয়েকটি ট্রলার তাদেরকে উদ্ধার করলেও এখনো পর্যন্ত আজিজুল হক, শাহিন, আবদুল কুদ্দুসের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।তিনি আরো জানান, শনিবারের ট্রলারডুবির ঘটনায় তিনজন নিখোঁজ অবস্থায়, রোববার রাতে আবারো প্রচন্ড সামুদ্রিক ঝড়ের করলে পড়ে ডুবে যায় আরো ১৩টি ট্রলার। এতে ডুবে যাওয়া ট্রলারে থাকা শতাধিক জেলের মধ্য থেকে কিছু জেলে বঙ্গোপসাগরের সুন্দরবন সংলগ্ন উপকূল হিরণ পয়েন্ট, দুবলা, আলোরকোল এবং নারকেল বাড়িয়া এলাকায় আশ্রয় নিয়েছে। সেসব জেলেদের উদ্ধারে জেলা ট্রলার মালিক সমিতির উদ্যোগে ট্রলারযোগে পৃথক চারটি উদ্ধারদল পাঠানো হয়েছে।এখন পর্যন্ত ঝড়ের কবলে পড়ে ঠিক কতগুলো ট্রলার ডুবে গেছে এবং কতজন জেলে নিখোঁজ রয়েছেন, এ ব্যাপারে কোনো পরিসংখ্যান জানা যায়নি। তবে বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আবদুল মান্নান মাঝি জানান, সুন্দরবন সংলগ্ন উপকূল হিরণ পয়েন্ট, দুবলা, আলোরকোল এবং নারকেল বাড়িয়া এলাকায় আশ্রয় নেয়া জেলেদের নিয়ে রাতে উদ্ধারকারী জেলা ট্রলার মালিক সমিতির উদ্যোগে পাঠানো ট্রলার চারটি পাথরঘাটায় পৌঁছানোর কথা রয়েছে। সুন্দরবন সংলগ্ন উপকূলে আশ্রয় নেয়া জেলেদের সঠিক সংখ্যা জানা গেলে, নিখোঁজ জেলে ও ট্রলারের সঠিক পরিসংখ্যান জানা যাবে বলেও জানান তিনি। বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতি সূত্রে জানা গেছে, রোববার সন্ধ্যা থেকে সোমবার বিকেল পর্যন্ত নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ডের সদস্যরা দুবলা জেলে পল্লীর বিভিন্ন চর, ফেয়ারওয়ে বয়া ও হিরণ পয়েন্ট এলাকা থেকে শতাধিক জেলেকে উদ্ধার করেছে।অপরদিকে, ট্রলারডুবির ঘটনায় সোমবার বিকেল পর্যন্ত নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ড কর্তৃক সাগরে ভাসমান অবস্থায় উদ্ধারকৃত জেলেদেরকে জাহাজ বিএনএস শাহ পরাণের মাধ্যমে নৌবাহিনীর মংলা ঘাঁটিতে আনা হবে। অন্যদিকে, সুন্দরবন বিভাগ কর্তৃক উদ্ধার হওয়া জেলেদের বিভিন্ন মাছ ধরা ট্রলারে করে লোকালয়ের উদ্দেশ্যে পাঠিয়ে দিয়েছে বলে জানা গেছে। এছাড়া সাগর সংলগ্ন এলাকার সুন্দরবনের টহল ফাঁড়ি ও ক্যাম্পগুলোকে জেলেদের উদ্ধারে সহযোগিতা করতে নির্দেশ দিয়েছে বন বিভাগ।কোস্টগার্ড সূত্রে জানা গেছে, সোমবার বিকেল পর্যন্ত নৌবাহিনীর সঙ্গে যৌথভাবে অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযানে মোট ১০১ জন জেলেকে উদ্ধার করেছেন তারা।এমএএস/আরআইপি
Advertisement