অমর্ত্য সেনের পর দ্বিতীয় বাঙালি হিসেবে অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন ভারতীয় বাঙালি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক অভিজিৎ ব্যানার্জি। বৈশ্বিক দারিদ্র্য বিমোচনের লড়াইয়ে কার্যকর এক তত্ত্ব হাজির করে স্ত্রী ইসথার ডাফলোর সঙ্গে আরেক মার্কিন অর্থনীতিবিদ মাইকেল ক্রেমারও এই পুরস্কার ভাগাভাগি করে নেবেন।
Advertisement
দুর্ভিক্ষ, মানব উন্নয়ন তত্ত্ব, জনকল্যাণ অর্থনীতি ও গণদারিদ্র্যের অন্তর্নিহিত কার্যকারণ বিষয়ে গবেষণা এবং উদারনৈতিক রাজনীতিতে অবদান রাখার জন্য ১৯৯৮ সালে অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন অমর্ত্য সেন। অভিজিতের নোবেল জয়ের পর উল্লাস প্রকাশ করেছেন এই অর্থনীতিবিদ; পাশাপাশি দুঃখ প্রকাশ করেছেন তিনি। তার এই দুঃখবোধের পেছনে রয়েছে অভিজিতের বাবার ছেলের এই সম্মানজনক পুরস্কারপ্রাপ্তি দেখে যেতে না পারা।
তিনি বলেন, ‘অভিজিতের নোবেল প্রাপ্তির খবরে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। দারিদ্র বিষয়ে নতুন ধরনের মূল্যবান কাজ করেছেন অভিজিত দম্পতি ও ক্রেমার। সেই কাজের ফল নানা দিক দিয়ে দারিদ্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধে আমাদের সাহায্য করবে।’
অমর্ত্য সেন বলেন, ‘আমি নিজে একাধিক কারণে ভীষণ খুশি। এর মধ্যে একটা কারণ হলো, অভিজিৎকে আমি তার শৈশব থেকে ভালোভাবে জানি এবং তার চিন্তাশক্তিকে আমি বরাবর বাহবা দিয়ে এসেছি। আমার একমাত্র দুঃখ হলো, তার বাবা আমার বন্ধু দীপক বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে এটা দেখে যেতে পারলেন না। তবে অভিজিতের মা নির্মলা এই উৎসবে যোগ দেবেন, সেটা ভেবেও আনন্দিত বোধ করছি।’
Advertisement
বিশ্ব ব্যাঙ্কের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ কৌশিক বসু বলেন, ‘খুবই ভালো লাগছে এই ভেবে যে, রোববার রাতেই খাবার টেবিলে বসে বলছিলাম, অভিজিৎ-এস্থার-ক্রেমার নোবেল পেতে পারেন! আমার ছেলে এসেছিল রোববার। সে অভিজিৎ আর এস্থারের কাছে পিএইচ ডি করল। অভিজিৎদের নোবেলপ্রাপ্তি অসম্ভব ভাল খবর। প্রত্যাশিত খবরও। আরসিটির যে ব্যবহার তারা শুরু করেন, এখন সারা বিশ্বে সেটি ব্যবহৃত হচ্ছে। হার্ড বিহেভিয়র বা সঙ্ঘবদ্ধ আচরণ নিয়েও অভিজিতের খুব ভাল কাজ আছে।’
লন্ডন স্কুল অব ইকনমিকসের অধ্যাপক মৈত্রীশ ঘটক বলেন, ‘আমি উচ্ছ্বসিত! হার্ভার্ডে অভিজিৎ আমার পিএইচ ডি সুপারভাইজার ছিলেন। একসঙ্গে বেশ কিছু প্রবন্ধও লিখেছি। নোবেলের খবরটা যখন পেলাম, তখন ক্লাসে তাদেরই একটা পেপার পড়াচ্ছিলাম। উন্নয়নের অর্থনীতির এক পথিকৃৎ পুরস্কার পেলেন, অর্থনীতির অন্যান্য শাখাতেও তার মৌলিক অবদান আছে।’
এসআইএস/এমএস
Advertisement