দেশজুড়ে

ভ্যানচালকের নামে বরাদ্দ টিন লাগল চেয়ারম্যানের বাড়িতে

লালমনিরহাটের আদিতমারীতে এক ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সরকারি ত্রাণের ঢেউটিন আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। দেড়বছর পরও বরাদ্দপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে টিন বুঝিয়ে দেননি তিনি। উপজেলার পলাশী ইউনিয়নে এই ঘটনা ঘটেছে।

Advertisement

পুলিশ ও ভুক্তভোগী সূত্রে জানা গেছে উপজেলা ত্রাণ অফিস থেকে দেড় বছর আগে পলাশী ইউনিয়নের নামুড়ি গ্রামের মৃত সামছুল ইসলামের ছেলে ভ্যানচালক একরামুল হকের নামে ত্রাণের ১৬টি ঢেউটিন বরাদ্দ হয়। সেই টিন একরামুলকে না দিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান শওকত আলী নিজের বাড়িতে ব্যবহার করেন।

এছাড়া একরামুলের নামে একটি সোলার প্যানেল বরাদ্দ নিয়ে সেটিও নিজের কাজে ব্যবহার করেন চেয়ারম্যান। একরামুল সেই টিন ও সোলার চাইতে গেলে আজ দেব, কাল দেব বলে টালবাহনা করতে থাকেন ইউপি চেয়ারম্যান শওকত আলী।

এ অবস্থায় নিরুপায় হয়ে টিন ও সোলার প্যানেল উদ্ধারে একরামুল গত ৯ অক্টোবর জেলা প্রশাসকসহ সরকারের বিভিন্ন দফতরে লিখিত অভিযোগ করেন। বিষয়টি জানতে পেয়ে ইউপি চেয়ারম্যান শওকত আলী গত রোববার (১৩ অক্টোবর) কৌশলে একরামুলকে বাড়িতে ডেকে নিয়ে একটি সাদা কাগজে স্বাক্ষর করিয়ে ব্যবহৃত ১২টি ঢেউটিন ফেরত দেন। তবে সেগুলো ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সরবরাহকৃত ৪৪ মিলিমিটার নয়, ৩২ মিলিমিটারের। নেই ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সিলমেহারও।

Advertisement

এ ঘটনায় ত্রাণের প্রকৃত টিন ও সোলার প্যানেল পাওয়ার জন্য এবং স্বাক্ষর নেয়া সাদা কাগজ উদ্ধারে রোববার রাতেই আদিতমারী থানায় অভিযোগ দেন একরামুল।

ভ্যানচালক একরামুল হক বলেন, টিন দেয়ার কথা বলে দেড় বছর আগে স্বাক্ষর নেন চেয়ারম্যান, কিন্তু পাইনি। দেই, দিচ্ছি বলে দেড় বছর পার হওয়ায় বিভিন্ন স্থানে অভিযোগ দেই। এরপর বাড়িতে ডেকে নিয়ে চেয়ারম্যান ১২টি টিন দিয়ে জোরপূর্বক সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেন।

আদিতমারী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মজিদুল ইসলাম বলেন, ত্রাণ শাখার সরবরাহ করা ঢেউটিনে ত্রাণের সিলমোহর দেয়া রয়েছে এবং টিনগুলো ৪৪ মিলি গ্রামের।

ইউপি চেয়ারম্যান শওকত আলী ত্রাণের টিন আত্মসাতের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, দেড় বছর আগেই প্রাপ্তি স্বীকারপত্র নিয়ে ত্রাণের ঢেউটিন একরামুলকে দেয়া হয়েছে। আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করতেই সে মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছে।

Advertisement

আদিতমারী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সাইফুল ইসলাম বলেন, অভিযোগটি তদন্ত করতে ঘটনাস্থলে পুলিশ কর্মকর্তা পাঠানো হয়েছে। তদন্তে সত্যতা মিললে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

রবিউল হাসান/এমএমজেড/এমএস