আইন-আদালত

রাজীবের পরিবারকে এক মাসের মধ্যে ১০ লাখ টাকা দেয়ার নির্দেশ

সড়ক দুর্ঘটনায় তিতুমীর কলেজের ছাত্র রাজীবের মৃত্যুর ঘটনায় তার পরিবারকে ১০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে নির্দেশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। আগামী ৩০ দিনের মধ্যে এ ক্ষতিপূরণ দিতে স্বজন পরিবহন কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে, এই মামলার পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ১৭ নভেম্বর দিন ধার্য করেছেন আদালত।

Advertisement

রোববার (১৩ অক্টোবর) সকালে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের বিচারপতির আপিল বিভাগের বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

আদালতে আজ স্বজন পরিবহনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট শফিকুল ইসলাম বাবুল। রিটের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল।

এর আগে গত ২০ জুন রাজীবের দুই ভাইকে ৫০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়ার নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। দুই মাসের মধ্যে বিটিআরসি ও স্বজন পরিবহনের মালিককে ২৫ লাখ টাকা করে পরিশোধ করতে বলা হয়। পরে এই আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করে স্বজন পরিবহন কর্তৃপক্ষ। তারই ধারাবাহিকতায় আজ আবেদনটি শুনানি হয়।

Advertisement

আদালতে স্বজন পরিবহনের আইনজীবী বলেন, এই মামলার রায় ইতোমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে। আমরা লিভ টু আপিল দায়ের করব। তখন আদালত বলেন, আপনারা এক মাসের মধ্যে আগে ১০ লাখ টাকা রাজীবের পরিবারকে দিয়ে আসেন। তারপর আপনাদের আবেদন শুনব। বিআরটিসির ক্ষতিপূরণ দেয়ার বিষয়টি দেখবেন বলে মন্তব্য করেন আদালত।

গত বছরের ৩ এপ্রিল রাজধানীর কারওয়ান বাজারের সার্ক ফোয়ারার কাছে বিআরটিসি ও স্বজন পরিবহনের দুই বাসের রেষারেষিতে হাত হারান ছাত্র রাজীব। দুই বাসের চাপায় তার ডান হাত কনুইয়ের ওপর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। দুর্ঘটনার পরপরই তাকে পান্থপথের শমরিতা হাসপাতালে নেয়া হয়।

পরদিন ৪ এপ্রিল রাজীবের চিকিৎসা ও ক্ষতিপূরণের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিটটি দায়ের করেছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল।

তবে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাজীবের অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজে স্থানান্তর করা হয়। ১৩ দিন চিকিৎসার পর ১৬ এপ্রিল মধ্যরাতে সেখানেই শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন রাজীব। পরে রাজীবের পরিবারকে এক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।

Advertisement

পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার বাঁশবাড়ি গ্রামের রাজীব তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ার সময় মা এবং অষ্টম শ্রেণিতে পড়ার সময় বাবাকে হারান। ঢাকার মতিঝিলে খালার বাসায় থেকে এসএসসি ও এইচএসসি পাস করে ভর্তি হন স্নাতকে। কখনও টিউশনি করে, কখনও বা পার্টটাইম কাজ করে নিজে পড়াশোনা করেছেন এবং দুই ভাইকেও বানিয়েছেন কোরআনের হাফেজ।

এফএইচ/এসআর/পিআর