কুরআনুল কারিমে সব ধরনের ইবাদতের মধ্যে নামাজকে বিশেষভাবে জিকির হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর আমার স্মরণের জন্য নামাজ প্রতিষ্ঠা কর।’ (সুরা ত্বহা : আয়াত ১৪)
Advertisement
হজের কাজসমূহের বর্ণনায় নামাজকে জিকির হিসেবে সাব্যস্ত করা হয়েছে। আল্লাহ বলেন-‘তোমরা আরাফাত থেকে ফিরে আসার পরে মাশআরুল হারামের কাছে (মুজদালিফায়) আল্লাহর জিকির করবে।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ১৯৮ )
এ আয়াতে আল্লাহ তাআলা মাশআরুলহারাম (মুজদালিফায়) তাসবিহ-তাহলিল বোঝাননি আর মুজদালিফায় তাসবিহ-তাহলিল হজের বিধি-বিধানের অন্তর্ভুক্ত নয়।
হজের বিধান হচ্ছে, আরাফাতের ময়দান থেকে মাগরিবের নামাজ না পড়ে মুজদালিফায় চলে আসা। মুজদালিফায় এসে মাগরিব এবং ইশা নামাজ এক আজানে আলাদা আলাদা ইক্বামতে আদায় করা।
Advertisement
আল্লাহর এ নির্দেশ থেকে বুঝতে পারি যে, এখানে আল্লাহর জিকিরের নির্দেশ বলতে নামাজকে বোঝানো হয়েছে। ইমাম তাবারি রহমাতুল্লাহি আলাইহি বর্ণনা করেন-‘তোমরা যখন আরাফাত থেকে ফিরে মুজদালিফায় চলে আসবে তখন আল্লাহর জিকির করবে, এখানে জিকির বলতে মাশআরুল হারামের কাছে নামাজ ও দোয়া করাকে বুঝানো হয়েছে।’
নামাজ যে মহান আল্লাহর অন্যতম জিকির, তা প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাদিস থেকেও সুস্পষ্ট। হাদিসে এসেছে-
হজরত আবু সাঈদ খুদরি ও হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে বর্ণিত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি রাতে ঘুম থেকে ওঠে তার স্ত্রীকে জাগাবে এবং দু’জনই দুই রাকাআত তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করবে, আল্লাহর দরবারে তারা আল্লাহর শ্রেষ্ঠ জাকিরিন বা জিকিরকারী নারী-পুরুষ হিসেবে অন্তর্ভূক্ত হবে।’
তাহাজ্জুদ হলো ফজিলতপূর্ণ নফল নামাজ। হাদিসের আলোকে এ নফল নামাজই যদি আল্লাহর শ্রেষ্ঠ জিকির হয়। আর যে নামাজ বান্দার জন্য কুরআনুল কারিমে বাধ্যতামূলক করে দেয়া হয়েছে, সে নামাজের গুরুত্ব কত?
Advertisement
সুতরাং মুমিন মুসলমানের জন্য আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত ফরজ নামাজ আদায়ের মাধ্যমে সেরা জিকিরকারী নারী-পুরুষ হিসেবে নিজেকে আল্লাহর দরবারে উপস্থাপন করার একান্ত জরুরি।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে ফরজ নামাজ আদায়ের পর সুন্নাত ও নফল নামাজ পড়ার মাধ্যমে নিজেদের শ্রেষ্ঠ জিকিকারীর মর্যাদা লাভের তাওফিক দান করুন। দুনিয়া ও পরকালের নেয়ামত লাভ করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/জেআইএম