রান্নায় মশলা কেন ব্যবহার করেন? এর সহজ উত্তরটি হলো স্বাদ ও গন্ধের জন্য। কিন্তু স্বাদ আর গন্ধ বৃদ্ধির পাশাপাশি এসব মশলা যে আমাদের শরীরের কতটা উপকারে আসে তা হয়তো অনেকে ভাবেনই না। প্রতিদিন রান্নায় আমরা যেসব মশলা ব্যবহার করি তা কোনো না কোনোভাবে আমাদের শরীরকে ভেতর থেকে সুস্থ রাখে। জেনে নিন-
Advertisement
মরিচ: মরিচ খাবারকে সুস্বাদু করে তোলে। কাঁচা মরিচে প্রচুর ভিটামিন সি থাকে। নিয়মিত কাঁচা মরিচ খেলে বুকে সর্দি বসার হাত থেকে মুক্তি পাবেন, চট করে ঠান্ডা লাগবে না, বাড়বে ওজন কমার হার আর নিয়ন্ত্রণে থাকবে রক্তচাপ।
গোলমরিচ: গোলমরিচ হজমের পক্ষে খুব সহায়ক। সর্দিকাশি সারাতে বা মেটাবলিজম বাড়াতেও এর জুড়ি নেই । যেকোনো রান্নায় এক চিমটি গোলমরিচের গুঁড়া যোগ করলে স্বাদ বেড়ে যাবে বহুগুণ। নিয়মিত গোলমরিচ খেলে সেরে যায় ত্বকের নানা সমস্যা।
হলুদ: অ্যান্টিঅক্সিডান্ট, অ্যান্টিভাইরাল, অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টিকারসিনোজেনিক,অ্যান্টিমিউটাজেনিক, অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি বলে হলুদের খুব সুনাম। যারা অস্টিও ও রিউম্যাটয়েড আর্থারাইটিসে ভুগছেন, তারা অবশ্যই প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় হলুদ রাখুন। হলুদের কারকিউমিন ফ্রি র্যাডিকালসের আক্রমণ ঠেকিয়ে রাখতে দারুণ কার্যকর বলে মনে করা হয়।
Advertisement
আদা: আদা গা বমিভাব কমায়, ঠান্ডা লাগার হাত থেকে রক্ষা করতে পারে আপনাকে, বাড়ায় হজমশক্তিও। বহু সনাতন চাইনিজ ওষুধের আবশ্যক উপাদান হচ্ছে আদার নির্যাস।
রসুন: রসুনের অ্যান্টিমাইক্রোবায়াল প্রপার্টি নিয়ন্ত্রণে রাখে রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা। এর অ্যান্টিঅক্সিডান্ট প্রপার্টি নিয়ন্ত্রণ করে ব্লাড প্রেসার ও সুগারের মাত্রা।
জিরা: হজমের সমস্যায় ভুগলে সারারাত একগ্লাস পানিতে এক চিমটি আস্ত জিরা ভিজিয়ে রেখে দিন। পরদিন সকালে পানিটুকু ছেঁকে খালি পেটে পান করুন। হজমের সমস্যা দূর হবে। পেট খারাপের সমস্যায় যারা নিয়মিত ভোগেন, তাদের জিরা দিয়ে রান্না করা পাতলা ঝোল খাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়।
দারুচিনি: আপনার কি পেট ফাঁপা বা ইনফ্লামেশনের সমস্যা আছে? তা হলে আপনার রোজের খাদ্যতালিকায় দারুচিনি রেখে দেখুন। দই বা দুধের মধ্যে দারচিনির গুঁড়ো মিশিয়ে খাওয়া যায়, আদা-দারচিনি ফুটিয়ে চায়ের মতো করেও খেতে পারেন।
Advertisement
লবঙ্গ: লবঙ্গ হচ্ছে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টিফাঙ্গাল আর অ্যান্টিসেপটিক গুণে সমৃদ্ধ। সেই সঙ্গে এর মধ্যে পাবেন অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস আর একাধিক মিনারেলের গুণও। অ্যারোমাথেরাপিতে নানা ধরনের ব্যথা নিরাময়ের জন্য লবঙ্গের তেলের উপর আস্থা রাখা হয়। দাঁতে ব্যথা বা পেটে ব্যথার চিকিৎসাতেও ব্যবহার করা হয় লবঙ্গ তেল।
মেথি: ক্ষুধামন্দা, এলার্জি ইত্যাদি দূর করতে ব্যবহার করুন মেথি। এক্ষেত্রে কিছু মেথি রাতে ভিজিয়ে রেখে সেই পানিটুকু সকালে খালি পেটে খান। হজমক্ষমতা বাড়াতেও মেথি খুব সাহায্য করে।
ধনে: ধনেপাতা উপকারি তো বটেই, গোটা ধনে রান্নায় ব্যবহার করুন নিয়মিত। তা আপনার হজমশক্তি ভালো রাখবে। লিভারের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে ও পেট পরিষ্কার রাখতে দারুণ সাহায্য করে এর ডায়েটারি ফাইবার।
এইচএন/জেআইএম