আন্তর্জাতিক

ধারণার চেয়েও নিম্নগতি ভারতের অর্থনীতিতে

ভারতের অর্থনীতির গতি যতটা নিম্নমুখী ভাবা হয়েছিল প্রকৃত অবস্থা কি তার চেয়েও খারাপ? তেমন ইঙ্গিতই মিলেছে ইন্টারন্যাশনাল মানিটারি ফান্ড (আইএমএফ) বা আন্তর্জাতিক অর্থভাণ্ডারের নতুন ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিভার কথায়। বিশ্ব অর্থনীতিতে ধীরগতির প্রভাব ভারতে ‘বেশি প্রকট’ বলে মন্তব্য করেছেন এই কর্মকর্তা।শুধু তাই নয়, ভারতের মতো দেশে এই মন্দা যে আরও বেশ কিছুদিন চলবে তারও পূর্বাভাস দিয়েছেন তিনি।

Advertisement

দু’দিন আগেই স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার চেয়ারম্যান রজনীশ কুমার বলেছিলেন, মন্দার ধাক্কা কাটিয়ে ভারত ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। উৎসবের মৌসুম শুরু হতেই অর্থনীতি চাঙ্গা হতে শুরু করেছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। কিন্তু এসবিআই চেয়ারম্যানের এমন বক্তব্যকে মিথ্যা প্রমাণ করে সদ্য দায়িত্ব নেওয়া আইএমএফ প্রধান বললেন, মন্দার প্রভাব আরও দীর্ঘস্থায়ী হবে। বিশ্বের ৯০ শতাংশ দেশেই ২০১৯-২০ অর্থবর্ষে অর্থনীতির গতি আরও নিম্নমুখী হবে। ভারতে সেই হার হবে আরও বেশি নিম্নগতির।

ক্রিস্টিন ল্যাগার্দের উত্তরসূরি হিসেবে দু’মাস আগেই দায়িত্ব নিয়েছেন ক্রিস্টালিনা জর্জিভা। কিন্তু জর্জিভা এমন এক সময়ে দায়িত্ব নিয়েছেন, যখন বিশ্ব অর্থনীতি সঙ্কটের মুখে। তাই আইএমএফ-এর প্রধান হিসেবে তার প্রথম ভাষণেও উঠে এসেছে সেই শঙ্কার বার্তাই। জর্জিভা বলেন, দু’বছর আগেও বিশ্ব অর্থনীতিতে একটা সুসংহত বৃদ্ধি ছিল। বিশ্বের ৭৫ শতাংশ দেশের জিডিপি বৃদ্ধির হার ছিল ঊর্ধ্বমুখী। কিন্তু এখন অর্থনীতি সমান তালে নিম্নমুখী। ২০১৯ সালের মধ্যেই বিশ্বের ৯০ শতাংশ দেশে বৃদ্ধির হার আরও কমবে।

পুরো বিশ্বের অর্থনৈতিক অবস্থার একটি চিত্র তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন আন্তর্জাতিক অর্থভাণ্ডারের প্রধান। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানিতে বেকারত্ব ঐতিহাসিকভাবে বেড়েছে। এমনকি, যুক্তরাষ্ট্র-জাপান, ইউরো জোনের মতো মজবুত অর্থনীতির দেশেও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের গতি মন্থর। আবার ভারত, ব্রাজিলের মতো বৃহত্তম উন্নয়নশীল অর্থনীতির দেশগুলোতে এই মন্দা আরও প্রকট হবে। এই প্রভাব গত এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ হতে পারে এবং তার ফলও সুদুর প্রসারী হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন জর্জিভা।

Advertisement

গত ছয় বছরের তুলনায় ভারতে জিডিপি বৃদ্ধির হার ৫ শতাংশ কমেছে। এই পরিস্থিতিতে রিজার্ভ ব্যাংক সম্প্রতি সম্ভাব্য বৃদ্ধির হার ৬.৯ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৬.১ শতাংশ করেছে। কিন্তু আন্তর্জাতিক অর্থভাণ্ডারের হিসাবে ২০১৯-২০ অর্থবর্ষে সেই হার নেমে যেতে পারে ০.৩ শতাংশে। কারণ আইএমএফ-এর মতে, যা আশা করা হয়েছিল, তার চেয়েও দুর্বল ভারতের অর্থনীতি।

আন্তর্জাতিক বাণিজ্যেও মন্দার প্রভাব পড়েছে। এর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র-চীন, ইরান-যুক্তরাষ্ট্র, ভারত-মার্কিন শুল্ক যুদ্ধও এতে ইন্ধন জুগিয়েছে। সেই উদ্বেগও ধরা পড়েছে আইএমএফ প্রধানের বক্তব্যে। তিনি বলেন, এই যুদ্ধে সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তাই সবাইকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি।

টিটিএন/জেআইএম

Advertisement