বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী নিহত আবরার ফাহাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের শেরেবাংলা হলের ১০১১ নম্বর রুমে থাকতেন। সেখান থেকে ডেকে নিয়ে হলের ২০১১ নম্বর কক্ষে পেটানো হয়। পড়ে হলের সিঁড়িতে ফেলে রাখা হয়।
Advertisement
হলে আবরারের কক্ষের পাশের কক্ষে থাকেন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মাহবুবুর ইসলাম। মঙ্গলবার দুপুরে তার সাথে কথা হয় জাগো নিউজের।
মাহবুবুর ইসলাম বলেন, সে (আবরার) আমার পাশের রুমেই থাকতো, পাঁচ মাস আগে সে এই রুমে এসেছে। তার সাথে দেখা হতো, কথা হতো, তবে তেমন সম্পর্ক ছিল না। কারণ আমরা সিনিয়র ছিলাম, ক্লাসের সময়ও মিলতো না।
তিনি বলেন, যতটুকু দেখেছি, সে খুব সাধারণ জীবনযাপন করতো, কারো সাথে ভেজালে যেত না, তর্ক করতো না। মাঝে মাঝে ফেসবুকে নিজের মতবাদ প্রকাশ করতো।
Advertisement
মাহবুবুর ইসলাম আরও বলেন, আবরার নিয়মিত নামাজ পড়তো। আমি রাত ৪টা থেকে সাড়ে ৪টা পর্যন্ত পড়াশোনা করে ঘুমাতে যাওয়ার সময় দেখতাম সে নামাজ পড়তে উঠেছে। তখন দেখা হতো। কখনো কোনো বিষয়ে খারাপ মনে হয়নি।
সিভিল ইঞ্জিনিয়ারের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মাহবুবুর ইসলাম
রোববারের রাতের ঘটনার বিষয়ে তিনি বলেন, রাত ৩টা ১০ মিনিটে আমরা শব্দ শুনতে পাই। কথাবার্তা শুনে বাইরে বের হই। তখন আবরারকে হাসপাতালে নেয়া হচ্ছিল। প্রথমে বুয়েট মেডিকেলে নেয়া হয়। সেখানে নেয়ার পর শুনতে পাই যে সে মারা গেছে। আমরা প্রথমে স্বাভাবিক মৃত্যু মনে করেছিলাম।
বুয়েটের শেরেবাংলা হলের মেস বয় আব্দুল কাদের জাগো নিউজকে বলেন, আবরার প্রায়ই আমার কাছে যেত। গেটে তার সাথে দেখা হতো। কেমন আছি আবরার জানতে চাইতো। কখনো তার কোনো খারাপ কাজ দেখিনি বা শুনিনি, সে ভালোই ছিল।
Advertisement
উল্লেখ্য, রোববার রাত ৩টার দিকে বুয়েটের তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। জানা যায়, ওই রাতেই হলের ২০১১ নম্বর কক্ষে আবরারকে পিটিয়ে হত্যা করে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা। ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক জানিয়েছেন, তার মরদেহে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
এদিকে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ১৯ জনকে আসামি করে সোমবার সন্ধ্যার পর চকবাজার থানায় একটি হত্যা মামলা করেন নিহত আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ্। এ ঘটনায় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকসহ কয়েকজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
এআর/আরএস/জেআইএম