ক্যাম্পাস

শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে বুয়েটের ছাত্র কল্যাণ পরিচালক

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের হত্যাকাণ্ডের পর ‘লাপাত্তা হওয়া’ বুয়েটের ছাত্র কল্যাণ পরিচালক (ডি এস ডব্লিউ) অধ্যাপক মিজানুর রহমান ক্যাম্পাসের শহীদ মিনারে গেলে বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়েন।

Advertisement

মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভস্থল বুয়েট শহীদ মিনারে গেলে অধ্যাপক মিজানুর রহমানকে দেখে ‘ভুয়া’, ‘ভুয়া’, ‘সেইম’, ‘সেইম’ বলে স্লোগান দিতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা এ সময় তার পদত্যাগও দাবি করেন।

শিক্ষার্থীরা তার কাছে জানতে চান, আপনি কি আপনার দায়িত্ব পালন করেছেন? এ সময় তিনি বলেন, ‘আমি আমার বিবেকের কাছে পরিষ্কার যে, আমার দায়িত্ব আমি পালন করেছি।’

এ কথা বলতেই ‘ভুয়া’, ‘ভুয়া’ স্লোগান তোলেন আন্দোলনকারীরা। সৃষ্টি হয় চরম হট্টগোলের। একজন শিক্ষার্থী বলেন, ‘সবার সামনে আপনি ভিসিকে কল দেন। এতগুলো ঘটনা ঘটলো এটা কারা করলো?

Advertisement

মিজানুর রহমান বলেন, ‘তোমার মনে যেমন ব্যথা আমার মনেও তেমন ব্যথা আছে।’ এ সময়ে ওই শিক্ষার্থী বলেন, ‘ব্যথা থাকলে আপনি কাল (সোমবার) ক্যাম্পাসে থাকতেন।’

পরিচালক বলেন, ‘আমাদের দেশে যে পরিস্থিতি তাতে মনে হয় না বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রাজনীতি থাকার প্রয়োজন আছে।’ এ সময় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘বুয়েটে আপনি কী করবেন?’ এ সময় মিজানুর রহমান বলেন, ‘বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি থাকার প্রয়োজন নেই।’

এ সময় শিক্ষার্থীরা জানতে চান, ‘কতদিনের মধ্যে এটা (ছাত্র রাজনীতি বন্ধ) কার্যকর করবেন, বলুন।’ জবাবে তিনি বলেন, ‘ইমিডিয়েট আমরা এ বিষয়ে উদ্যোগ নেব। ভিসিকে আমি বলব। আমরা ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে পারি।’

পরে শিক্ষার্থীরা সাংবাদিকদের জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি কেন ৩০ ঘণ্টা অতিবাহিত হওয়ার পরও ঘটনাস্থলে উপস্থিত হননি? বিষয়টি তাকে (বুয়েট ভিসি) ক্যাম্পাসে এসে আজ (মঙ্গলবার) বিকেল ৫টার মধ্যে জবাবদিহি করতে হবে। একই সঙ্গে ডি এস ডব্লিউ স্যার (ছাত্র কল্যাণ পরিচালক মিজানুর রহমান) কেন ঘটনাস্থল থেকে পলায়ন করেছেন, তা উনাকে আজ (মঙ্গলবার) বিকেল ৫টার মধ্যে সকলের সামনে জবাবদিহি করতে হবে।

Advertisement

গত রোববার রাত ৩টার দিকে বুয়েটের তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। জানা যায়, ওই রাতেই হলের ২০১১ নম্বর কক্ষে আবরারকে পিটিয়ে হত্যা করে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা। ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক জানিয়েছেন, তার মরদেহে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ১৯ জনকে আসামি করে সোমবার সন্ধ্যার পর চকবাজার থানায় একটি হত্যা মামলা করেন নিহত আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ্। এ ঘটনায় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকসহ কয়েকজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

আরএস/এমকেএইচ