ক্যাম্পাস

‘আবরার, আবরার’, প্রকম্পিত বুয়েট

‘আবরার, আবরার’, ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস (আবরার হত্যার বিচার চাই)।’ মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১০টা থেকে এই স্লোগানে প্রকম্পিত বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)।

Advertisement

বিভিন্ন লেখা সম্বলিত প্ল্যাকার্ড, ব্যানার হাতে হত্যাকাণ্ডের শিকার আবরার ফাহাদের হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও ফাঁসি চেয়ে স্লোগান দিচ্ছেন তার সহপাঠীরা। তারা বুয়েট ক্যাম্পাস ও হল থেকে ‘ছাত্রলীগের সন্ত্রাস’ বন্ধের দাবি জানান। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনবিরোধী স্লোগানও দিচ্ছেন তারা।

বিক্ষোভ মিছিল থেকে সাত দফা দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। দাবিগুলো হলো খুনিদের সর্বোচ্চ শাস্তি; ৭২ ঘণ্টার মধ্যে নিশ্চিতভাবে শনাক্তকৃত খুনিদের সকলের ছাত্রত্ব আজীবন বহিষ্কার; দায়েরকৃত মামলা দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালের অধীনে স্বল্পতম সময়ে নিষ্পত্তি; বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি কেন ৩০ ঘণ্টা অতিবাহিত হবার পরও ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়নি তার জবাব সশরীরে ক্যাম্পাসে এসে আজ বিকেল ৫টার মধ্যে দিতে হবে এবং ডিএসডব্লিউ স্যার কেন ঘটনাস্থল থেকে পলায়ন করেছেন তার কারণ বিকেল ৫টার তাকে দিতে হবে; আবাসিক হলগুলোতে র‍্যাগের নামে এবং ভিন্ন মতাবলম্বীদের ওপর সকল প্রকার শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতন বন্ধে প্রশাসনকে জড়িত সকলের ছাত্রত্ব বাতিল করতে হবে। একই সঙ্গে আহসানউল্লাহ হল এবং সোহরাওয়ার্দী হলের পূর্বের ঘটনাগুলোতে জড়িত সকলের ছাত্রত্ব বাতিল ১১ নভেম্বর, বিকেল ৫টার মধ্যে নিশ্চিত করতে হবে; রাজনৈতিক ক্ষমতা ব্যবহার করে আবাসিক হল থেকে ছাত্র উৎখাতের ব্যাপারে অজ্ঞ থাকা এবং ছাত্রদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হওয়ায় শেরে বাংলা হলের প্রভোস্টকে ১১ নভেম্বর, বিকেল ৫টার মধ্যে প্রত্যাহার করতে হবে এবং মামলা চলাকালীন সকল খরচ এবং আবরারের পরিবারের সকল ক্ষতিপূরণ বুয়েট প্রশাসনকে বহন করতে হবে।

এর আগে সোমবার (৭ অক্টোবর) চার দফা দাবিতে আন্দোলনে নামার ঘোষণা দেয় বুয়েটের শিক্ষার্থীরা। রাতে বুয়েট কেন্দ্রীয় মসজিদে আবরারের জানাজার পর বিক্ষোভ শেষে আন্দোলন করার ঘোষণা দেন তারা।

Advertisement

রোববার (৬ অক্টোবর) মধ্যরাতে বুয়েটের সাধারণ ছাত্র ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আবরারকে শেরেবাংলা হলের দ্বিতীয় তলা থেকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে যায়। সোমবার (৭ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৬টার দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এই ঘটনায় নিহতের বাবা মো. বরকত উল্লাহ ১৯ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত কয়েক জনকে অভিযুক্ত করে চকবাজার থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলায় ১০ জনকে গ্রেফতার দেখানো হয়। গ্রেফতাররা হচ্ছেন-বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদি হাসান রাসেল, সহ-সভাপতি মুস্তাকিম ফুয়াদ, উপ-সমাজকল্যাণ সম্পাদক ইফতি মোশাররফ সকাল, ক্রীড়া সম্পাদক মেফতাহুল ইসলাম জিওন, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অনিক সরকার, গ্রন্থনা ও গবেষণা সম্পাদক ইশতিয়াক মুন্না, মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মুনতাসির আলম জেমি (২১), মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম তানভির (২১), ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মো. মুজাহিদুর রহমান মুজাহিদ (২১), মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মো. মেহেদী হাসান রবিন (২২)।

নিহত আবরার বুয়েটের তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তার বাড়ি কুষ্টিয়া জেলায়।

এআর/আল-সাদী ভূঁইয়া/এসআর/এমকেএইচ

Advertisement