আন্তর্জাতিক

মোদি সরকারে আস্থা কমেছে ভারতীয়দের

অর্থনৈতিক পরিস্থিতি, কর্মসংস্থান, নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম আর বেতন কাঠামো নিয়ে ভারতীয়রা সরকারের ওপর রীতিমতো হতাশ। তাই বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোট সরকারে আস্থা কমেছে সাধারণ মানুষের। দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক (আরবিআই) এক সমীক্ষা এই তথ্যই দিচ্ছে।

Advertisement

গত সেপ্টেম্বরে সরকারের ওপর মানুষের আস্থা যতটা তলানিতে পৌঁছেছে, গত ছয় বছরে এমনটা হয়নি। কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ জোটের দ্বিতীয় মেয়াদে এসব ব্যাপারে সাধারণ মানুষের যে আস্থা ছিল, মোদি সরকারে ততটুকু আস্থাও নেই বলে রিজার্ভ ব্যাংকের ওই সমীক্ষা এমন ইঙ্গিতই দিচ্ছে।

প্রত্যেক দেশের বাজারে পণ্যের প্রধান ক্রেতা (কনজিউমার) হলো নাগরিকরা। তাই তাদের আস্থার (কনফিডেন্স) পরিমাপ করে নিয়মিতই দেশের অর্থনৈতিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে রিজার্ভ ব্যাংক। যার ভিত্তি ‘কারেন্ট সিচুয়েশন ইনডেক্স বা সিসিআই। প্রধান শহরের নাগরিকদের মতামতের ভিত্তিতে এটি তৈরি হয়।

রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়া তাদের এই রুটিন সমীক্ষা করতে গিয়ে দেখেছে, বর্তমানে সংসদে প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ জোট সরকারের দ্বিতীয় মেয়াদে অর্থাৎ ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বরে উল্লিখিত কারেন্ট সিচুয়েশন ইনডেক্স ছিল ৮৮।

Advertisement

২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট সরকার ক্ষমতায় আসলে ২০১৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ওই সূচক ঊর্ধ্বগামী হয়েছে। বেশিরভাগ সময় যা ১০০ এর উপরে থেকেছে। কিন্তু মোদি সরকারের দ্বিতীয় মেয়াদে প্রথম বছরের সেপ্টেম্বরে সেই সূচক নেমে পৌঁছেছে ৮৯ দশমিক ৪-এ।

সূচকের ওঠানামার কারণ হিসেবে দেখা যাচ্ছে, প্রথমবার মোদি সরকার ক্ষমতায় আসার পর দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ও তার ভবিষ্যৎ নিয়ে মানুষের প্রত্যাশা অনেকটাই বেড়ে যায়। ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে সেই সূচক ছিল ১০৩ দশমিক ১-এ। ২০১৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সেই সূচক ১০০ এর উপরে ছিল।

কিন্তু সেই বছরের নভেম্বরে নোটবন্দির ঘোষণার পর কাজের কাজ কিছু হল না দেখে সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা কমতে শুরু করে। সেই অবস্থাটা চলেছিল আড়াই বছর। ত্রিশ মাস পর এ বছর লোকসভা নির্বাচনের আগে গত মার্চে সেই সূচক বেড়ে দাঁড়ায় ১০৪ দশমিক ৬-এ।

কিন্তু গত মে মাস নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার পর থেকেই তা নামতে শুরু করে। সেই মাসে কারেন্ট সিচুয়েশন ইনডেক্স ছিল ছিল ৯৭ দশমিক ৩। তারপর গত জুলাইয়ে তা আরও কমে দাঁড়ায় ৯৫ দশমিক ৭-এ। যা সেপ্টেম্বরে আরও নেমে পৌঁছেছে ৮৯দশমিক ৪-এ।

Advertisement

কনজিউমার কনফিডেন্স ইনডেক্সের বা সিসিআই এর আরও একটি দিক রয়েছে। যার নাম ফিউচার এক্সপেকটেশন্স ইনডেক্স বা এফইআই। তাতে দেখা যাচ্ছে, ভারতের অর্থনীতি আগামীতে ঘুরে দাঁড়াবে, এমন আশাও কমতে শুরু করেছে মানুষের। জুলাইয়ে যা ছিল ১২৪ দশমিক ৮ সেপ্টেম্বরে তা ১১৮।

এসএ/জেআইএম