তানভীর মোকাম্মেল নির্মাণ করছেন সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র ‘রূপসা নদীর বাঁকে’। সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত চলচ্চিত্রটির কাহিনি গড়ে উঠেছে একজন ত্যাগী বামপন্থী নেতাকে ঘিরে, যাকে ১৯৭১ সালে রাজাকাররা হত্যা করে।
Advertisement
পরিচালক জানান, ইতিমধ্যে খুলনার বৈঠাঘাটা ও ফুলতলা উপজেলার গ্রামাঞ্চলে, দৌলতপুর স্টেশন, কুমিল্লা ও ঢাকার বিভিন্ন লোকেশনে ছবিটির শুটিং শেষ হয়েছে। এখন চলছে সম্পাদনার কাজ।
গত ২৯ সেপ্টেম্বর পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে শুটিং সমাপ্তির মাধ্যমে শেষ হয়েছে তানভীর মোকাম্মেলের নতুন চলচ্চিত্রের শুটিং।
ছবিতে কেন্দ্রীয় চরিত্র বামপন্থি নেতার ভূমিকায় অভিনয় করেছেন জাহিদ হাসান শোভন। চরিত্রটির বৃদ্ধ বয়সের রূপদান করবেন খায়রুল আলম সবুজ। এছাড়াও বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন নাজিবা বাশার, রামেন্দু মজুমদার, আতাউর রহমান, চিত্রলেখা গুহ, কেরামত মওলা, ঝুনা চৌধুরী, আফজাল কবির, মাসুম বাশার, বৈশাখী ঘোষ, ইকবাল আহমেদ ও আরও অনেকেই।
Advertisement
এর গল্পে দেখা যাবে খুলনা জেলার রূপসা নদীর পারে কর্ণপাড়া গ্রামে এক ক্ষয়িষ্ণু সামন্ত পরিবারে জন্ম মানবরতন মুখোপাধ্যায়ের। শৈশবে পিতৃহীন তরুণ মানব বৃটিশ আমলে ‘অনুশীলন’ সমিতি ও পরে বামপন্থী আন্দোলনে যোগ দেন। কৃষক আন্দোলনে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখার কারণে এলাকার সবার কাছে ক্রমে ‘কমরেড মানবদা’ নামে পরিচিত ও সম্মানিত হয়ে ওঠেন তিনি। দরিদ্র নম:শুদ্র কৃষকেরা তাকে শ্রদ্ধাভরে ডাকত ‘কমরেড ঠাকুর’ বলে।
প্রথমে বৃটিশ সরকার ও পরে পাকিস্তান আমলে জেল-জুলুম-নির্যাতন ও নানা সংগ্রামের মাঝে ঝঞ্ঝাবিক্ষুদ্ধ জীবন কাটে মানবরতন মুখোপাধ্যায়ের। যার করুণ পরিণতি হয় ১৯৭১ সালে এসে। চির অবিবাহিত বিপ্লবী মানব মুখোপাধ্যায়ের বাল্যপ্রেমিকা উর্মিমালাকেও দেখা যাবে একরাশ হাহাকার নিয়ে হাজির হতে। মূলত, দেশপ্রেমী, মানবপ্রেমী ভাগ্যতাড়িত এক বামপন্থী নেতা এবং তার সময় ও যুগকে নিয়েই নির্মিত হবে ‘রূপসা নদীর বাঁকে’।
ছবিটি পরিচালনার পাশাপাশি এর চিত্রনাট্যও করেছেন তানভীর মোকাম্মেল। চিত্রগ্রহণে রয়েছেন নয়বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাওয়া চিত্রগ্রাহক মাহফুজুর রহমান খান।
নির্মাতা জানালেন, ছবিটির বাজেট ৯৬ লাখ টাকা। এর মধ্যে ৫০ লাখ টাকা বাংলাদেশ সরকার অনুদান হিসেবে দিয়েছে। বাকি টাকা গণ-অর্থায়নের মাধ্যমে সংগ্রহ করেছেন তিনি। যেখানে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ অর্থ দিয়েছেন।
Advertisement
এর আগে তানভীর মোকাম্মেলের নদীর নাম মধুমতি, চিত্রা নদীর পারে, লালসালু, লালন, রাবেয়া, জীবনঢুলিসহ বেশ কিছু চলচ্চিত্র পরিচালনা করেছিলেন। চলচ্চিত্রগুলো জাতীয় পুরস্কারসহ দেশি-বিদেশি পুরস্কার পেয়েছে। প্রদর্শিত হয়েছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে।
এলএ/জেআইএম