মেট্রোরেল, পদ্মা সেতু, কর্ণফুলী টানেলের মতো মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নে বাংলাদেশের অভিজ্ঞতা ছিল না উল্লেখ করে এসব প্রকল্পে কিছুটা অর্থের অপব্যবহার বা নড়চড় হবে এবং এটাকে ধরে নিতে হবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
Advertisement
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা এখানে পদ্মা সেতু করব, কর্ণফুলী টানেল করব বা আমরা এমআরটি (মেট্রোরেল) প্রজেক্ট করব -এগুলো তো স্বপ্ন। এগুলো বাস্তবায়নে কারও বাস্তব অভিজ্ঞতা ছিল না। সুতরাং এখানে ডিসটরশন (নড়চড়) হবে এবং মিস ইউজও (অপব্যবহার) হবে, এটাকে ধরে নিতে হবে। এটা ইন্দোনেশিয়ায় হয়েছে, মালয়েশিয়ায় হয়েছে, অন্যান্য দেশেও হয়েছে।’
সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে নিজ দফতরে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূত রেঞ্জি তেরিংয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে অর্থমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
মুস্তফা কামাল বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি, কীভাবে কমানো যায়, সীমার বাইরে না যায়। প্রধানমন্ত্রীও আপ্রাণ চেষ্টা করছেন, যাতে এটা সীমার মধ্যে থাকে। এতেই আমরা খুশি। ধীরে ধীরে আমরা অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করব, তখন এগুলো কমে আসবে। যত দিন যাবে ততই অভিজ্ঞতা বাড়বে, বেশি কন্ট্রাক্টর হবে। যেখানেই আমাদের সংশয় পারব না, তখন আমরা বিদেশি কন্ট্রাক্টর নিয়ে নিচ্ছি। আমরা জাপানকে দিয়ে, জাইকাকে দিয়ে কাজ করাচ্ছি, বড় বড় চাইনিজ কোম্পানিকে দিয়ে কাজ করাচ্ছি।’
Advertisement
‘দুর্নীতি না হলে দেশ আরও অনেক এগিয়ে যেত’ প্রধানমন্ত্রীর এ তথ্যের বিষয়টি কীভাবে দেখছেন এবং কী পদক্ষেপ নিচ্ছেন জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী যেভাবে দেখেছেন, তার সহযোগী হিসেবে আমিও একইভাবে দেখছি। উনি যা বলেছেন, সত্য বলেছেন। এটা স্বীকার করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘যে পরিমাণ বিনিয়োগ আমরা করছি, শতভাগ মানসম্পন্নভাবে করতে পারি না। সেখানে আমাদের ত্রুটি বিচ্যুতি আছে। কিছুটা প্রবৃদ্ধি আমাদের ব্যাহত হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ, তিনি উদ্যোগ নিয়েছেন। যেখানে আমরা পাঁচ বছর পরে যেতাম, সেখানে আমরা এখন তিন বছরে যেতে পারব।’
এনবিআর ভবনের ঠিকাদারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘কারও জন্য কাজ আটকে থাকবে না।’
এ সময় রোহিঙ্গা সমস্যা, জিডিপির প্রবৃদ্ধি ২ শতাংশ বৃদ্ধি, জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিসহ বেশকিছু বিষয় নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত রেঞ্জি তেরিংয়ের সঙ্গে অর্থমন্ত্রীর আলোচনা হয়।
Advertisement
রোহিঙ্গা ইস্যুর বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘ইউরোপীয় ইউনিয়ন বিশ্বাস করে, রোহিঙ্গাদের রাখাইন রাজ্যে চলে যাওয়া দরকার। এ ব্যাপারে তারা ভূমিকা রাখবে। সারাবিশ্বকে একসঙ্গে করে আমরা যেন রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান করতে পারি, সেই বিষয়টি তিনি দেখবেন।’
ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত বলেন, আগামীতে আমাদের প্রবৃদ্ধি কমে যেতে পারে। তখন অর্থমন্ত্রী বলেছেন, ‘কমবে না, বাড়বে।’ ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত জানতে চান, কীভাবে বাড়বে? জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেছেন, ‘বিভিন্ন খাতে আমরা বিনিয়োগ করেছি। কিন্তু সেগুলো থেকে আমরা এখনও ফলাফল পাইনি। এগুলো থেকে রিটার্ন আসবে আগামী বছর থেকে। রিটার্ন পাওয়া শুরু করলে অটোমেটিক প্রবৃদ্ধি ২ শতাংশ বেড়ে যাবে। শুধু পদ্মা সেতুই ১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি বাড়াতে সাহায্য করবে।’
পিডি/আরএস/জেআইএম