কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, এক সময়ের কথিত ‘তলাবিহীন ঝুঁড়ি’ দারিদ্র্য-দুর্ভিক্ষে জর্জরিত যে বাংলাদেশকে অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার সংগ্রাম করতে হয়েছে, শেখ হাসিনার কল্যাণমুখী নেতৃত্বে সেই বাংলাদেশ আজ বিশ্বজয়ের নবতর অভিযাত্রায় এগিয়ে চলেছে।
Advertisement
তিনি বলেন, ১৯৮১ সালে নির্বাসিত জীবন থেকে দেশে ফিরে হাল ধরেন দলের, শুরু হলো সংগ্রামী জীবনের। দীর্ঘ ২১ বছর পর ’৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে খাদ্য ঘাটতির দেশকে করেছেন খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ, পেয়েছেন আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি। এখন স্বপ্ন দেখাচ্ছেন উন্নত বাংলাদেশের, যে যাত্রায় অদম্য গতিতে এগিয়ে চলছে দেশ।
সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৩তম জন্মদিন উপলক্ষে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে গবেষণা প্রতিষ্ঠান বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন (বিবি) আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। আলোচনার মূল কথা ছিল ‘বাঙালির প্রদীপ শিখা তুমি; তোমার তুলনা কেবল তুমিই’।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা, সফল রাষ্ট্রনায়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের উন্নয়নের কারিগর এবং উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশের রূপকার। তিনি বাঙালি জাতিকে নতুন এক আশা দেখিয়েছেন বাংলাদেশকে একটি মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত করার। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, জঙ্গিবাদ প্রতিরোধ, বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনিদের বিচারসহ জাতীয় জীবনের বহু ক্ষেত্রে অভাবনীয় সাফল্য অর্জিত হয়েছে তার হাত ধরেই।
Advertisement
মন্ত্রী আরও বলেন, বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতুর অর্থায়ন নিয়ে অনেক ষড়যন্ত্র করেছে। সেই বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশে এসে উন্নয়নশীল দেশগুলোর সামনে বাংলাদেশের উদাহরণ তুলে ধরে বলেন, অর্থনৈতিক উন্নয়ন কীভাবে করতে হয় তা বাংলাদেশ থেকে শিখতে পারো। বাংলাদেশ কীভাবে জঙ্গিবাদ দমন করেছে তা-ও এখন অনেক দেশ বাংলাদেশ থেকে শিখতে চায়। শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে অন্য এক উচ্চতায় নিয়ে গেছেন।
তিনি বলেন, এবারের জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেশ কয়েকটি অর্জন তার জন্মদিনকে আরও সাফল্যমণ্ডিত করেছে। তিনি ‘ভ্যাকসিন হিরো’ সম্মাননা ও ‘চ্যাম্পিয়ন অব স্কিল ডেভেলপমেন্ট ফর ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড’ পেয়েছেন। তার এই অর্জনে পুরো জাতি গৌরবান্বিত। এ নিয়ে তার আন্তর্জাতিক সাফল্যের ঝুলিতে স্থান পেল ৩৯টি পদক।
এছাড়া মিয়ানমার সরকারের ভয়াবহ নির্যাতনে আশ্রয়হীন রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বাংলাদেশে আশ্রয় দিয়ে বিশ্ব মহলের মনোযোগ কেড়েছেন শেখ হাসিনা। মানবিক রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের অবস্থানের কারণে তিনি প্রশংসিত হচ্ছেন সারাবিশ্বে। জাতিসংঘের চলতি অধিবেশনে বিশ্ব নেতারা তার এই মানবিক দৃষ্টান্তের প্রশংসা করেছেন।
মন্ত্রী নির্বাচনী ইশতেহারের কথা উল্লেখ করে বলেন, নির্বাচনী ইশতেহারে মোট ২১ অঙ্গীকারের কথা উল্লেখ রয়েছে। এর তৃতীয় নম্বর ছিল দুর্নীতি নির্মূল করা। বঙ্গবন্ধুকন্যা নীতি ও আদর্শের সঙ্গে আপস করেন না। দেশের জনগণের কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়ে তিনি এই অঙ্গীকার করেছেন সেখানে কোনো আপস নয়। ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় তিনি চলমান অভিযান অব্যাহত রাখবেন। এভাবেই বাংলাদেশ ২০৪১ সালের আগেই উন্নত বাংলাদেশের মর্যাদা লাভ করবে। আওয়ামী লীগ করলে যা ইচ্ছা তা করা যায় না, আওয়ামী লীগ করতে লাগে নীতি, আদর্শ এবং জনগণের জন্য ত্যাগ।
Advertisement
তিনি বলেন, দলের সকলকেই মনে রাখতে হবে, এই একজন শেখ হাসিনাকে ঘিরেই দেশের কোটি কোটি মানুষ স্বপ্ন দেখে; কারণ তিনি তাদের একটি পরিচয় দিয়েছেন। অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি সাথে প্রতিটি মানুষকে দেশপ্রেম, মানবিক মূল্যবোধ, মেধা ও মননেও সমৃদ্ধ হতে হবে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বুকে ধারণ করতে হবে, তবেই উন্নত দেশের পাশাপাশি আমরা উন্নত জাতি হিসেবে গড়ে উঠতে পারব।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান বাহাদুর ব্যাপারী। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষক ড. মো. দেলোয়ার হোসেন ও সিলেট মেডিকেল কলেজের উপপরিচালক ফাহিমা আক্তার মনি।
এমইউ/বিএ/এমকেএইচ