জাতীয়

প্রথম দিনে ক্রেতা নেই গাবতলী হাটে

রাজধানীর সব চেয়ে বড় পশুর হাট গাবতলী। কোরবানির ঈদ উপলক্ষে ২৩টি স্থানে হাট বসলেও রাজধানীর এটাই স্থায়ী পশুর হাট। কিন্তু সেই হাটই কি-না সারাদিন থাকলো প্রায় ক্রেতাশূন্য। বিক্রেতারা বলছেন, রোববার সারাদিন থেমে থেমে বৃষ্টি হওয়ায় পুরো হাট কর্দমাক্ত ছিল, তাই যারা হাটে এসেছেন পরিস্থিতির কারণে দামদর ঠিকমতো করেননি।রোববার সরেজমিনে ঘুরে এবং গাবতলী পশুর হাটের ক্রেতা, হাট মালিক সমিতি ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে। বিকেলে হাটে গিয়ে দেখা গেছে, শুরুর প্রথম দিনেই প্রচুর গরু এসেছে। দুপুরের দিকে বৃষ্টি নামলেও গরু আসা বন্ধ হয়নি। বৃষ্টি উপেক্ষা করেই হাটে প্রচুর সংখ্যক গরুর ট্রাক আসতে থাকে।বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গাবতলী হাটের অধিকাংশই কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, পাবনা ও সিরাজগঞ্জের ব্যবসায়ী। এর বাইরে মানিকগঞ্জ, রাজশাহী, কেরানীগঞ্জ ও নওগাঁর ব্যবসায়ীরাও রয়েছেন। দেশি গরুর সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ান ক্রস, ভারতীয় ও নেপালি গরু সংখ্যা ছিল চোখে পড়ার মতো। প্রতি বছরের ন্যায় এবারো নজরকাড়া সব বড় আকারের গরু দেখতে উৎসুক জনতার ভিড় ছিল দেখার মতো। কিন্তু গরু কেনার মতো ক্রেতার সংখ্যা ছিল না বললেই চলে।তবে গাবতলীর হাটে বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে ব্যবসার পসরা সাজিয়ে বসা গরু বিক্রেতাদের সে নিয়ে কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই। ব্যবসায়ীরা বলছেন, গাবতলী হাটের আজ প্রথম দিন হলেও হাট জমে মূলত দ্বিতীয় দিন থেকে। তবে রোববার বৃষ্টি না হলে বেশ কিছু পশুর কেনাকাটা হতো।তবে ব্যবসায় এবার দাম পাওয়ার আশা রয়েছে ব্যবসায়ীদের। তারা বলছেন, তুলনামূলকভাবে ভারতীয় গরুর সংখ্যা কমই। অন্যান্য বার অনেক বেশি পরিমাণে গরু আসতো। ভারতীয় গরুর দামের কারণে দেশীয় গরুর দামে ভাটা পড়তো। ব্যবসায় লাভের বদলে হতো লোকসান। তবে এখন পর্যন্ত তুলনামূলকভাবে ভারতীয় গরুর সংখ্যা কম দেখায় ব্যবসায় লাভের হিসেবটাই শক্ত দেখছেন।কুষ্টিয়ার লালকুঠি এলাকার গরু ব্যবসায়ী মো. জাহাঙ্গীর জাগো নিউজকে বলেন, এবার ২২টি গরু নিয়ে এসেছি। সর্বনিম্ন দামের মধ্যে রয়েছে ৯০ হাজার টাকার ছয়টি। বাকি সব গরুর দাম লাখ ছাড়িয়ে। কোনো কোনোটার দাম আড়াই লাখ থেকে তিন লাখ ২০ হাজার টাকা।মেহেরপুর গাংনি থেকে আসা গরু ব্যবসায়ী খলিল জাগো নিউজকে বলেন, গরু এনেছি ১৮টি। রোববার দুপুরে আসলেও গরু বিক্রি হয়নি একটিও। তবে গরুর বিক্রি বাজার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের পরই গরু ছাড়ার পক্ষে তিনি। সে কারণে দু’একজন দাম দর করলেও গরু বিক্রি করেননি তিনি।তবে ক্রেতা নয় উৎসুক জনতার ভিড়ই বেশি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। গরুর দাম দরের কথায় সেটাই যেন ফুটে উঠছে বলেই দাবি রাজশাহীর হাফিজুল ব্যাপারীর। তিনি বলছেন, গরু আনছি আটটি। একেকটার দাম চার লাখের উপরে। দুটির দাম তো ছয় লাখেরও বেশি। কিন্তু এই দামের ক্রেতা এখনো মেলেনি। যারা দাম দর করছেন তারা মূলত কিনছেন না শুধু তথ্য নিতে এসেছেন বলেই মনে হচ্ছে। দরদাম জানা শেষে চলে যাচ্ছেন।তবে বিক্রেতারা গরুর দাম বেশি হাঁকছেন বলে অভিযোগ এক ক্রেতার। বাংলামোটর এলাকায় টাইলসের ব্যবসা করেন মিরপুরের আশরাফ আলী। তিনি বলছেন, বিক্রেতরা গরুর দাম যেভাবে চাইতাছে তয় মনে হচ্ছে না গরু হেরা বিক্রি করবো। আইছিলাম সাড়ে তিন লাখে গরু কিনমু। পছন্দ অইলেও তা বিক্রেতা ৫ লাখের নিচে আয় না।জেইউ/বিএ

Advertisement