সব ক্যাসিনো বন্ধ করে দেয়া হয়েছে বলে দাবি করেছেন র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) মহাপরিচালক (ডিজি) বেনজীর আহমেদ। তিনি বলেন, আমাদের টার্গেট ছিল ক্যাসিনো থাকবে না। আমরা সব ক্যাসিনো গুঁড়িয়ে দিয়েছি। এখন এটা করতে গিয়ে হয়তো আরও অন্যান্য ইস্যু বেরিয়ে আসছে। আমি দয়া করে অনুরোধ করব, কোনো ধরনের গুজব ছড়াবেন না, আতঙ্ক ছড়াবেন না। এতে দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আমরা ভালো করতে গিয়ে দেশ পিছিয়ে যাক সেটা আমরা চাই না।
Advertisement
শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বনানীর হোটেল নরডিকে জঙ্গিবিরোধী অভিযানে সক্ষমতা সম্বলিত বিশেষ মহড়ার আয়োজন করে র্যাব। মহড়া শেষে সাংবাদিকদের করা এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন র্যাব মহাপরিচালক।
ক্যাসিনো নিয়ে ইতোমধ্যে অনেক আলোচনা হয়েছে। এর আগে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে একটা শুদ্ধি অভিযান চলছিল। যেটা পরে মুখ থুবড়ে পড়েছিল। ক্যাসিনো নিয়ে এখন যে শুদ্ধি অভিযান চলছে, তা কি আগের অভিযানের মতো মুখ থুবড়ে পড়বে-এমন প্রশ্নের জবাবে র্যাব ডিজি বলেন, ‘মুখ থুবড়ে পড়ার কিছু নেই। বিষয়গুলোকে নির্মোহভাবে দেখতে হবে। আমাদের টার্গেট ছিল ক্যাসিনো থাকবে না। অল ক্যাসিনোজ আর নাও ক্লোজড (সব ক্যাসিনো এখন বন্ধ)। উই হ্যাভ ডিসমেন্টলড অল অল দ্য ক্যাসিনোজ (আমরা সব ক্যাসিনো গুঁড়িয়ে দিয়েছি)।’
ক্যাসিনো নিয়ে অনেক অনুমাননির্ভর কথা বলা হচ্ছে, চরিত্রহনন করা হচ্ছে জানিয়ে র্যাব মহাপরিচালক বলেন, ‘এগুলো কিন্তু ঠিক না। কেউ বলছেন, ঢাকায় ৬০টি ক্যাসিনো রয়েছে, কেউ বলছেন দেড়শটি, আবার কেউ বলছেন ৬০০টি ক্যাসিনো রয়েছে। তালিকাটা কোথায়, ভাইয়া? আই হ্যাভ ক্লিয়ার স্টেটমেন্ট (আমার কথা পরিষ্কার)-আমরা ক্যাসিনো বন্ধ করার অভিযানে নেমেছি, ক্যাসিনোকে আমরা ডিসমেন্টল (গুঁড়িয়ে) করে দেব, ক্লিয়ার?’
Advertisement
তিনি বলেন, ‘আপনারা বলেন, কোথায় ক্যাসিনো চলছে? অল উই হ্যাভ ডিসমেন্টলড। কিন্তু এ রকম কথাবার্তা, ৬০, দেড়শ, ৬০০, হাজার, ঘরে ঘরে-এগুলো ভালো জিনিস না। এসব অনুমাননির্ভর, গুজবনির্ভর, গসিপনির্ভর কথাবার্তা ভালো না।’এখন যদি কোথাও জঙ্গিবিরোধী অভিযান পরিচালনা করতে হয়, তাহলে র্যাব এককভাবে মোকাবিলা করতে পারবে কি না-জানতে চাইলে র্যাব মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘র্যাব সবসময় ক্যাপাবল (সক্ষম)। ভবিষ্যতেও আমাদের চেষ্টা অব্যাহত থাকবে। যেকোনো পরিস্থিতিতে যেকোনো সময় আমরা মোকাবিলা করতে সক্ষম।’
সোয়াটসহ আরও কমান্ডো বাহিনী আছে। সেগুলোর সঙ্গে র্যাবের এই স্পেশাল অ্যাকশন গ্রুপের পার্থক্য কী, ট্রেনিং কোথায়, কীভাবে কাজ করবে-জানতে চাইলে র্যাব ডিজি বলেন, ‘কোনো ক্যাপাসিটি কোনো ক্যাপাসিটির বিকল্প না, আমাদের বাহিনীগুলোর উদ্দেশ্য হচ্ছে সব বাহিনীর সক্ষমতা বাড়ানো। আমাদের বাহিনীগুলোর ক্যাপাসিটি যত ডেভেলপ হবে দেশ তত নিরাপদ হবে।’
হলি আর্টিজান হামলার ঘটনার পর র্যাব তাদের বাহিনীর সক্ষমতা বাড়ানোর চেষ্টা করছে উল্লেখ করে র্যাব মহাপরিচালক বলেন, ‘র্যাবের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের অন্যান্য সকল বাহিনী তাদের নিজেদের সক্ষমতা বাড়ানোর চেষ্টা করছে। এর ফলে দেশের ক্যাপাসিটি বিল্ডিং হবে, দেশের ক্যাপাসিটি বিল্ডিং হওয়া মানে হচ্ছে রাষ্ট্র ও জনগণ বেশি বেশি নিরাপদ বোধ করবে।’
সাংবাদিকদের উদ্দেশে র্যাব মহাপরিচালক বলেন, ‘আমাদের দেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীতে যারা কাজ করেন তারা এই দেশেরই সন্তান। ছোটখাটো ত্রুটি ছাড়া প্রত্যেকটি বাহিনীর সদস্য দেশমাতৃকার জন্য সবসময় আত্ম উৎসর্গ মনোভাব নিয়ে কাজ করেন। এখানে কারো প্রফেশনাল ইন্টেগ্রিটি নিয়ে সন্দেহ করা ঠিক হবে না। প্রত্যেক বাহিনীর তাদের সর্বোচ্চ ক্ষমতা দিয়ে দেশ সেবার চেষ্টা করে যাচ্ছে। আমি আশা করব, এখানে কোনো ডাউট তৈরি করার কোনো কারন নেই। কোনো বাহিনীর মধ্যে কোনো প্রতিযোগিতামূলক মনোভাব সৃষ্টি করার কোনো দরকার নেই।’
Advertisement
জেইউ/এসআর/পিআর