চীন সরকার দেশটির সংখ্যালঘু নির্দোষ ও নিরীহ লোকদের হত্যা করে অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিক্রি করছে বলে অভিযোগ করেছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিল (ইউএনএইচআরসি)।
Advertisement
মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) জেনেভায় সংগঠনটির প্রধান কার্যালয়ে আইনজীবী হামিদ সাবি এ কথা জানান।
তিনি বলেন, চীনে নির্দোষ ও নিরীহ লোকদের ধরে ধরে তাদের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিচ্ছিন্ন করা এ শতাব্দীর সবচেয়ে ভয়াবহ ভয়াবহ নৃশংস ঘটনার একটি।
ডয়েচে ভেলের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনের জাতিগত সংখ্যালঘুদের ওপর কোনো মানবতাবিরোধী অপরাধ হয়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখতে ২০১৮ সালে আন্তর্জাতিক কোয়ালিশন টু অ্যান্ড ট্রান্সপ্ল্যান্ট অ্যাবিজ অফ চীন (ইটিএসি) ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়।
Advertisement
ওই ট্রাইব্যুনালের কাউন্সেল হামিদ সাবি জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলকে জানান, বহু বছর চীনজুড়ে জোর করে অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সংগ্রহ করা হয়েছিল। এটা আজও অব্যাহত রয়েছে। নিষিদ্ধ ঘোষিত ফালুন গংয়ের বন্দি এবং উইঘুর সংখ্যালঘুদের এই লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করা হয়। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কয়েক লাখ মানুষ।
তিনি বলেন, জীবন বাঁচাতে অঙ্গ প্রতিস্থাপন একটি বৈজ্ঞানিক ও সামাজিক বিজয়। কিন্তু দাতাকে হত্যা করা অপরাধ। নির্দোষ ও নিরীহ মানুষদের ধরে তাদের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিচ্ছিন্ন করাকে এ শতাব্দীর সবচেয়ে ভয়াবহ গণনৃশংসতা বলে মত দেন তিনি।
ট্রাইব্যুনালের চূড়ান্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনের বন্দি এবং ফালুন গং ও উইঘুর সংখ্যালঘুদের ওপর মানবতাবিরোধী অপরাধের প্রমাণ পেয়েছে তারা। দীর্ঘ ২০ বছর ধরে সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর লোকদের হত্যা করে তাদের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ নিয়ে বিক্রি করছে চীন সরকার। বন্দি ও সংখ্যালঘু ছাড়াও জীবিত বা মৃত ব্যক্তির কিডনি, লিভার, হার্ট, ফুসফুস, কর্নিয়া এবং ত্বকের চামড়া বিক্রির জন্য অপসারণ করা হয় বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে বেইজিং। তারা বলছে, ২০১৫ সাল থেকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিতদের অঙ্গও তারা আর ব্যবহার করে না। আধ্যাত্মিক গোষ্ঠী ফালুং গংকে ২০ বছর আগে নিষিদ্ধ করা হলে এর ১০ হাজার সদস্য বেইজিংয়ে নীরব প্রতিবাদ করতে আসেন। এরপর তাদের বেশিরভাগকে জেলে পাঠানো হয়।
Advertisement
ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান জেফ্রি নিস এ অপরাধের প্রমাণ পেয়েছেন বলে জানান। তিনি বলেন, সরকার, জাতিসংঘ ও এর সঙ্গে যারা যুক্ত, তারা এটি প্রমাণের জন্য আর অন্ধ দৃষ্টি রাখতে পারবে না। ট্রাইব্যুনালের অনুসন্ধানের পর এ বিষয়ে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়া দরকার।
চীনা নাগরিকদের পাশাপাশি অন্যান্য দেশের মানুষ চীনে গিয়ে অঙ্গ প্রতিস্থাপন করেন। লন্ডনে চীনা দূতাবাসের এক মুখপাত্র থমসন রয়টার্স ফাউন্ডেশনকে বলেন, সরকারি বিধিবিধানে শর্ত রাখা হয়েছে, মানব অঙ্গ দান হতে হবে স্বেচ্ছাসেবায় এবং বিনা অর্থে।
এমএসএইচ/পিআর