ঢাকার যানজট নিরসন এবং ঢাকার ওপর দিয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যানবাহন যাতায়াত সহজের জন্য আউটার রিংরোড নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে প্রাথমিকভাবে ব্যয় ধরা হয়েছে ১০ হাজার ২০০ কোটি টাকা। এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাবের নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে অর্থনৈতিক ক্রয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি।
Advertisement
বুধবার সচিবালয়ের মন্ত্রিপরিষদ সভাকক্ষে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক, পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নানসহ কমিটির অন্য সদস্য ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, আউটার রিংরোড নির্মাণের একটি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এটা একটা কাঙ্ক্ষিত প্রকল্প। প্রকল্পটি ২০২০ সালে শুরু হয়ে ২০২৩ সালে শেষ হবে। প্রকল্পটি জাপানি জি টু জি ভিত্তিক পিপিপি পদ্ধতিতে বাস্তবায়ন করা হবে।
তিনি বলেন, ‘এটি হলে ঢাকা শহরের চারপাশ আমরা বৃত্তাকারে ঘুরতে পারব। প্রকল্পটির মোট পরিমাণ হচ্ছে ১৩৪ কিলোমিটার। তার মধ্যে ৪৮ কিলোমিটারে অনুমোদন আজ দেয়া হয়েছে। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ১০ হাজার ২০০ কোটি টাকা। সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ সূত্রে জানা গছে, ঢাকা মহানগরীর জনসংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে। পূর্ব-পশ্চিম দিকের তুলনায় উত্তর-দক্ষিণে বর্তমানে যান চলাচল ও সড়কের সংখ্যা বিবেচনায় যানবাহনের অত্যধিক চাপের কারণে ঢাকা মহানগরীর যানজটের নগরীতে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে সরকারের শাসনামলে ক্রমবর্ধমান যানবাহনের অত্যধিক চাপ সামলানোর জন্য ঢাকা সিটিতে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে।
Advertisement
প্রাথমিক জরিপ অনুযায়ী, প্রস্তাবিত আউটার রিংরোডের এলাইনমেন্টের কিছুটা সংশোধন করা হয়েছে। সংশোধিত রুটটি হচ্ছে-হেমায়েতপুর-কালাকান্দি-তৃতীয় শীতলক্ষ্যা সেতু-মদনপুর-ভুলতা (ঢাকা বাইপাস হয়ে)-কড্ডা (গাজীপুর)-বাইপাইল (ঢাকা ইপিজেড)-হেমায়েতপুর। যার দৈর্ঘ্য প্রায় ১৩০ কিলোমিটার। এর মধ্যে প্রায় ৪৬ কিলোমিটার সড়ক নতুন করে নির্মাণ করতে হবে এবং অবশিষ্ট ৮৪ কিলোমিটার বিদ্যমান সড়ক উন্নয়ন করতে হবে।
সূত্র জানায়, নির্মাণাধীন পদ্মা সেতু দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে উত্তর ও পূর্বাংশের সংযোগ স্থাপন করবে। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলা থকে মুন্সীগঞ্জ ও মাওয়া হয়ে যাত্রাবাড়ী দিয়ে অসংখ্য যানবাহন ঢাকা মহানগরীতে প্রবেশ করবে, ফলে রাজধানীতে যানবাহন নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে জটিল পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে।
এতে সংশোধিত এসটিপিতে প্রস্তাবিত এলাইনমেন্টের মধ্যে আউটার রিংরোডের দক্ষিণ অংশ হেমায়েতপুর-কালান্দি-মদনপুর অংশ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে এ অংশ দ্রুত নির্মাণের সুপারিশ করা হয়েছে। এ অবস্থা বিবেচনা করে আউটার রিংরোডের দক্ষিণাংশের প্রায় ৪৮ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণের সুপারিশ করা হয়েছে। এর মধ্যে হেমায়েতপুর (ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক) থেকে কালান্দি (ঢাকা-মাওয়া মহাসড়ক) যার দৈর্ঘ্য প্রায় ১৮ কিলোমিটার, কালান্দি থেকে তৃতীয় শীতলক্ষ্যা সেতুর অ্যাপ্রোচ সড়ক, যার দৈর্ঘ্য প্রায় ১৮ কিলোমিটার এবং শীতলক্ষ্যা সেতুর অ্যাপ্রোচ সড়ক থেকে মদনপুর (ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক) যার দৈর্ঘ্য প্রায় ১২ কিলোমিটার।
এমইউএইচ/জেএইচ/এমএস
Advertisement