জাতীয়

যুবলীগ নেতা সম্রাট ও এক এমপির ব্যাংক হিসাব তলব

ঢাকা দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট ও তার পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক হিসাব তলব করেছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। অবৈধ লেনদেন ও মানি লন্ডারিংয়ের বিষয় অনুসন্ধান করতে সম্রাটের ব্যাংক হিসাব তলব করা হয়েছে। বিএফআইইউ’র নির্ভরযোগ্য সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

Advertisement

একই সঙ্গে সন্ত্রাসে অর্থায়ন ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে সরকারদলীয় একজন প্রভাবশালী সংসদ সদস্যের ব্যাংক হিসাবও তলব করা হয়েছে। তবে সংশ্লিষ্ট সূত্র তার নাম প্রকাশ করতে রাজি হননি।

এর আগে সম্প্রতি গ্রেফতার হওয়া যুবলীগ নেতা জি কে শামীম ও খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়ার নিজস্ব এবং পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করা হয়

বিএফআইইউ প্রধান আবু হেনা মোহা. রাজী হাসান সোমবার জাগো নিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, সন্ত্রাসী ও মানি লন্ডারিং বিষয়ে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ এলে বিএফআইইউ তা অনুসন্ধান করে। সম্প্রতি এসব অপরাধে যারা গ্রেফতার হয়েছেন তাদের হিসাবও যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। অনুসন্ধানকালে তাদের হিসাবে টাকা জমা হবে কিন্তু উত্তোলন করা যাবে না।

Advertisement

ঢাকায় অবৈধভাবে ক্যাসিনো ও জুয়ার বোর্ড পরিচালনা এবং চাঁদাবাজির অভিযোগে সম্রাটকে গ্রেফতার করা হবে বলে গুঞ্জন রয়েছে। গত বুধবার ঢাকা দক্ষিণ যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে অবৈধ অস্ত্র ও ইয়াবা রাখার অপরাধে গ্রেফতার, সন্ধ্যায় বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ (ক্রীড়া চক্র) ক্লাবসহ বিভিন্ন ক্যাসিনো ও জুয়ার বোর্ডে র‌্যাবের অভিযানের পর সম্রাটকে গ্রেফতারের গুঞ্জন ওঠে। এরপর থেকেই অনেকটা আত্মগোপনে রয়েছেন যুবলীগের এ প্রভাবশালী নেতা।

সূত্র জানায়, ঢাকা দক্ষিণ যুবলীগ নেতা খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া ও সম্রাটের বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই। মতিঝিল-ফকিরাপুল ক্লাবপাড়ায় ক্যাসিনো থেকে শুরু করে কমপক্ষে সাতটি সরকারি ভবনে ঠিকাদারি নিয়ন্ত্রণ ও সরকারি জমি দখলের মতো নানা অভিযোগ এ নেতার বিরুদ্ধে। তার বিরুদ্ধে রয়েছে একাধিক মামলাও। রিয়াজ, মিল্কি ও তারেক হত্যার পর পুরো এলাকা নিয়ন্ত্রণে নেন খালিদ মাহমুদ ভূঁইয়া। এসবই তিনি করেছেন ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটের ছত্রচ্ছায়ায়

সম্রাটের সহযোগিতায় ও প্রত্যক্ষ মদদে ঢাকার এক অংশ নিয়ন্ত্রণ করে আসছিলেন খালেদ। নিজের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে সর্বোচ্চ শক্তি ব্যবহার করেন তিনি। রাজধানীর মতিঝিল, ফকিরাপুল এলাকায় কমপক্ষে ১৭টি ক্লাব নিয়ন্ত্রণ করেন এ যুবলীগ নেতা। এর মধ্যে ১৬টি ক্লাব নিজের লোকজন দিয়ে আর ফকিরাপুল ইয়াংমেন্স নামের ক্লাবটি সরাসরি পরিচালনা করেন তিনি। প্রতি ক্লাব থেকে প্রতিদিন কমপক্ষে এক লাখ টাকা নেন তিনি। এসব ক্লাবে সকাল ১০টা থেকে ভোর পর্যন্ত ক্যাসিনো বসে।

গোয়েন্দা সূত্র জানায়, ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটের বিরুদ্ধে আনা নানা অভিযোগের একটি প্রতিবেদন এরই মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রেরণ করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, ঢাকা মহানগরীর চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, মাদক নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হচ্ছে না ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট ও তার কিছু লোকজনের দৌরাত্ম্যে। এ বিষয়ে যাতে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হয় তার অনুরোধ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।

Advertisement

এসআই/এসএইচএস/এমএস