দেশজুড়ে

সন্তান থাকতেও ৩ দিন অনাহারে বৃদ্ধ বাবা, ইউএনওকে দেখে কাঁদলেন

শালি নেওয়াজের বয়স একশ ছুঁই ছুঁই। সন্তানরা থাকতেও না খেয়েই দিন কাটাচ্ছেন তিনি। টানা তিনদিনের অনাহারে কাতর এই বৃদ্ধ। গত তিনদিন পেটে কোনো খাবার না পড়ায় প্রাণ যায় যায় অবস্থা।

Advertisement

জন্মদাতা বাবার এমন করুণ পরিস্থিতিতেও বিন্দুমাত্র মায়া কিংবা মানবিকতা জাগেনি সন্তানদের মনে। অমানবিকতার এমন খবর এক কান দু’কান করে শেষ পর্যন্ত উপজেলা প্রশাসনের কানে পৌঁছায়।

খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সোমবার দুপুরে নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলার ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাদিয়া উম্মুল বানিন খাবার-দাবার নিয়ে শতবর্ষী শালি নেওয়াজের বাড়ি যান। নিজের বাবার মতো অসহায় বৃদ্ধের মুখে খাবার তুলে দেন ইউএনও। খাবার খাওয়ানো শেষে শতবর্ষী বৃদ্ধকে বয়স্কভাতার কার্ড এবং তার সন্তানদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন। এ সময় আবেগে কেঁদে ফেলেন বৃদ্ধ শালি নেওয়াজ।

অসহায় এই বৃদ্ধ উপজেলার সাধুহাটি গ্রামের বাসিন্দা। শালি নেওয়াজের দুই ছেলে ও চার মেয়ে। সবাই কর্মজীবী এবং বিবাহিত। পুত্রবধূ এবং নাতি-নাতনি থাকলেও শালি নেওয়াজের খোঁজ নেয় না কেউ।

Advertisement

ইউএনও সাদিয়া উম্মুল বানিন বলেন, বিভিন্ন মাধ্যমে খবর পাই তিনদিন ধরে শতবর্ষী মানুষটিকে খাবার দিচ্ছেন না তার সন্তানরা। না খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন তিনি। খবর পেয়ে কিছু খাবারের ব্যবস্থা করি। ওসব খাবার-দাবার নিয়ে তার বাড়ি আসি। খাবার খাওয়ানোর পর তিনি কিছুটা সুস্থতা বোধ করেন। তার জন্য কিছু শুকনা খাবারও দিয়েছি। এগুলো তিনি পরে খাবেন।

সাদিয়া উম্মুল বানিন আরও বলেন, বৃদ্ধের সন্তান ও পুত্রবধূদের কাছে খাবার না দেয়ার কারণ জানতে চাওয়া হয়েছে। পরে বৃদ্ধের বাবার কাছে ক্ষমা চেয়েছেন সন্তান ও পুত্রবধূরা। পাশাপাশি আইনি দিকগুলো তাদের বুঝিয়ে বলেছি। সেই সঙ্গে বৃদ্ধ বাবার নিয়মিত খাবার-দাবার চালিয়ে নেয়ার নির্দেশ দিয়েছি। এর ব্যতিক্রম হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেব বলে জানিয়ে দিয়েছি।

ইউএনও সাদিয়া উম্মুল বানিন বলেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে বৃদ্ধ শালি নেওয়াজকে একটি বয়স্কভাতার কার্ড করে দেয়া হবে। মাঝে মধ্যে তার খোঁজ-খবর নেয়া হবে।

কামাল হোসাইন/এএম/এমএস

Advertisement