জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামকে ‘দুর্নীতিবাজ’ আখ্যা দিয়ে পদত্যাগের দাবিতে কালো পতাকা প্রদর্শন কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
Advertisement
রোববার দুপুরে ভর্তি পরীক্ষা চলাকালীন ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ ব্যানারে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারে এ কর্মসূচি পালন করেন তারা।
এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন প্রকল্পের বরাদ্দ থেকে ছাত্রলীগকে ১ কোটি টাকা ঈদ সালামি ভাগ করে দেয়ার অভিযোগ তুলে আগামী ১ অক্টোবরের মধ্যে উপাচার্যকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগের আহ্বান করা হয়। অন্যথায় আরও কঠোর আন্দোলনের মধ্য দিয়ে তাকে পদত্যাগে বাধ্য করা হবে বলে জানান আন্দোলনকারীরা।
ছাত্র ফ্রন্ট জাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ দিদার বলেন, আমাদের দাবি ছিল দুর্নীতির ঘটনাটি বিচার বিভাগীয় তদন্ত করা। কিন্তু উপাচার্য আমাদের দাবি মানেননি। যেসব ছাত্র নেতা প্রকল্পের টাকা পেয়েছেন তারা স্বীকার করার পরও উপাচার্য অস্বীকার করেছেন। আমরা দুর্নীতিবাজ উপাচার্যকে ভর্তি পরীক্ষা চলাকালীন সব ভবনে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছি এবং ১ অক্টোবরের মধ্যে পদত্যাগের আলটিমেটাম দিয়েছি।
Advertisement
কর্মসূচিতে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক সোহেল রানা, অধ্যাপক কামরুল আহসান, দর্শন বিভাগের অধ্যাপক রায়হান রাইন, অধ্যাপক আনোয়ারুল্লাহ ভূঁইয়া, প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক আব্দুল জব্বার হাওলাদার, পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক খবির উদ্দিন, অধ্যাপক শফি মুহাম্মদ তারেক, অধ্যাপক জামাল উদ্দিন রুনু, বাংলা বিভাগের অধ্যাপক শামীমা সুলতানা, অধ্যাপক নাজমুল হাসান তালুকদার ও অধ্যাপক তারেক রেজা প্রমুখ।
এছাড়া জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোট, ছাত্র ইউনিয়ন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ জাবি শাখার নেতাকর্মীরা এতে অংশগ্রহণ করেছেন।
আগামীকাল (সোমবার) দুপুরে সমাজ বিজ্ঞান অনুষদের সামনে একই কর্মসূচি পালন করবেন আন্দোলনকারীরা।এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন প্রকল্পে দুর্নীতির ও অপরিকল্পনার অভিযোগ এনে তিন দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনের মুখে ১২ সেপ্টেম্বর আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে বাধ্য হয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এতে দুটি দাবি মেনে নেয় প্রশাসন। তবে দুর্নীতির বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবিটি অমীমাংসিত রেখেই শেষ হয় আলোচনা।
Advertisement
এরই মধ্যে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের এক নেতার কোটি টাকা চাঁদা নিয়ে ফোনালাপের অডিও ফাঁস হয়।
পরবর্তীতে ১৮ সেপ্টেম্বরে আবারও আলোচনায় বসে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও আন্দোলনকারীরা। কিন্তু আলোচনা ফলপ্রসূ না হওয়ায় চলমান ভর্তি পরীক্ষায় উপাচার্যকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা ও আগামী ১ অক্টোবরের মধ্যে তার পদত্যাগের দাবি জানান আন্দোলনকারীরা।
ওই দিন আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনা শেষে উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, আন্দোলনকারীদের দাবির বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ কিংবা মহামান্য রাষ্ট্রপতি যদি নির্দেশ দেন তবে সরে যাব। যদি আমাকে নির্দেশ না দেন তবে আন্দোলনকারীদের গালমন্দ খেয়েও থেকে যাব। হয়তো তাদের আন্দোলন আরও দীর্ঘায়িত হবে। কিন্তু নির্দেশ না আসা পর্যন্ত আমি আমার দায়িত্ব পালন করব।
এএম/জেআইএম