রোহিঙ্গাদের ভোটার করার অভিযোগে চট্টগ্রামের বিভিন্ন থানার নির্বাচন কমিশন অফিসে কর্মরত চারজনকে আটক করেছে চট্টগ্রাম কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট। আজ সকালে তাদের আটক করা হয়। তারা সবাই ডাটা এন্ট্রি অপারেটর হিসেবে আউটসোর্সিংয়ের কাজ করতেন। তারা হলেন- চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানার শাহিন ও ফাহমিদা, ডবলমুরিং থানার পাভেল এবং বন্দর থানার জাহিদ।
Advertisement
এদের সবাইকে চট্টগ্রামেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে চট্টগ্রাম কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার পলাশ কান্তি নাথ জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে চট্টগ্রামের জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মুনীর হোসেইন খান সাংবাদিকদের বলেন, ওই চারজন জেলা নির্বাচন অফিসে অস্থায়ী নিয়োগে ডাটা এন্ট্রি অপারেটর হিসেবে কাজ করে আসছিলেন।
জানা যায়, রোহিঙ্গাদের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) পাইয়ে দেয়ার ঘটনায় গ্রেফতার নির্বাচন কমিশনের অফিস সহায়ক জয়নাল ও অস্থায়ী কর্মচারী মোস্তফা ফারুক নানান তথ্য দিয়েছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে।
Advertisement
এর বাইরে দুর্নীতি দমন কমিশন ও খোদ নির্বাচন কমিশনের তদন্তেও উঠে এসেছে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) জালিয়াতিতে কমিশনের ২০ কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংশ্লিষ্টতা। এই ২০ জনের মধ্যে জড়িত আছেন অন্তত দুইজন উপজেলা নির্বাচন অফিসার ও জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) উইংয়ের তিনজন টেকনিক্যাল এক্সপার্ট।
চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে লাকি আক্তার নামে এক রোহিঙ্গা নারীর কাছ থেকে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) পাওয়ার ঘটনায় চলতি মাসের ১১ সেপ্টেম্বর কক্সবাজার থেকে তদন্তে নামে দুর্নীতি দমন কমিশন। টানা পাঁচ দিনের সেই অভিযানে রোহিঙ্গা দালালসহ সাতজনকে গ্রেফতার করা হয়।
তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে গত ১৬ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম নগরের ডবলমুরিং থানা নির্বাচন অফিসের অফিস সহায়ক জয়নাল আবেদিন (৩৫), তার সহযোগী বিজয় দাস (২৬)ও তার বোন সুমাইয়া (২৪) ওরফে সীমা দাসকে গ্রেফতার করা হয়। এর মধ্যে সুমাইয়ার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় নির্বাচন কমিশনের একটি খোঁয়া যাওয়া ল্যাপটপ (আইপি নম্বর ৪৩৯১)।
এনআইডির ডিজি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) সাইদুল ইসলাম বলেছেন, বিভিন্ন মাধ্যমে রোহিঙ্গা নাগরিকের ভোটার হওয়ার বা এনআইডি পাওয়ার যে তথ্য এসেছে বা তারা চেষ্টা করেছে। কিন্তু ভোটার হতে পারেনি। বাংলাদেশে আসা ১১ লাখ ২২ হাজার রোহিঙ্গার আঙুলের ছাপ ও তথ্য নিয়ে রোহিঙ্গা সার্ভার প্রস্তুত করা হয়েছে। এখন কেউ চাইলেই ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হতে পারবে না।
Advertisement
ইসি কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২০০৭-২০০৮ সালে ব্যবহৃত কিছু অকেজো ল্যাপটপ নিলামে বিক্রি করে দেয়া হয়েছিল। ওই সময় আরও অন্তত পাঁচটি ল্যাপটপ হারিয়ে যায়। যার দুটি জালিয়াতচক্রের হাতে পড়ে বলে তদন্ত দলের সন্দেহ।
এইচএস/বিএ/জেআইএম