মতামত

ডেঙ্গুর প্রকোপ : সচেতনতাই মুখ্য

রাজধানীতে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় এ নিয়ে জনমনে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়ন্ত্রণকক্ষের হিসাব অনুযায়ী বর্তমানে  ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১ হাজার ৩৪০ জন। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ইতিমধ্যে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। এ অবস্থায় ডেঙ্গু প্রতিরোধে জরুরি ব্যবস্থা নিতে হবে। পাশাপাশি এ ব্যাপারে ব্যাপক জনসচেতনতারও কোনো বিকল্প নেই। ডেঙ্গু একটি মশাবাহিত রোগ। এই রোগের জীবাণু বহনকারী হচ্ছে এডিস মশা। এই মশা সাধারণত দিনের বেলাতেই কামড়ায়। সাধারণ মশার চেয়ে এই মশা আকাড়ে বড় এবং দেখতে ডোরা কাটা রঙের। এই মশার প্রবণতা হচ্ছে এরা পরিষ্কার পানিতে ডিম পাড়ে। তাই কোথাও পানি জমে থাকতে দেয়া উচিত নয়। বিশেষ করে পরিষ্কার পানি। মশাবাহিত রোগ হওয়ায় মশার বংশবৃদ্ধি রোধ, নিধন ও প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে ডেঙ্গুর প্রকোপ থেকে রক্ষা পাওয়া যেতে পারে। বিশেষজ্ঞের মতে, ঘরের কোণে বারান্দায় যাতে সাতদিনের বেশি কোনো পানি জমে থাকতে না পারে; সেদিকে বিশেষ নজর রাখা প্রয়োজন। ঘরবাড়ি ও এর চারপাশে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকা ক্যান, টিনের কৌটা, মাটির পাত্র, বোতল, নারকেলের মালা বা পানি ধারণ করতে পারে এ জাতীয় পাত্র ধ্বংস করে ফেলতে হবে, যাতে কোনোভাবেই পানি জমতে না পারে। এ ছাড়া গোসলখানায় বালতি, ড্রাম, পানির ট্যাংক কিংবা মাটির গর্তে কোনো অবস্থাতেই পানি জমিয়ে রাখা যাবে না। এডিস মশা থেকে রক্ষা পেতে হলে ঘরের আঙিনা, ফুলের টব, বারান্দা, বাথরুম, ফ্রিজ ও এসির নিচে জমানো পানি নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে, যাতে এডিস মশা দ্রুত বংশবৃদ্ধি করতে না পারে। এ ছাড়া ডেঙ্গুর  হাত থেকে বাঁচার জন্য সবসময় মশারি টাঙিয়ে ঘুমানো উচিত।চিকিৎকসদের মতে, ডেঙ্গু হলে কাঁপুনি দিয়ে হঠাৎ উচ্চমাত্রার জ্বর ওঠে, কখনো কখনো তা ১০৫ ডিগ্রি পর্যন্ত হতে পারে। জ্বরের সঙ্গে তীব্র মাথাব্যথা, সারা শরীরে প্রচণ্ড ব্যথা, শরীরে র্যা শ ওঠার মত লক্ষণ দেখা যায়। এছাড়া দাঁতের মাড়ি ও নাক দিয়ে রক্ত পড়া, চোখ লাল হওয়া, এমনকি পায়খানা ও প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত যেতে পারে। এসব উপসর্গ দেখে রোগীর আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই। যথাযথ চিকিৎসার মাধ্যমে এ রোগ থেকে নিরাময় হওয়া সম্ভব। যারা ইতিমধ্যে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন তাদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। আর যাতে কেউ সংক্রামিত না হয় সেদিকেও দৃষ্টি দিতে হবে। কথায় আছে ‘প্রিভেনশান ইজ বেটার দেন কিউর’। তাই রোগ প্রতিরোধ করাকেই গুরুত্ব দিতে হবে। এ জন্য এডিস মশার বংশবৃদ্ধি রোধ করতে হবে। এ ব্যাপারে সিটি কর্পোরেশনকে মশা নিধনে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে। এছাড়া জনসচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমেও ডেঙ্গু প্রতিরোধ সম্ভব। এ জন্য গণমাধ্যমকে এগিয়ে আসতে হবে। এইচআর/এমএস

Advertisement