উত্তর ইউরোপের স্ক্যান্ডেনিভিয়ান দেশ নরওয়ে। দেশটিতে যখন ‘স্টপ ইসলামাইজেশন’-এর নামে ইসলাম ও মুসলমানদের নিষিদ্ধের জোর দাবিতে আন্দোলন করছে একটি ইসলাম বিদ্বেষী দল। ঠিক তখনই ইসলাম ও মুসলমানদের জন্য এসেছে অনেক বড় সুখবর। নরওয়েতে প্রতিদিন গড়ে ৮ জন ভিন্নধর্মী লোক মুসলমান হচ্ছে।
Advertisement
ইউরোপের এ দেশটিতে ইসলাম গ্রহণের হার ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশটির জনপ্রিয় দৈনিক ভারডেনস গ্যাঙ্গে-এর এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
নরওয়ের সুপ্রাচীন ও সবচেয়ে বড় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অসলো বিশ্ববিদ্যালয়। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের কালচারাল স্টাডিজ অ্যান্ড অরিয়েন্টাল ল্যাঙ্গুয়েজ বিভাগের একজন গবেষকের বরাতে ভারডেনস গ্যাঙ্গে-এর প্রতিবেদন বলা হয়, ‘সাম্প্রতিক বছরগুলোতে প্রায় তিন হাজার নরওয়েজিয় নাগরিক ইসলাম গ্রহণ করছে। যা ১৯৯০ সালের সময় থেকে ৬ গুণেরও বেশি।
প্রতিবেদনের হিসাবে গড়ে প্রতিদিন ইসলাম গ্রহণকারী মুসলিমের সংখ্যা দাঁড়ায় প্রায় ৮ জনেরও বেশি। ইসলাম গ্রহণকারীর সংখ্যা বাড়ার কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে যে, আগে নরওয়ের নারীরা মুসলিম পুরুষদের বিয়ে করতে বেশি আগ্রহী ছিল।
Advertisement
তবে মুসলিম পুরুষদের বিয়ে করার এ প্রবণতা আগের চেয়ে এখন কমে গেলেও নারীদের মধ্যে বেড়ে গেছে ইসলাম সম্পর্কে পরিপূর্ণ অধ্যয়ন ও গবেষণা। যার ফলে আগের তুলনায় ইসলামের দিকে ঝুঁকছে বেশির ভাগ নারী ও পুরুষ।
অসলো বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় নরওয়ের ইসলাম গ্রহণকারী ২ নারীর বক্তব্যে ইসলাম গ্রহণের বিষয়গুলো সুস্পষ্ট। তাদের মতে-মনিকা সালমুক নরওয়েজিয় ইসলাম গ্রহণকারী নারী মনিকা সালমুক। ৪ বছর আগে ইসলামসহ বিভিন্ন ধর্ম সম্পর্কে গবেষণা ও অধ্যয়ন শুরু করে সে। বিভিন্ন ধর্ম সম্পর্কে অধ্যয়নের পর সে নিজের জন্য ইসলামকে বেছে নেয়।
সোলভা নাবিলা স্যাক্সেলিন৪২ বছর বয়সী নরওয়েজিয় স্বেচ্ছাসেবী নারী সোলভা নাবিলা স্যাক্সেলিন। নরওয়েতে আশ্রয় নেয়া মুসলিম শরণার্থীদের সাহায্যে তিনি কাজ করেন। মুসলিম শরণার্থীদের সহযোগিতা করতে তাদের সংস্পর্শে গিয়ে ইসলাম গ্রহণের অনুপ্রেরণা পেয়েছেন সোলভা নাবিলা স্যাক্সেলিন।
নরওয়েতে ইসলাম১৯৫০ সালের দিকে নরওয়েতে মুসলমানের অবস্থান স্পষ্ট ছিল না। ১৯৬০ সালের দিকে দৃশ্যমান হতে থাকে মুসলিমদের অবস্থান। নরওয়ের রাজধানী অসলোতে ১৯৭৪ সালে প্রথম মসজিদ গড়ে ওঠে।
Advertisement
১৯৬০ সালের পরবর্তী সময়ে নরওয়েতে মুসলমানদের সংখ্যা বাড়তে থাকে। ফলে বর্তমানে নরওয়েতে মুসলমানরা দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় জনগোষ্ঠীতে পরিণত হয়েছে। গত ২০১১ সালের তথ্য মতে নরওয়েতে মোট জনসংখ্যার ২.৩ শতাংশ মুসলিম।
উল্লেখ্য যে, চলতি বছরের জুন মাসে ‘স্টপ ইসলামাইজেশন’ গ্রুপের এক সভায় ইসলাম, কুরআন ও হিজাবের ব্যাপারে বক্তব্য দিতে গিয়ে পুলিশি প্রহরায় এক জনসমাবেশে প্রকাশ্যে পবিত্র কুরআনুল কারিম ছুঁড়ে ফেলেন অ্যানা ব্রাটেন নামে এক নারী নেত্রী।
সেখানে উপস্থিত পুলিশ সদস্যরা কুরআনের কপিটি সংরক্ষণে চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। এক পর্যায়ে অ্যানা ব্রাটেন পবিত্র কুরআনের কপিটি প্রতিবাদকারী মুসলিমের দিকে ছুড়ে ফেল দেন।
এ ঘটনার ৪ মাসের ব্যবধানে অসলো বিশ্ববিদ্যালয়ের কালচারাল স্টাডিজ অ্যান্ড অরিয়েন্টাল ল্যাঙ্গুয়েজ বিভাগের গবেষণার ফলাফল ও ভারডেনস গ্যাঙ্গে-এর প্রতিবেদনটি ইসলাম ও মুসলমানদের জন্য অনেক বড় সুসংবাদ।
এমএমএস/এমএস