আন্তর্জাতিক

বিক্রমের ছবি নিয়ে ধোঁয়াশা

 

ভারতের চন্দ্রদূত ‘বিক্রম’ খুঁজে পাওয়ার আশা আপাতত দেখছে না বিজ্ঞানীরা। কেননা বৃহস্পতিবার চাঁদে রাত নেমেছে। বিক্রমের শরীরে শক্তি জোগায় সূর্যের আলো, রাত নামলে সেই শক্তির উৎস থাকবে না।

Advertisement

এর আগে গত মঙ্গলবার মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ‘নাসা’ তার ‘লুনার রিকনিস্যান্স অরবিটার’ দিয়ে বিক্রমের ছবি তোলার চেষ্টা করে। কিন্তু সেই চেষ্টা সফল হয়েছে কি না, তা জানা যায়নি। টানা ১৪ দিন ধরে বিক্রমের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছেন ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থার (ইসরো) বিজ্ঞানীরাও। কিন্তু সাড়া মেলেনি।

নাসা জানায়, ১৭ সেপ্টেম্বর তাদের অরবিটার বিক্রমের অবতরণস্থলের উপরে আসবে। সে সময় ছবি তোলা হবে। বৃহস্পতিবার একটি বিদেশি সংবাদমাধ্যম নাসার এক কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, কিছু ছবি তোলা হয়েছে। কিন্তু তাতে বিক্রমের ছবি এসেছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

অন্য একটি সূত্রের দাবি, মার্কিন অরবিটার যতক্ষণে বিক্রমের অবতরণস্থলের উপরে পৌঁছেছিল, ততক্ষণে আলো কমে যায়। ফলে স্পষ্ট ছবি আসবে কি না, সেটাও নিশ্চিত নয়। তাই বিক্রমের ছবি পাওয়ার আশাও ক্ষীণ থেকে ক্ষীণতর হয়েছে বলে মনে করছেন তারা।

Advertisement

মহাকাশবিজ্ঞানীদের মতে, বিক্রমের শরীরে শক্তি জোগাচ্ছে সূর্যের আলো। রাত নামলে সেই শক্তির উৎস থাকবে না। রাতে চাঁদের তাপমাত্রা শূন্যের ১৮০ ডিগ্রি নীচে নামে। ঠাণ্ডায় বিক্রমের শরীরে সৌর প্যানেল কাজ করবে কি না।

ইসরো জানায়, বিক্রম এবং তার শরীরের ভেতরে থাকা রোভার ‘প্রজ্ঞান’কে ১৪ দিন কাজ করার জন্য পাঠানো হয়েছিল। অর্থাৎ দু’জনেরই কর্মজীবন শেষ।

গত ২২ জুলাই অন্ধ্র প্রদেশের শ্রীহরিকোটা থেকে চন্দ্রযান-২ উৎক্ষেপণ করেছিল ইসরো। তার তিনটি অংশ ছিল—অরবিটার, ল্যান্ডার বিক্রম ও রোভার প্রজ্ঞান। ২ সেপ্টেম্বর অরবিটার থেকে বিক্রম বিচ্ছিন্ন হয়। তার শরীরের ভেতরে ছিল প্রজ্ঞান। ৬ সেপ্টেম্বর গভীর রাতে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে বিক্রমের পালকের মতো অবতরণ করার কথা ছিল। কিন্তু অবতরণের শেষ ধাপে বিক্রমের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এরপর থেকে বিক্রমের খোঁজ মেলেনি।

অরবিটার বিক্রমের একটি তাপচিত্রের ছবি পাঠিয়েছিল। কিন্তু তা থেকে চন্দ্রপৃষ্ঠে আছড়ে পড়া বিক্রমের অবস্থা বোঝা যায়নি।

Advertisement

বিজ্ঞানীদের ধারণা, অবতরণের শেষ ধাপে গতি নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে মুখ থুবড়ে পড়েছে বিক্রম। মুখ থুবড়ে পড়ার ইঙ্গিত মিলেছে ইসরোর চেয়ারম্যানকে শিবনের কথাতেও।

তিনিও বলেছিলেন, ‘গতি সামলাতে না-পেরে বিক্রম সম্ভবত আছড়ে পড়েছে।’

তবে ইসরোর দাবি, এ অভিযানের মূল অংশ চন্দ্রযানের অরবিটারটি। সেটি ঠিকঠাক কাজ করছে। আগামীতে দিনের বেলা বিক্রমের দেখা পেলে সে ফের হারানো ‘সঙ্গীর’ ছবি তুলতেও পারে।

এএইচ/এমএস