জাতীয়

‘ভাই খাইলাম না, ছুঁইলাম না অথচ আমরাই এখন আতঙ্কে’

‘ভাই খাইলাম না, ছুঁইলাম না অথচ আমরাই এখন আতঙ্কে।’ বদনামটাও হচ্ছে আমাদের- দেশের পুরনো এক ক্লাব অফিসিয়ালের মন্তব্য এটি।

Advertisement

কীভাবে? ক্যাসিনো উচ্ছেদ অভিযানে প্রথমেই আসছে ক্লাবের নাম। যুগ যুগ ধরে পরিশ্রম, খেলায় বিনিয়োগ আর সাফল্য দিয়ে সুনাম অর্জন করা ক্লাবগুলোর সঙ্গে এখন জড়িয়ে যাচ্ছে ক্যাসিনো জুয়ার বদনাম, যা দেশের খেলাধুলা উন্নয়নে বড় ভূমিকা রাখা ক্লাবগুলোর সাথে কোনোভাবেই যায় না; কিন্তু পরিস্থিতি তাদের সেদিকেই ঠেলে দিয়েছে।

ক্লাব পাড়াসহ রাজধানীর অন্য জায়গাগুলোতে যে ক্যাসিনো আস্তানার খোঁজ মিলেছে সেগুলো কারা তৈরি করেছে, নামগুলো দেখলেই বোঝা যায় এখানে অন্যদের টুঁ-শব্দ করার উপায় ছিল না।

যে ক্লাবগুলোয় ক্যাসিনো বাণিজ্য চলে সেখানকার সংগঠকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা স্বেচ্ছায় ক্যাসিনোর জন্য জায়গা দেয়নি। জোর করেই ক্যাসিনোর জন্য জায়গাগুলো নেয়া হয়েছে। এখানে কোটি কোটি টাকার জুয়া চললেও ক্লাবগুলো আসলে তেমন কিছু পায় না।

Advertisement

এক ক্লাবের কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘ভাই সবই জানেন। এখানে কারা ক্যাসিনো চালায়। প্রতিদিন লাখ লাখ টাকা উড়ছে। জুয়াড়িদের খাওয়া আর ফুর্তির জন্য প্রতিদিন দেড়/দুই লাখ টাকা খরচ হয়। ক্লাবকে যায় দেয়, সেটাকে ‘ভিক্ষাই’ বলা যায়। আমরা না পারছি গিলতে, না পারছি ওগড়াতে। বরং যারা এখান থেকে কোটি কোটি টাকা কামাই করে নিয়ে যাচ্ছে তাদের চেয়ে বদনামটা বেশি ক্লাবেরই।’

ক্যাসিনোতে প্রতিদিন কি পরিমাণ টাকা ওড়ে তার একটা উদাহরণ দিয়ে আরেক ক্লাব কর্মকর্তা বলেন, ‘যে ছয়টি ক্লাবে ক্যাসিনো আছে সেখানে প্রতিদিন গড়ে ৫ হাজারের মতো মানুষ খাওয়া দাওয়া করে। এর মধ্যে দুপুর আর রাতের খাওয়াটা নাকি বিয়ে বাড়ির মতো। সবাইকে জামাই আদর করেই খাওয়ানো হয়। বুঝুন! যেখানে আপ্যায়নে এত খরচ, সেখানে কি পরিমাণ টাকা উড়ে?’

ক্লাব পাড়ায় ক্যাসিনো গড়ে ওঠার পর সবার ধারণা ছিল ক্লাবগুলো এখান থেকে মোটা অংকের দান মারছে; কিন্তু বুধবারের ক্যাসিনো উচ্ছেদ অভিযানের পর বেরিয়ে আসছে আসল তথ্য। ক্লাবের প্রকৃত সংগঠরা এ অভিযানে খুশি। তারা আগে কিছু বলতে পারেননি। এখন ভয়ে ভয়ে হলেও মনের কথা বলছেন- এগুলো উচ্ছেদ হলেই বাঁচি।

তাহলে ক্যাসিনো থেকে ক্লাবগুলো কি পাচ্ছে? এ প্রশ্নও উঠছে। এখানে সঠিক হিসাব পাওয়া কঠিন। তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দৈনিক ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকার বেশি পায় না ক্লাবগুলো। এখানেই পরিষ্কার, একটা ক্যাসিনোতে প্রতিদিন আপ্যায়নের যে খরচ তার চার ভাগের এক ভাগও যায় না ক্লাব তহবিলে। অথচ এখন বদনামের পুরোটাই তাদের।

Advertisement

আরআই/আইএইচএস/এমকেএইচ