ভাই আপনি মিডিয়ার? হুম, বলতেই আরেকজনকে ডেকে আনলেন খুলনার শিহাব নামের এক যুবক। বললেন, শোনেন তার কাছে কীভাবে এখানে জুয়া খেলে সর্বহারা হচ্ছে মানুষ। কি নাম আপনার? শহিদুল ইসলাম। বাড়ি চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জে। এখানে আরামবাগ ক্রীড়া সংঘে চাকরি করি বেশ কয়েক বছর ধরে।
Advertisement
মধ্যবয়সী শহিদুল ইয়ংমেন্স ক্লাব ও ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের সামনের গলিতে দাঁড়িয়ে বলতে লাগলেন ফকিরেরপুল, আরামবাগ ও মতিঝিল ক্লাব পাড়ার জুয়ার কাহিনি। কয়েক মিনিটের মধ্যেই সেখানে ছোটখাটো জটলা বেঁধে গেলো। টিভি ক্যামেরাও এসে পড়লো কয়েকটি। তা দেখে আরো ভিড়। শহিদুলের মুখের কথা কেড়ে নিয়ে অন্যরাও দিতে চান এ এলাকার জুয়ার ভয়বহতার বর্ণনা। যে কারণে র্যাবের উচ্ছেদ অভিযানে সবাই খুশি।
হঠাৎ করেই কথার মধ্যে ঢুকে গেলেন আরেকজন। চেহারাই বলে দিচ্ছে, সর্বস্ব হারিয়েছেন তিনি। বললেন, ঠিকাদারি করতাম। লাখ তিরিশের মতো টাকা গেছে আমার এই ক্যাসিনোতে। এখন এখানেই থাকি, এখানেই খাই, এখানেই ঘুমাই।
আরেকজন বললেন, এত দেরিতে অ্যাকশন শুরু হলো যে তার আগেই আমরা শেষ। এখানে যারা খেলে তাদের ৯৯ ভাগই ফকির হয়ে গেছে। আরেকজন বলেন, ‘আমরা চাই এ অভিযান যেন থেমে না যায়। চিরতরে উচ্ছেদ করা হোক ক্লাব পাড়ার সব জুয়ার আস্তানা।’
Advertisement
ফরিদগঞ্জের শহিদুলের ক্লাব পাড়ার সঙ্গে পরিচয় জুয়া দিয়েই। অনেক বছর ধরে তিনি আরামবাগ ক্লাবে জুয়া খেলেন। সব কিছু হারিয়ে পরে ক্লাবেই ছোট একটা চাকরি নিয়েছেন, পেট বাঁচানোর জন্য। ‘আমি অনেক দিনের সাক্ষী। আমার চোখের সামনে অনেকে ফকির হয়েছেন। কেউ কেউ পাগলও হয়ে গেছেন। অনেকে এখন রাতে এই রাস্তায় ঘুমায় আর তিনবেলা ক্যাসিনোতে খায়’- বলছিলেন শহিদুল ইসলাম।
বিলম্বে হলেও জুয়ার সাম্রাজ্যে হামলা চালানোয় সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন অনেকে। সবারই এক কথা, ‘এ উচ্ছেদ অভিযান যেন প্রত্যেক জায়গায় করা হয়। যাতে মানুষ আর বিপৎগামী না হতে পারে।’ ক্যাসিনোসহ সব ধরনের জুয়ার আস্তানা চিরতরে উচ্ছেদ চান ভুক্তভোগীরা।
আরআই/আইএইচএস/এমকেএইচ
Advertisement