ঢাকা-মুন্সিগঞ্জ সংযোগ সড়ক নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় রাস্তার পাশে পশুর হাট বসায় শনিবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছে রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্সসহ শত শত যাত্রীবাহী বাস। দুর্ভোগ থেকে বাদ পড়েননি আশপাশের এলাকার মানুষও। তবে ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী এক নেতা নারায়ণগঞ্জ ক্রীড়া সংস্থার কাছ থেকে ইজারা নিয়ে পশুর হাটটি বসানো হলেও ভয়ে এলাকাবাসী প্রতিবাদ করছেন না। এলাকাবাসী জানান, ঢাকা-মুন্সিগঞ্জ সংযোগ সড়কের পাশে ফতুল্লার কাশিপুর হাটখোলা এলাকায় একটি মাত্র খেলার মাঠ। এ মাঠের পাশেই একটি জুনিয়র হাইস্কুল, সমাজ উন্নয়ন ক্লাবসহ বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এছাড়া আশপাশে রয়েছে কাশিপুর, ভোলাইল, মধ্যনরসিংপুর, ভোলাইল, গোগনগর, সৈয়দপুর, বাবুরাইল, পাইকপাড়া, দেওভোগ, ভুইয়াপাড়া, মুসলিমনগরসহ বেশ কয়েকটি এলাকা। প্রতিটি গ্রামের সড়ক একেবারেই নাজুক ভাঙা ও বেহাল অবস্থা। এরমধ্যে কাশিপুর হাটখোলা থেকে মুন্সিগঞ্জে যাওয়ার পথে একটি ব্রিজ রয়েছে। আর এই ব্রিজটি রয়েছে ঝুঁকিপূর্ণ।এমনকি ঢাকা-মুন্সিগঞ্জ সংযোগ সড়কে কাশিপুর দেওয়ান বাড়ি এলাকার আরেক ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজ রয়েছে। প্রতিদিন শত শত গাড়ি ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। দেওভোগ-ভোলাইল এবং পঞ্চবটি-বক্তাবলীর সড়কটি বেহাল দশা এবং ভেঙে উঁচু নিচু গর্ত হয়ে যানবাহন চলাচল অনুপযোগী হয়ে আছে দীর্ঘদিন ধরে। এসব এলাকার বাসিন্দারা ঢাকা-মুন্সিগঞ্জ সংযোগ সড়ক দিয়ে সুবিধামতো চলাচল করতে পারে। এ সড়কের পাশে পশুর হাট বসায় উল্লেখিত এলাকায় বসবাসকারী কয়েক লাখ লোকের দুর্ভোগ এখন আরো কয়েকগুণ বেড়েছে।ভুইয়াপাড়া এলাকার কাঠ মিস্ত্রি রাজেন্দ্র জাগো নিউজকে জানান, সকালে ফতুল্লা থেকে কাঠ কিনে সৈয়দপুর যাওয়ার পথে কাশিপুর এলাকায় এক ঘণ্টা সড়কে ভ্যানের উপর বসে থাকতে হয়েছে। পরে বাধ্য হয়ে চালককে আস্তে আস্তে যাওয়ার কথা বলে কাঠ ভর্তি ভ্যান রেখে পায়ে হেঁটে বাসার উদ্দেশ্যে রওনা হতে হয়েছে। এখন ঈদের বাজার এই সময় ঘণ্টার পর ঘণ্টা সড়কে যানজট লেগে থাকলে ধনীর চেয়ে গরিবের ক্ষতি অনেক বেশি হবে। হাটখোলার পশুর হাটটি দ্রুত সরিয়ে নেয়া না হলে শুধু নারায়ণগঞ্জ নয় ঢাকা ও মুন্সিগঞ্জের মানুষ মারাত্মক দুর্ভোগ থেকে রক্ষা পাবে। কাশিপুর হাটখোলা এলাকার নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ব্যবসায়ী জাগো নিউজকে জানান, কাশিপুর হাটখোলার এই মাঠটি হচ্ছে প্রকৃত পক্ষে খেলার মাঠ। নারায়ণগঞ্জের আশপাশের বেশ কয়েকটি পশুর হাট বসানো হয়েছে। কিন্তু হাটখোলার এ মাঠে কোন উদ্দেশ্যে হঠাৎ পশুর হাট বসানো হলো। তিনি আরো জানান, সরকারের পক্ষ থেকে মহাসড়কে পশুর হাট বসা নিষিদ্ধ থাকলেও ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী নেতা স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে হাটখোলা মাঠে পশুর হাট বসিয়েছে আমরা এমনটাই শুনেছি। স্থানীয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযোগ কেন তারা সরকারের নির্দেশ অমান্য করে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকে খুশি করতে জনগণকে দুর্ভোগে ফেলেছেন।এ ব্যাপারে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আফরোজা আক্তার চৌধুরী জাগো নিউজকে বলেন, জেলা প্রশাসক নারায়ণগঞ্জ ক্রীড়া সংস্থাকে হাটখোলা মাঠটিতে পশুর হাট ইজারা দিয়েছে। ওই মাঠের আশপাশে অবস্থিত তিনটি এলাকার সড়ক ভাঙা ও বেহাল অবস্থা থাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। মাঠটি যারা ইজারা নিয়েছে তাদেরকে যানজট নিরসন করতে এবং নদী পথে পশু আনতে বলা হয়েছে। মো. শাহাদাৎ হোসেন/এমজেড/পিআর
Advertisement