জাতীয়

তিন সপ্তাহ পরিকল্পনা, অতঃপর অভিযানের গ্রিন সিগন্যাল

মতিঝিল ও গুলিস্তানে ক্লাবপাড়ায় ক্যাসিনো ও জুয়ার আসরে সাঁড়াশি অভিযান পরিচালিত হবে তা ঘুণাক্ষরেও কেউ কল্পনা করেনি। বিভিন্ন সরকারের আমলে সরকারদলীয় প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতাদের ছত্রচ্ছায়ায় ক্লাবপাড়াগুলোতে বাধাবিঘ্নহীনভাবে জমজমাট জুয়ার আসর বসত। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সব জেনেও নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করত।

Advertisement

বরং অভিযোগ রয়েছে, জুয়ার আসর যেন নিরাপদ পরিবেশ বজায় থাকে সে দায়িত্ব পালন করতেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা! তবে কেমন করে অভিযান পরিচালিত হলো তা এখন ক্লাবপাড়ার সবার মুখে মুখে।

অভিযানে অংশগ্রহণকারী একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জাগো নিউজের এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে বলেন, এ এলাকার ক্লাবের ক্যাসিনোতে ইচ্ছে করলেই যে কেউ প্রবেশ করতে পারে না। ক্লাবের বাইরে থেকে প্রবেশদ্বার ও ক্যাসিনোতে প্রবেশ করার দরজা পর্যন্ত আগন্তুককে তিন স্তরের জিজ্ঞাসাবাদের মুখে পড়তে হয়। পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে এমনকি ক্যাসিনোতে জুয়া খেলতে কত টাকা পকেটে করে নিয়ে এসেছে তা দেখে তবেই ভেতরে প্রবেশ করতে দেয়া হতো।

দুই বছর আগেও ক্লাবগুলোতে শুধু হাউজি খেলা হতো। কিন্তু দুই বছর ধরে নেপাল, থাইল্যান্ড ও সিঙ্গাপুরসহ অন্যান্য দেশের আদলে ক্যাসিনো শুরু হয়। দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা পালাক্রমে জুয়ার আসর চলতে থাকে। জুয়া খেলতে এসে অনেকেই সর্বস্বান্ত হয়ে বাড়ি ফেরেন। জমি-জমা, বাড়িঘর বিক্রি করে ও গয়না বন্ধক রেখে অনেকেই জুয়া খেলতে ছুটে আসেন।

Advertisement

বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে সম্প্রতি ক্যাসিনোতে খেলতে এসে অনেকেই সর্বস্বান্ত হয়ে বাড়ি ফিরছেন বলে উল্লেখ করা হয়। বিষয়টি রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ মহল পর্যন্ত পৌঁছায়। র‌্যাবসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থাকে আরও বিস্তারিত জানানোর নির্দেশনা দেয়া হয়। তিন সপ্তাহ ধরে নানাভাবে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা হয়। অবশেষে সরকারের উচ্চমহল থেকে অভিযান পরিচালনার নির্দেশনা প্রদান করা হয়।

এ সম্পর্কে জানতে চাইলে র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম বলেন, এ কথা সত্যি যে এখানে অভিযান পরিচালনা করা খুব সহজ কাজ ছিল না। কারণ এখানে অপরিচিত লোক দেখলে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়। সরকারের সংশ্লিষ্ট মহল থেকে নির্দেশনা পেয়ে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।

এমইউ/বিএ

Advertisement