‘ওই বেটা তোর বয়স কত?’ ‘স্যার, ১৮।’ ‘তোর কি ডায়াবেটিস আছে, একটু পরপর টয়লেটে যেতে চাস?’
Advertisement
র্যাব কর্মকর্তার ধমক শুনে ছিমছাম সুঠাম দেহের অধিকারী যুবক আঁতকে ওঠে বলল, ‘স্যার, ভয়ে বারবার পেশাব ধরে। এমন বিপদে পরুম স্বপ্নেও ভাবি নাই। দয়া কইরা আমারে ছাইড়া দেন আমি আর এই কাম করুম না।’
বুধবার রাত সাড়ে ১০টায় মতিঝিলের ফকিরেরপুল ইয়ংমেন্স ক্লাবের ক্যাসিনোতে এ দৃশ্য চোখে পড়ে।
বিকেলে যখন অভিযান শুরু হয় তখন উপস্থিত ক্যাসিনোর কর্মচারী ও জুয়ারিরা ততটা ভীত ছিলেন না। তারা মনে করেছিলেন ফ্যাশনের মালিক ক্ষমতাসীন দলের নেতা। কিছুক্ষণের মধ্যেই হয়তো তিনি সশরীরে হাজির হয়ে সব ম্যানেজ করবেন।
Advertisement
কিন্তু সময় যত গড়াতে থাকে উপস্থিত সবার মধ্যে এক ধরনের ভয় দেখা দেয়। অনেকে কান্নাজুড়ে দেন। এই ক্যাসিনো থেকে আটক ১৪২ জনের মধ্যে অনেকেই বয়স ৫৫ থেকে ৬০ বছর। তাদের অনেককে দেয়ালের পাশে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়তে দেখা যায়।
আসাদ নামের এক যুবক জানান, মাত্র এক মাস আগে আওয়ামী লীগের এক নেতার মাধ্যমে মাসিক ১০ হাজার টাকা বেতনে তার চাকরি হয়। তার কাজ জুয়ারিদের খাবার সরবরাহ করা। জুয়ারিদের মধ্যে যারা জেতেন তারা দুই হাত তুলে টিপস দেন। তাই চাকরির বেতনের চেয়ে ক্যাসিনোতে উপরি আয় বেশি।
হাসান নামের মধ্যবয়সী এক ব্যক্তি জানান, অনেক বছর ধরে তিনি মতিঝিলে ক্লাবপাড়ায় জুয়া খেলেন। কখনও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে এভাবে অভিযান চালাতে দেখেননি।
অভিযানে আটক হলেও তিনি অভিযানকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, অনেকেই জুয়া ফেলে সর্বস্ব হারাচ্ছে।
Advertisement
আরেক যুবককে র্যাবের এক সদস্যের কাছে বাসায় একটি মোবাইল থেকে ফোন করে খবর জানাতে অনুরোধ জানানো হয়।
র্যাব সদস্য জানান, অভিযানকালে নেটওয়ার্ক কাজ করে না। এ কথা শুনে ওই যুবকের চোখ ছলছল করে ওঠে।
এমইউ/বিএ