পাঁচ বছর মেয়াদি কৌশলগত পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এটি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দ্বিতীয় কৌশলপত্র। এর বাস্তবায়নের সময়কাল ২০১৫ থেকে ২০১৯। শনিবার বাংলাদেশ ব্যাংক প্রশিক্ষণ একাডেমিতে আনুষ্ঠানিকভাবে এ ঘোষণা দেন গভর্নর ড. আতিউর রহমান। অনুষ্ঠানে ডেপুটি গভর্নর ও বাংলাদেশ ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা, বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহীরা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে ২০০৯ সালের নভেম্বরে প্রথম কৌশলগত পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়। ওই পরিকল্পনায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আধুনিকায়ন ও সার্বিক উন্নয়নের লক্ষ্যে ভিশন ও মিশনসহ ১৭টি কৌশল, ৫৬টি উদ্দেশ্য এবং ১৫৭টি কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণ করে তা পরিপালনের নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়।নতুন পরিকল্পনা উপস্থাপনকালে আতিউর রহমান বলেন, আমার মনে হয়, এই কয়েক বছরে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাজের ধরনে অনেক পরিবর্তন আনতে পেরেছি। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে অংশগ্রহণমূলক মুদ্রানীতি প্রণয়ন, পেমেন্ট সিস্টেমের আধুনিকায়ন ও ডিজিটালাইজেশন তরান্বিতকরণ ও সুপারভিশন জোরদার করার পাশাপাশি নিম্নআয়ের মানুষদের আর্থিক সেবায় অন্তর্ভুক্তির কৌশল হিসেবে ‘ফাইন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন’ কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়। কৃষি, এসএমই ও পরিবেশবান্ধব খাতে অর্থায়ন বাড়ানো, দশ টাকায় ব্যাংক হিসাব খোলার সুযোগ, বর্গাচাষী ঋণ, নারী উদ্যোক্তা উন্নয়ন, গ্রিন ব্যাংকিং, সিএসআর, দ্রুত টাকা পাঠানোর জন্য মোবাইল ব্যাংকিং ও প্রত্যন্ত অঞ্চলে ব্যাংকিং সেবা পৌঁছাতে এজেন্ট ব্যাংকিং প্রবর্তন- সবই এই অভিযানেরই অংশ। অর্থনীতি এর সুফল এরই মধ্যে পেতে শুরু করেছে। আর্থিক খাতের সকল সূচকেই এখন চোখে পড়ছে ইতিবাচক পরিবর্তন।তিনি আরো বলেন, সরকারের সার্বিক উদ্যোগ ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সময়োচিত পদক্ষেপের কারণে দেশের অর্থনীতি ও আর্থিক খাত বর্তমানে সুদৃঢ় অবস্থায় আছে। সর্বশেষ অর্থবছরের ৬ দশমিক ৫১ শতাংশসহ গত ছয় অর্থবছরে গড় জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৬ দশমিক ২ শতাংশ। চলতি অর্থবছরে আমরা ৭ শতাংশের বেশি হারে প্রবৃদ্ধি অর্জনের আশা করছি। বেড়েছে আমদানি, রফতানি, বৈদেশিক রেমিট্যান্স ও বিদেশি মুদ্রার মজুদ। বিনিময় হার দীর্ঘদিন ধরে স্থিতিশীল রয়েছে। আমানত ও ঋণের সুদের হার এবং মূল্যস্ফীতি কমছে। এ অঞ্চলের সবচেয়ে স্থিতিশীল ও সফল অর্থনীতি এখন বাংলাদেশেরই। তবে এতকিছুর পরেও আমাদের আত্মতুষ্টির অবকাশ নেই। এসব অগ্রগতি ধরে রেখে আরও অগ্রগতি অর্জনে আমাদের নীতি-পরিকল্পনা গ্রহণ করা প্রয়োজন।এদিকে, মোটাদাগে ১৪টি কৌশল, এসব কৌশল বাস্তবায়নে ১০৫টি উদ্দেশ্য এবং মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদে ৩২০টি কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণ করেছি। কর্মপরিকল্পনা মূল্যায়নে ৩৯৫টি সূচকও নির্ধারণ করা হয়েছে। এসএ/একে/পিআর
Advertisement