সাহিত্য

অনন্ত প্রতীক্ষা

নির্ঘুম নিঝুম কাল রাতেএলোমেলো স্মৃতিকণাগুলো দিন শেষে মৌন মিছিল করেপুঞ্জিভূত হয় মনের আঙিনায়!হৃদয়ে ঝড়ের তাণ্ডব চলেনানা ছলে অবলীলায়!

Advertisement

আমি নিত্য গড়াগড়ি খাই,কোমল কণ্টকাকীর্ণ বিছানায়,ছটফটে মরি বিরহ বেদনায়!দুঃখের বিনিদ্র রজনী এতদীর্ঘতর হয়! এগোতে না চায়!

এমনি করে মাঝরাত গড়ায়তৃষায় বুকটা ফেটে যায়!খট করে লাইট জ্বালি,দেয়াল ঘড়িটায় চোখ আটকায়!টিকটিক শব্দটা বুকে বিঁধেযন্ত্রণাটা আরও বাড়ায়।

বুকের ক্লান্ত ঘড়িটা বলেআর তো পারছি না হায়!মানুষ এত নির্দয় পাষাণজানি না কী করে হয়!

Advertisement

ধীরে ধীরে চেয়ার টেনে বসেজগের ঢাকনাটা তুলেটেবিলে রাখা গ্লাসে পানি ঢালি।পানি ঢালার ঢকঢক শব্দটাওকানে বিষময় ঠেকে খালি খালি!

মনে হয় সব কিছুই আমার সাথেনিরর্থক বিবাদে জড়ায়,জীবনটা দুর্বিষহ বিষময়!এক দুই তিন ঢোকগলনালী গড়িয়ে ভেতরে যায়;তাতে তৃষা ঘোচে না হায়!

বারে বারে উদাস দু’চোখঘড়ির কাঁটার দিকে যায়!টিকটিক ক্রমশ বেড়ে যায়আমি ঠায় বসে আছিতার অনন্ত প্রতীক্ষায়!

ঘড়ির কাটার শব্দের আড়ালেওই তো কিসের আওয়াজ শোনা যায় ক্ষীণস্বরে!ক্রমশ আওয়াজ বাড়েনিশ্চিত বোঝা যায়আসছে ট্রেন, ওই ট্রেন আসছে!আসছে দ্রুত তালে দ্রুতযান।আজ নিশ্চয়ই আসবে সেআলোয় আলোয় ভরে যাবে আমার তনু-মন-প্রাণ!

Advertisement

মনোবল বেড়ে যায়; মুহূর্তেচোখ মুছে ঘুরে দাঁড়াই আয়নায়।এলো চুল বেঁধে ফুল দেই খোপায় কপালে গাঢ় নীল টিপ আজও বেশ তো মানায়!কম্পিত ঠোঁটের সরল রেখায়জাগে আশার নতুন সূর্যোদয়! সে তো এলো না আজও;ট্রেন চলে গিয়ে সুদূরে মিলায়!আহত স্বপ্নগুলো বিবর্ণ হয়েডানা ভেঙে মুখ থুবড়ে পড়েনিস্তেজে মাটিতে জাপটায়!

ট্রেন আসে ট্রেন চলে যায়,আমার নীরব আর্তনাদ ট্রেনের গগনবিদারী চিৎকারে নিমিষেই ফুরায়!আলো-হাসি-ফুল-টিপ নৈবেদ্যের সব আয়োজন;স্তব্ধ হয়ে ধুলায় লুটায়!কেউ জানতে না পায়!

এসইউ/এমএস