দেশজুড়ে

স্ত্রীকে গণধর্ষণ, জামিনে বেরিয়ে স্বামীর হাত-পা ভাঙল আসামিরা

পটুয়াখালীতে স্ত্রীকে গণধর্ষণের ঘটনায় মামলা করায় সিদ্দিক হাওলাদার নামে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হাত-পা ভেঙে দিয়েছে এজাহারভুক্ত আসামিরা। মঙ্গলবার রাত ১০টায় কলাপাড়ার ধূলাসার ইউনিয়নের চাপলী বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। অচেতন অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে কলাপাড়া উপজেলা হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাত ১২টার দিকে তাকে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল (শেবাচিম) কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

Advertisement

স্বজনরা জানান, রাতে চাপলী বাজারে যায় সিদ্দিক। এ সময় গণধর্ষণ মামলার আসামি শাকিলের নেতৃত্বে শাহআলম, আল-আমিন, রবিউলসহ ৮/১০ জন মিলে তাকে পেটাতে থাকে। আসামিরা খুবই প্রভাবশালী হওয়ায় আশপাশের লোকজন এর প্রতিবাদ করতে এগিয়ে আসেনি। এ সময় দুর্বৃত্তরা তাকে গুরুতর আহতাবস্থায় সেখান থেকে তুলে একটি নির্জন স্থানে নিয়ে যায়। পরে সেখানে প্রায় দুই ঘণ্টা নির্মম নির্যাতন চালায়। এতে তার হাত-পা ভেঙে যায়। পরে তাকে নিজ বাড়ির পাশে নির্জন স্থানে অচেতন অবস্থায় ফেলে রেখে যায়।

পটুয়াখালী অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহ্ফুজুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছন। তিনি জানান, মঙ্গলবার রাতে গণধর্ষণ মামলার বাদী সিদ্দিকের ওপর হামলা করে এজহারভুক্ত আসামিরা।

তিনি আরও জানান, আসামিরা কিছুদিন আগে পুলিশের হাতে ধরা পড়ে জেল হাজতে ছিল। পরে জামিনে বের হয়ে মঙ্গলবার রাতে সিদ্দিকের ওপর হামলা করে তার হাত-পা ভেঙে দিয়েছে। এ ঘটনায় সরাসারি জড়িত আসামি আবুল খায়েরকে (৩৫) গ্রেফতার করেছে মহিপুর থানার পুলিশ। বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় পূর্ব চাপলি এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

Advertisement

মহিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি মো. সোহেল আহম্মদ) জানান, রাত ৯টার দিকে চাপলী বাজারে মো. শাকিল গংরা যায় সিদ্দিককে পিটিয়ে বাম হাত ও দুই পা ভেঙে দেয়। খবর পেয়ে গুরুতর অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে প্রথমে কলাপাড়া উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে তাৎক্ষণিক তাকে বরিশাল শেবাচিমে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় এখনও কোনো মামলা হয়নি। তবে হামলায় প্রত্যক্ষ জড়িত আবুল খায়েরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সে চাপলি এলাকার আবদুল মোতালেবের ছেলে।

উল্লেখ্য, গত ১৫ এপ্রিল রাতে ধূলাসার ইউনিয়নের পশ্চিম চাপলী গ্রামে মহিপুর থানা শ্রমিকলীগের সাধারণ সম্পাদক শাকিল মৃধার নেতৃত্বে শাহ আলম, শাহিন, রবিউল, আল-আমিন, আ. রশিদসহ অজ্ঞাত ৭/৮ যুবক স্বামী সিদ্দিক হাওলাদার নামে এক ব্যক্তিকে অস্ত্রের মুখে বেঁধে রেখে তার স্ত্রীকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে রাতভর পালাক্রমে ধর্ষণ করে।

আসামিরা প্রভাবশালী হওয়ায় এ ঘটনায় মহিপুর থানায় মামলা না নিলে সিদ্দিক হাওলাদার বাদী হয়ে পটুয়াখালী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে গণধর্ষণের মামলা করেন। এরপর আদালত মহিপুর থানার ওসিকে মামলাটি এজাহার হিসেবে গণ্য করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেন।

মহিব্বুল্লাহ্ চৌধুরী/এমএমজেডৃ/জেআইএম

Advertisement