‘শুনেছি যুক্তরাষ্ট্রের নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বোয়িং আরও দুটি বিমান বিক্রি করবে। আমরা সেই যুযোগটা নেব।’ মঙ্গলবার রাজধানীর শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ড্রিমলাইনার রাজহংসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কথা বলেন।
Advertisement
শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের রিজার্ভ মানি যথেষ্ট ভালো অবস্থায় আছে। আমাদের যে রিজার্ভ মানি আছে, তাতে আমার মনে হয় নিজেদের টাকায় কিনতে (উড়োজাহাজ) পারব, কোনো সমস্যা হবে না।
রিজার্ভ মানির বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘রিজার্ভ হিসাব করি আমরা এই কারণে যে, সবসময় কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা দিলে বা কোনো দুর্বিপাক দেখা দিলে আমাদের যদি খাদ্য কিনতে হয়, তাহলে যেন তিন মাসের খাদ্য আমরা কিনতে পারি, সেই পরিমাণ অর্থ আমার জমা থাকতে হবে। এর অতিরিক্ত রেখে দেয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। সেটি আমি উন্নয়নের কাজে লাগাতে পারি। সেদিক থেকে আমরা খুব ভালো একটা অবস্থানে আছি। এখানে আমাদের কোনো সমস্যা নেই। তাছাড়া খাদ্য উৎপাদনে আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছি। কাজেই খুব একটা যে আমরা বিপদে পড়ব, তা নয়।’
তিনি বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করার জন্য আমাদের যে পরিমাণ খাদ্যশস্য রাখা দরকার, সে পরিমাণ আমরা মজুত রেখেছি। কোনো অসুবিধা হবে না। আমরা সব ধরনের ব্যবস্থা করে রেখেছি।
Advertisement
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সকে নিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, বিমানের যে অবস্থা ছিল সেটি আর বলার অপেক্ষা রাখে না। আমরা যখন বাইরে যেতাম বা বিশেষ করে লন্ডনে বা আমেরিকায় যাওয়া হতো তখন বিমান ব্যবহার করতাম। তখন বিমানের যে অবস্থা ছিল, আগে প্লেনে উঠলে পানি পড়ত, টিস্যু দিয়ে পানি পড়া বন্ধ করা হতো, কোনো এন্টারটেইমেন্টের ব্যবস্থাই ছিল না। মাঝে মাঝে আমি ককপিটে যেতাম, কথা বলতাম। কারণ, আমি ভাবতাম এরকম একটা অবস্থায় প্লেন কীভাবে আমাদের পাইলটরা চালায়। আমি বলতাম যে, আমাদের পাইলটদের বিশ্বসেরা পাইলট হিসেবে তাদের স্বীকৃতি দেয়া উচিত এই ধরনের একটা প্লেন চালানোর জন্য।
তৎকালীন বিএনপি সরকারের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, তখন যারা ক্ষমতায় ছিল তখন দেশের দিকে তাকানো, জনগণের দিকে তাকানো বা দেশের অবস্থান দেখার খুব-একটা দৃষ্টি ছিল না। যেহেতু তাদের ক্ষমতা দখল ছিল অবৈধভাবে প্রেসিডেন্সির ক্ষমতা নিয়েছিল, তাই স্বাভাবিকভাবেই তাদের সেই ক্ষমতা নিষ্কণ্টক করার দিকে যতটা দৃষ্টি ছিল, ততটা দৃষ্টি দেশের উন্নয়নে ছিল না। তারা শুধু রুটিনওয়ার্ক করে যেত।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেই অবস্থান থেকে উত্তোরণ ঘটানোর জন্য যখনই আমরা ক্ষমতায় এসেছি, আমরা প্রচেষ্টা চালিয়েছি। আজকে বাংলাদেশ একটা উন্নয়নের রোলমডেল হিসেবে বিশ্বেস্বীকৃতি পেয়েছে। আমাদের প্রবৃদ্ধি অর্জন অনেক বেশি। অনেক দ্রুত প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছি। পৃথিবীর বহু দেশ দ্রুত প্রবৃদ্ধি অর্জন করলেও তাদের মূল্যস্ফীতি বেশি। আমরা প্রবৃদ্ধির পাশাপাশি মূল্যস্ফীতি ধরে রাখতে পেরেছি।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা আরও বলেন, ইতোমধ্যেই আমাদের দশটি প্লেন চলে এসেছে। অরুণ আলো, গাঙচিল ও পালকী, হংসবলাকা, আকাশ প্রদীপ, রাঙা প্রভাত, মেঘদূত, আকাশবীণা, ময়ূরপঙ্খী ও রাজহংস। এসব নামকরণ আমি করেছি। আমরা চেয়েছি যে একটা সুন্দর নামকরণ হোক।
Advertisement
আরএম/জেডএ/এমএস