দেশজুড়ে

সুদের হাত থেকে রক্ষা পেতে এলাকাবাসীর মানববন্ধন

পিরোজপুরের জিয়ানগরে সুদ এক ব্যবসায়ীর হাত থেকে রক্ষা পেতে মানববন্ধন করেছে সচেতন নাগরিক সমাজ। শনিবার সকাল ১০টার দিকে উপজেলার সুদ ব্যবসায়ী ইন্দুরকানী গ্রামের সুদ ব্যবসায়ী জেসমিন বেগমের (৪২)হাত থেকে রক্ষা পেতে ও তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে এ মানববন্ধন করা হয়। উপজেলা শহরের প্রধান সড়কে ঘণ্টাব্যাপী এ মানববন্ধনে সর্বস্তরের প্রায় সহস্রাধিক লোক অংশগ্রহণ করেন।এসময় বক্তব্য রাখেন, বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটির সহ-সভাপতি আঃ ছাত্তার হাওলাদার, পত্তাশী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান সিকদার, মহিলা লীগের সভানেত্রী দিলরুবা মিলন, জিয়ানগর প্রেসক্লাবের সভাপতি এইচ, এম ফারুক হোসাইন প্রমুখ।  মানববন্ধনে বক্তারা জানান, জেসমিন দীর্ঘদিন ধরে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার মানুষের কাছে চড়া সুদে টাকা দিয়ে ব্যবসা করে আসছেন। তার সুদের টাকা পরিশোধ করতে না পারায় অনেক হিন্দু পরিবার ইতোমধ্যে পৈত্রিক সম্পতি ছেড়ে পাড়ি জমিয়েছেন ভারতে। ইন্দুরকানী বাজারের মুচি কৃষ্ণ (৪০) জানান, প্রায় দেড় বছর পূর্বে আমার মেয়ের বিবাহের জন্য জেসমিনের কাছ থেকে ২৫ হাজার টাকা প্রতিদিন পাঁচশত টাকা সুদ দেয়ার কথা বলে গ্রহণ করি। এভাবে তার সুদের টাকা পরিশোধ করতে গিয়ে আমার সব শেষ হয়ে গেছে। আমার মতো করে অনেক ব্যবসায়ী তার কাছ থেকে টাকা সুদে নিয়ে আজ পথে বসেছে। অপর দিকে ইন্দুরকানী বাজারের ব্যবসায়ী হারুন অর রশিদ জানান, জেসমিনকে তার মূল নামে এই বাজারের খুব কম মানুষ চেনে। তাকে সবাই মোনষা নামে আক্ষায়িত করেছে। তিনি চড়া সুদে টাকা দিয়ে টাকা আদায় করার সময় খুব খারাপ আচরণ করে। এমনকি সে পুরুষ লোকদের গায়ে হাত তুলতেও দ্বিধাবোধ করেন না। তার কাছ থেকে সুদে টাকা নিয়ে আজ পথে বসেছেন ইন্দুরকানী বাজারের ব্যবসায়ী সঞ্জিব বালা, মিজান, এমাদুল, বিধানসহ আরো অনেকে। ইন্দুরকানী বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটির সহ-সভাপতি আঃ ছাত্তার হাওলাদার জানান, জেসমিনের কাছ থেকে সুদে টাকা নিয়ে মানুষ মরেও রেহাই পায় নাই। গাবগাছিয়া গ্রামের আঃ ছোবাহান নামের এক লোক তার সুদের টাকা পরিশোধ না করেই মারা যায়। ছোবাহানের লাশ দাফনের পূর্বে সেখানে জেসমিন উপস্থিত হয়ে তার সুদের টাকা পরিশোধ করে লাশ দাফনের দাবি জানান। পরে তার টাকা শোধ করেই লাশ দাফন করা হয়। এভাবে করে সে রামচন্দ্রপুর গ্রামের কয়েকটি হিন্দু পরিবারকে দেশ ছাড়া করেছে। সুদের অতিরিক্ত টাকা দিতে না পারায় জিয়ানগর উপজেলার চাড়াখালী গ্রামের ঊষারানী ও কার্তিক শীল নামের এক সংখ্যালঘু পরিবারকে তাদের বসতভূমি থেকে উচ্ছেদ করে সে বাড়িটি জেসমিন নিজ নামে লিখে নেন। তাছাড়া একই গ্রামের বিধান বৈরাগী নামের অপর এক ব্যক্তি ৬০ হাজার টাকার বিপরীতে ৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা প্রদান করলেও গত বৃহস্পতিবার আরো ৩ লাখ ২০ হাজার টাকা দাবি করলে তাদের মধ্যে হাতাহাতি হয়। ওই ঘটনায় পুলিশ তাদের দুজনকেই আটক করে কোর্টের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠিয়েছে।  হাসান মামুন/ এমএএস/পিআর

Advertisement