ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরের ওপর চাপানো নিষেধাজ্ঞার কারণে স্কুলে যেতে পারছে না সেখানকার শিশুরা। শিশুরা যাতে স্কুলে যেতে পারে সে বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে জাতিসংঘের কাছে সাহায্য চেয়েছেন শান্তিতে সর্বকনিষ্ঠ নোবেলজয়ী মালালা ইউসুফজাই। আর এতেই ভারতীয়দের তোপের মুখে পড়েছেন পাকিস্তানের শান্তি আন্দোলনের এই কর্মী।
Advertisement
গত ৫ আগস্ট জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করার পর থেকে নিরাপত্তার স্বার্থে কাশ্মীর উপত্যকায় কড়া নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা জারি করেছে কেন্দ্রীয় সরকার।
কাশ্মীরের শিশুদের পক্ষ নিয়ে নিজের টুইটার অ্যাকাউন্টে শনিবার কয়েকটি টুইট করেন মালালা ইউসুফজাই। একটিতে তিনি লিখেছেন, ‘জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের নেতাদের কাছে অনুরোধ, কাশ্মীরে শান্তি প্রতিষ্ঠার বিষয়ে পদক্ষেপ নিন। কাশ্মীরিদের কথা শুনুন এবং শিশুদের নিরাপদে স্কুলে ফেরত পাঠাতে সাহায্য করুন।’
আরেকটি টুইটে লিখেছে, ‘শিশুসহ চার হাজার ব্যক্তিকে বলপূর্বকভাবে গ্রেফতার ও জেলে ঢোকানো ঘটনায় আমি গভীর উদ্বিগ্ন। শিক্ষার্থীরা ৪০ দিনের বেশি হলো স্কুলে যেতে পারছে না। মেয়েরা বাসা থেকে বের হতে ভয় পাচ্ছে।’
Advertisement
অন্য একটি টুইটে লিখেছেন, ‘বিশ্বের লোকজন আমাদের পক্ষে কথা বলা শুরু করেছেন, যা আমাদের অনুপ্রাণিত করে। আমি সেই দিনটির অপেক্ষায় আছি, যে দিন কাশ্মীর দশকের পর দশক ধরে চলে আসা দুর্দশা থেকে মুক্তি পাবে।’
I am asking leaders, at #UNGA and beyond, to work towards peace in Kashmir, listen to Kashmiri voices and help children go safely back to school.
— Malala (@Malala) September 14, 2019মালালার এই আকুতি মোটেও ভালোভাবে নেয়নি ভারতীয়রা। তারা রি-টুইট করে এর তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। কাশ্মীরিদের পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলতে তাকে নিষেধ করেছেন অনেকে। উল্টো পাকিস্তানে বসবাসকারী হিন্দু নারীদের পরিস্থিতি নিয়ে মালালার উদ্দেশে প্রশ্ন তুলেছেন কেউ কেউ। বিজেপি নেত্রী শোভা করন্দলাজে টুইট করেছেন, ‘কাশ্মীর নিয়ে মাথা না ঘামিয়ে মালালার উচিত তার নিজের দেশের সংখ্যালঘু মেয়েদের পাশে দাঁড়ানো।’
সাংবাদিক বরখা দত্ত তার প্রতিক্রিয়ায় লিখেছেন, ‘বস্তাপচা কাশ্মীর সমস্যা নিয়ে মালালাকে মাথা ঘামাতে দেখে খারাপ লাগল, যখন কি-না স্কুলে পড়াশোনা করার জন্য তিনি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পরে দেশে ফিরতে পর্যন্ত পারেন না।’
Advertisement
কৃষ্ণ মাল্য নামে একজন মন্তব্য করেছেন, ‘মালালা, তুমি বিদেশ থেকে স্বদেশের পক্ষে কথা বলছ। অথচ সেই দেশে যাওয়ার সাহস তোমার নেই।’
২০১২ সালের ডিসেম্বর মাসে পাকিস্তানের সোয়াট উপত্যকায় নারীশিক্ষার জন্য প্রচারের কারণে স্কুলছাত্রী মালালাকে গুলি করে তালিবান জঙ্গিরা। এরপর দেশ ছেড়ে ব্রিটেনে সপরিবারে তিনি আশ্রয় নেন। তালিবান আমলে পাকিস্তানে কয়েকশো স্কুল ধ্বংস করা হয়।
এসআর/এমকেএইচ