লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলায় বড়খাতা দোলাপাড়া সীমান্তবর্তী এলাকায় অবস্থিত বড় মসজিদের দ্বিতীয় তালার জানালায় থাই গ্লাস ও গ্রিল লাগাতে বাধা দিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। গতকাল শুক্রবার জুমার নামাজের সময় বিএসএফের একটি টহল দল এতে বাধা দিলে এলাকায় উত্তোজনা বিরাজ করে। এ ঘটনায় সীমান্তে নজরদারি ও টহল জোরদার করে বিএসএফ।
Advertisement
শনিবার বেলা ১১টায় আবারও বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে মসজিদের জানালার থাই গ্লাস ও গ্রিল লাগানোর কাজে বাধা দিয়েছে শিতলকুচি থানার অমিত ক্যাম্পের বিএসএফের একটি টহল দল।
এলাকাবাসী জানায়, প্রতি শুক্রবার এ মসজিদে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে শতশত নারী-পুরুষ বিভিন্ন নিয়তে নামাজ পড়তে আসেন। এর আগে ভারতীয় মুসলিমরাও নামাজ আদায় করতে আসতেন। কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের পর থেকে তা বন্ধ হয়ে যায়। শুক্রবার মসজিদের দ্বিতীয় তালার জানালায় থাই গ্লাস ও গ্রিল লাগাতে বাধা দেয়ার পর উত্তেজনা দেখা দিলে বিএসএফ সীমান্তে ব্যাপক টহল বৃদ্ধি ও মসজিদের ওপর নজরদারি করছে। এ ঘটনার পর থেকে মুসল্লিদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
ওই এলাকার ফজলার রহমান বলেন, বড়খাতা দোলাপাড়া সীমান্ত এলাকায় কেরামতিয়া বড় মসজিদের দুই তলা ভবনের নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। শুধু জানালার থাই গ্লাস ও গ্রিল লাগানের কাজ বাকি রয়েছে। মসজিদটি ভারত সীমান্ত থেকে প্রায় ২০ মিটার দূরে। তারপরও বিএসএফ বার বার কাজে বাধা দিচ্ছে।
Advertisement
দোলাপাড়া মসজিদ কমিটির সভাপতি ও বড়খাতা বালিকা বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হাবিবুর রহমান বলেন, শনিবার বেলা ১১টায় আবারও বিএসএফের একটি টহল দল এসে মসজিদের জানালায় থাই গ্লাস ও গ্রিল লাগানোর কাজ বন্ধ করতে বলে। তাই আমরা কাজ বন্ধ রেখেছি।
তিনি আরও বলেন, এর আগে দুই দেশের অনুমতি নিয়ে মসজিদ নির্মাণ হয়েছে। মসজিদ নির্মাণের আগে বিএসএফ বিভিন্ন কথা বলে নির্মাণ কাজে বাধা দেয়। ২০১১ সালে বাংলাদেশ ও ভারতের উচ্চ পর্যায়ে বৈঠকের পর আস্তে আস্তে মসজিদ নির্মাণ কাজ শেষ হয়।
রংপুর ৬১ বিজিবির বড়খাতা দোলাপাড়া বিজিবির কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার ইব্রাহিম মোল্লা জানান, বিজিবির ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ শনিবার বিকেলে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসবেন। মসজিদের জানালার থাই গ্লাস ও গ্রিল লাগানোর বিষয়ে বিএসএফের সঙ্গে আলোচনা চলছে।
প্রসঙ্গত, হাতীবান্ধার উপজেলার দোলাপাড়া সীমান্ত এলাকায় অনেক বছর আগে এক দরবেশ বসবাস করতেন। দরবেশের মৃত্যুর পর তাকে মসজিদের পাশেই সমাহিত করা হয়। পরে মসজিদটি বড় আকারে নির্মাণ করা হয়। ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের সময় মসজিদ ও মাজারটি সীমান্তের জিরো লাইনে (নো ম্যান্স ল্যান্ড) পড়ে। দরবেশের মাজারের পাশে মসজিদ নির্মাণ করা হয়। মসজিদের নামকরণ করা হয় দোলাপাড়া কেরামতিয়া বড় মসজিদ। এ মসজিদে প্রতি শুক্রবার দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে হাজারো নারী-পুরুষ বিভিন্ন নিয়তে নামাজ পড়তে আসেন।
Advertisement
রবিউল হাসান/আরএআর/এমএস