জাতীয়

হাল নাগাদে বাদ পড়ছেন হাজারো ভোটার

তথ্য সংগ্রহের বাকি আর মাত্র কয়েক দিন। অথচ এখনও সব বাড়ি যাননি তথ্য সংগ্রহকারীরা। নেই কোনো  প্রচারণাও। আবার ভোটারদের অসহযোগিতার কারণেও হাজারো ভোটার যোগ্য ব্যক্তি বাদ পড়ছেন তালিকা থেকে। জানা গেছে, রাজধানীর ১৫টি থানায় তথ্য সংগ্রহের জন্য ৪৪৮ জন সুপারভাইজার ও ২ হাজার ২৩৯ জন তথ্য সংগ্রহকারী নিয়োগ করা হয়েছে। এছাড়া ৯২টি রেজিস্ট্রেন কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। কিন্তু অধিকাংশ এলাকায় তথ্য সংগ্রহকারীকে এখনও ঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায়নি। কোথাও পোস্টারিং ও মাইকিং করা হয়নি বলে অধিকাংশ নাগরিক অভিযোগ করেছেন।এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার মো. আবু হাফিজ জাগো নিউজকে বলেন, হালনাগাদে কেউ ভোটার হতে না পারলে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। আইন অনুযায়ী বাদ পড়া ভোটারদের সারা বছরই ভোটার করা হবে। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে সংশ্লিষ্ট থানা বা উপজেলা নির্বাচন অফিসে গেলে যে কোনো সময় ভোটার হওয়া যাবে।জাগো নিউজের অনুসন্ধানে জানা যায়,  নির্বাচন কমিশনের (ইসি) দুর্বল ব্যবস্থাপনায় রাজধানী ঢাকা ছাড়াও চট্টগ্রামেও কয়েক লাখ ভোটার বাদ পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। কারণ তথ্য সংগ্রহকারী স্কুলশিক্ষকরা জানিয়েছেন, স্কুলের ক্লাস  শেষে বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করা তাদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। এছাড়া অনেকের বাড়িতে গেলেও দরজা বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। উত্তর যাত্রাবাড়ীর রিণা পারভীন এ প্রতিবেদককে জানান, তার পরিবারে তিনজন ভোটারযোগ্য ব্যক্তি থাকলেও এখনও তথ্য সংগ্রহকারীরা তাদের ফ্ল্যাটে যাননি। অথচ পাশের ফ্ল্যাট থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। মালিবাগের রফিকুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, ভোটার তালিকা হালনাগাদের কথা জানেনই না তিনি। ইসির এক মনিটরিং কর্মকর্তা বিষয়টি স্বীকার করে জানান, স্কুল শিক্ষকদের ক্লাস শেষে বাড়ি বাড়ি যাওয়াটা অনেক কঠিন হয়ে পড়েছে। এ কারণে অনেক বাড়ি বা পরিবার এখনও হালনাগাদের বাইরে রয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে রাজধানীর উত্তরা এলাকার এক স্কুলশিক্ষক বলছেন, ভোটার তালিকা হালনাগদের পাশাপাশি স্কুলেও উপস্থিত হতে হচ্ছে তাদের। এই দুই কাজ একসাথে করা অসম্ভব। তাই প্রতিটি বাড়ি বাড়ি যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না তাদের। আবার অনেকে দরজা খুলতে ভয় পান। একারণে ফিরে আসতে হচ্ছে। তেজগাঁও আদর্শ স্কুলের শিক্ষক ও তথ্য সংগ্রহকারী কর্মকর্তা আল আমি হোসেন বলেন, তেজগাঁও এলাকার ভাসমান মানুষ, শ্রমিক ও বস্তিবাসীদের অধিকাংশই প্রয়োজনীয় তথ্য-প্রমাণ দিতে পারছেন না। ভোটার হওয়ার যোগ্য হলেও এ কারণে ভোটার হতে পারছেন না তারা। এবিষয়ে ঢাকার আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মিহির সরোয়ার মোর্শেদ জানান, তথ্য সংগ্রহকারীরা বাড়ি বাড়ি গেলেও ভোটার হতে আগ্রহী ব্যক্তিদের পাওয়া যাচ্ছে না। অনেক এলাকায় মানুষ ঘরের দরজা খুলছে না। এ কারণে হালনাগাদে অনেকে বাদ পড়ে যাচ্ছেন।প্রসঙ্গত, ঢাকাসহ সারা দেশের ১৩৮ থানা বা উপজেলায় ৭ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয়েছে ছবিসহ ভোটার তালিকা হালনাগাদের তথ্য সংগ্রহের কাজ। আইন অনুযায়ী তথ্য সংগ্রহকারীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটারযোগ্য এবং ভোটারযোগ্য নন (১৫ থেকে ১৭ বছর বয়সী)- এমন ব্যক্তিদের নাম তালিকাভুক্ত করবেন। আগামী ২২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ভোটারের তথ্য সংগ্রহ কার্যক্রম চলবে। আর ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে ২০ অক্টোবর পর্যন্ত নিবন্ধন কার্যক্রম পরিচালনা করবে ইসি।এইচএস/এসকেডি/এমএস

Advertisement