বিবাহিত এক ব্যক্তি ব্যবসায়িক সফরে গিয়ে অপরিচিত এক নারীর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপনের সময় হার্ট অ্যাটাকে মারা যান। তার মৃত্যুর জন্য দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে সেই প্রতিষ্ঠানকে, যে প্রতিষ্ঠানের হয়ে তিনি সফরে গিয়েছিলেন।
Advertisement
ঘটনাটি ফ্রান্সের। বুধবার প্যারিসের একটি আদালত এই রায় দিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী পত্রিকা দ্য নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, জোভিয়ার এক্স নামের ওই ব্যাক্তি প্যারিসভিত্তিক রেলওয়ে কোম্পানি টিএসওর একজন প্রকৌশলী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ওই ব্যক্তি যখন সদ্য পরিচয় হওয়া এক নারীর সঙ্গে তার হোটেল রুমে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করছিলেন তখনই তার মৃত্যু হয়।
প্যারিসের একটি আদালত ওই ফরাসি কোম্পানিকে কর্মীর মৃত্যুর জন্য দায়ী করে অর্থদণ্ডের রায় দিয়েছেন। আদালত বলেছেন, তার মৃত্যু একটি ‘শ্রম-সংশ্লিষ্ট দুর্ঘটনা’, যার দায় কোম্পানিকেই নিতে হবে এবং এজন্য মৃতের পরিবার প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ পাবারও অধিবার রাখে।
Advertisement
অবশ্য কোম্পানির পক্ষ থেকে যুক্তি দেয়া হয়েছে, ওই ব্যক্তি যখন সদ্য পরিচয় হওয়া এক নারীর সঙ্গে তার হোটেল রুমে গিয়েছিলেন, তখন তিনি তার অফিসের দায়িত্ব পালন করছিলেন না। সুতরাং, ওই সময় মৃত্যু হলে তার দায় প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের নয়।
কিন্তু আদালত বলেন, ফ্রান্সের সংশ্লিষ্ট আইন অনুসারে অফিসের কাজে সফরে থাকার সময় যে কোনো দুর্ঘটনার দায় অবশ্যই অফিস কর্তৃপক্ষকেই বহন করতে হবে।
২০১৩ সালে অফিসের পক্ষ থেকে মধ্য ফ্রান্সে একটি সফরে যান জেভিয়ার। ওই সফরে অপরিচিত এক নারীর সঙ্গে হোটেলে সময় কাটান তিনি। যৌন সহবাসের মাঝে হঠাৎ হার্ট অ্যাটাক হলে কিছুক্ষণের মধ্যে জেভিয়ার মারা যান।
টিএসওর দাবি, জেভিয়ার সম্পূর্ণ অপরিচিত এক ব্যক্তির সঙ্গে বিয়ে বহির্ভূত সম্পর্ক স্থাপন করতে গিয়ে মারা গেছেন। তাই এ দায় নিতে তারা বাধ্য নয়।
Advertisement
এ ঘটনায় রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বীমা কোম্পানি সিদ্ধান্ত জানিয়েছিল যে, জেভিয়ারের মৃত্যুকে ‘কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় মৃত্যু’ হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে। কিন্তু জেভিয়ারের অফিস এই সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে আদালতে আপিল করে।
আপিলের শুনানিতে বীমা কোম্পানি দাবি করে, যৌন সম্পর্কও গোসল করা আর খাবার খাওয়ার মতোই একটি স্বাভাবিক কাজ। তাই ব্যবসায়িক সফর চলাকালে সহবাসের সময় মৃত্যুও প্রতিষ্ঠানেরই দায়িত্ব।
বুধবার প্যারিসের আপিল আদালত তার রায়ে আগের সিদ্ধান্তই বহাল রাখেন।
আদালত বলেন, একজন কর্মী যখন অফিসের পক্ষ থেকে কোনো ব্যবমায়িক সফরে থাকবেন, তখন সফরের পুরোটা সময়ের জন্য তিনি অফিসের কাছ থেকে সামাজিক সুরক্ষা পাবেন। এ সময়ের মধ্যে পরিস্থিতি যা-ই হোক না কেন, এই সুরক্ষা পাবার অধিকার তার থাকবে।
এসআর/এমকেএইচ