শুক্রবার থেকে আফ্রিকার দেশ কেনিয়া, ঘানা এবং মালাওয়ির বিভিন্ন স্থানে প্রথমবারের মতো ম্যালেরিয়ার টিকা প্রয়োগ করা হচ্ছে। এখন থেকে রুটিন মাফিক এই টিকা প্রদান করা হবে। ম্যালেরিয়ার টিকা আবিষ্কারের পর প্রথমবারের মতো এই টিকাদান কর্মসূচি শুরু হচ্ছে।
Advertisement
আগামী তিন বছরে প্রায় তিন লাখ শিশুকে এই টিকা প্রদান করা হবে বলে আশা প্রকাশ করা হয়েছে। এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রতি বছর সারা বিশ্বে প্রায় চার লাখ মানুষ ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছে। এদের মধ্যে অধিকাংশই শিশু।
এর আগে গত এপ্রিলে প্রথমবারের মতো পরীক্ষামূলক টিকার কথা জানানো হয়। প্রায় ৩০ বছর ধরে গবেষণার পর এই টিকা আবিষ্কৃত হয়েছে। পরীক্ষামূলকভাবে এই টিকা প্রথম দেয়া হয় আফ্রিকার মালাওয়িতে।
আরটিএস নামের এ প্রতিষেধকটি শিশুদের ম্যালেরিয়া প্রতিরোধে অত্যন্ত সহায়ক হবে বলে উল্লেখ করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। সে সময়ই জানানো হয় যে, প্রাথমিকভাবে মালাউয়িতে দু’বছর পর্যন্ত শিশুদের এই প্রতিষেধক দেয়া হবে।
Advertisement
পরবর্তী ধাপে পাইলট প্রজেক্টের অংশ হিসেবে ঘানা এবং কেনিয়ায় ‘আরটিএসএস’ নামে এই প্রতিষেধক দেয়া হবে বলেও জানানো হয়। মোট তিন লাখ ৬০ হাজার শিশুকে এই প্রতিষেধক দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। এর পরে বিশ্বের আর কোন দেশে এই প্রতিষেধক পাঠানো যায়, তা ঠিক করবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
আফ্রিকা থেকে ম্যালেরিয়া প্রতিরোধী অভিযান শুরুর কারণ হিসেবে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে বর্তমানে বিশ্বে প্রতিবছর ৪ লাখ ৩৫ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। ২০১৭ সালে বিশ্বজুড়ে ম্যালেরিয়ায় যত মৃত্যু হয়েছে, তার ৯৩ শতাংশই আফ্রিকার দেশগুলোতে।
টিকাটি উদ্ভাবন করেছে গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইন বা জিএসকে। ২০১৫ সালে ‘ইউরোপিয়ান মেডিসিন অ্যাজেন্সি' এর অনুমোদন দেয়। একটি পরীক্ষায় শিশুদের ওপর ৪ বার প্রয়োগে এর ৩০ ভাগ কার্যকারিতার প্রমাণ মিলেছে। কিন্তু সময়ের সঙ্গে আবার এর কার্যকারিতা কমে যাওয়ার প্রবণতাও আছে। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে ব্যথা, জ্বর এবং খিঁচুনি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
জিএসকে এবং তার সহযোগীরা ৩০ বছরের প্রচেষ্টায় প্রায় ১০০ কোটি ডলারখরচ করে টিকাটি উদ্ভাবন করেছে। চলমান প্রকল্পে তারা ১ কোটি টিকা বিনামূল্যে সরবরাহ করছে। পরবর্তীতে বড় ধরনের প্রকল্পের মাধ্যমে বিনিয়োগকৃত অর্থ তুলে আনার পরিকল্পনা চলছে বলে জানিয়েছেন জিএসকের এক মুখপাত্র। আফ্রিকায় প্রতি বছর ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা আড়াই লাখেরও বেশি।
Advertisement
টিটিএন/এমএস