অগ্রীম ১০ হাজার টাকা জমা না দেয়ায় রাজধানীর কাকরাইলে অবস্থিত ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে অসুস্থ স্ত্রীকে ভর্তি করাতে পারেননি কাওসার আজম নামে এক ব্যক্তি। আপাতত দুই হাজার টাকা জমা নিয়ে অসুস্থ স্ত্রীকে ভর্তি করাতে বারবার অনুরোধ জানিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের মন গলাতে পারেননি তিনি। হাসপাতালের কাউন্টারের কর্তব্যরত কর্মকর্তার সাফ জবাব, আগে ১০ হাজার টাকা জমা দেন। তারপর ভর্তি ও অপারেশন। নিরুপায় হয়ে কাওসার আজম ছুটে যান মগবাজারের আল বারাকাহ হাসপাতালে। বর্তমানে (রাত ১১টায়) কাওসার আজম নামের ওই ব্যক্তির মুমূর্ষু স্ত্রীর অস্ত্রোপচার চলছিল। আজ (বৃহস্পতিবার) রাতে এ ঘটনা ঘটে।
Advertisement
গণমাধ্যমকর্মী কাওসার আজম জানান, তার স্ত্রী নাসরিন খানম ছয় সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। দিন চারেক আগে তার স্ত্রীর হঠাৎ ব্লিডিং (রক্তপাত) শুরু হয়। কী কারণে ব্লিডিং হচ্ছে তা জানতে স্ত্রীকে ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে নিয়ে যান। চিকিৎসকরা দেখে নিশ্চিত করে কিছু না বলে দুই-তিনদিন অপেক্ষা করতে বলেন। আজ আবার ব্লিডিং শুরু হলে তাকে ফের ওই হাসপাতালে নেয়া হয়। এ সময় আলট্রাসনোগ্রাম করে ডাক্তার ভর্তির উপদেশ লিখে দেন।
কাওসার আজম জানান, ওই সময় তিনি অফিসে ছিলেন। খবর পেয়ে তিনি অফিস থেকে হাসপাতালে ছুটে যান। এ সময় চিকিৎসকের কাগজ নিয়ে কাউন্টারে গেলে কর্তব্যরত কর্মকর্তা তাকে আগে ১০ হাজার টাকা ভর্তি ও অপারেশন বাবদ ২০ হাজার টাকা লাগবে এবং এ মুহূর্তে ভর্তির জন্য ১০ হাজার টাকা অগ্রীম পরিশোধ করতে হবে বলে জানান।
এ সময় কাওসার আজম ওই ব্যক্তিকে জানান, তার কাছে এ মুহূর্তে দুই হাজার টাকা আছে। ওই টাকা রেখে তাকে ভর্তি করলে তিনি কিছুক্ষণ পর ডেবিট কার্ডের মাধ্যমে টাকা তুলে জমা দেবেন। কিন্তু তাকে বলা হয়, আগে টাকা জমা দেয়া ছাড়া কিছুতেই ভর্তি করবেন না, অস্ত্রোপচারও করবেন না।
Advertisement
কাওসার আজমের অভিযোগ এ নিয়ে বাদানুবাদ শুরু হলে কাউন্টার থেকে ফাইল ছুড়ে মারা হয়। অতঃপর নিরুপায় হয়ে তিনি দ্রুত গাড়ি ডেকে মগবাজারের আল বারাকাহ হাসপাতালে অসুস্থ স্ত্রীকে নিয়ে যান। সেখানে স্ত্রীর অস্ত্র্রোপচার (ডিএনসি) হয়। তিনি বলেন, এ হাসপাতালে ভর্তিরও প্রয়োজন হয়নি। ১০ হাজার টাকার মধ্যে সব হয়ে গেছে।
এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে কাওসার আজম বলেন, মুমূর্ষু রোগীর ক্ষেত্রে ইসলামী ব্যাংক হাসপাাতালের এ আচরণ তাকে ভীষণ ব্যথিত করেছে। আগে ১০ হাজার টাকা জমা না দিলে রোগী ভর্তি করা হবে না এমন কথা শুনে তিনি বিস্মিত হন।
অভিযোগের ব্যাপারে জানতে ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালের সহকারী পরিচালক নাজমুল হাসানের মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি কল রিসিভ করেননি।
এমইউ/বিএ
Advertisement