দেশজুড়ে

রিস্তাকে নিয়ে সারাক্ষণ কাঁদছেন তার বাবা-মা

নয় বছর বয়সী শিশু উম্মে হাবিবা রিস্তাকে দেখে বোঝার উপায় নেই যে, সে অসুস্থ। খুবই চঞ্চল। মুখে সব সময় হাসি তার। রিস্তার চঞ্চলতা ও সারাক্ষণ হাসিমাখা মুখ দেখে বাবা-মাও কখনও বুঝতে পারেনি যে, রোগটা তার জন্ম থেকেই।

Advertisement

কিছুদিন হলো রিস্তা জানতে পেরেছে তার হার্টে একটি ছিদ্র রয়েছে। এটা জানার পর থেকে সব কিছু যেন থমকে গেছে তার। ভুলে গেছে খিল খিল হাসি। মৃত্যুর ভয়ে সারাক্ষণ মুখটা এখন গোমড়া থাকে তার। রিস্তা স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ে। জীবনের শুরুতেই তার এ অসুস্থতা বড় হওয়ার স্বপ্নগুলো চুড়মার করে দিয়েছে। মেয়ের চিকিৎসার কোনো প্রস্তুতি না থাকায় হতদরিদ্র বাবা-মা এখন আদরের মেয়েকে নিয়ে সারাক্ষণ কান্নাকাটি করছে।

দিনাজপুর সদর উপজেলার ১নং চেহেলগাজী ইউনিয়নের মাজাডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা মো. রুবেল হোসেন ও রুকসানা বেগম দম্পতির মেয়ে উম্মে হাবিবা রিস্তা।

সম্প্রতি তাকে দিনাজপুর জিয়া হার্ট ফাউন্ডেশন ও রিচার্স সেন্টারে ঢাকা থেকে আসা হার্ট, রক্তনালী ও বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ ও সার্জন ডা. মো. ফয়েজুল ইসলামকে দেখানো হয়। তিনি বলেছেন, হার্টের অপারেশন করা হলে রিস্তা পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠবে। তবে তা করতে হবে দ্রুততম সময়ের মধ্যে।

Advertisement

তিনি জানিয়েছেন, সমস্যাটি অনেক আগে থেকেই। ছিদ্রটি দিন দিন বড় হচ্ছে। এজন্য দ্রুত অপারেশনের প্রয়োজন। তার চিকিৎসা বাবদ প্রায় ৩ লাখ টাকা খরচ হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

রিস্তার বাবা মো. রুবেল হোসেন পেশায় দিনমুজর। কখনও অটোরিকশায়ও চালান তিনি। দিনমজুর বাবার আয়ে অনেক কষ্টে চলে তাদের সংসার। এরই মাঝে সন্তানের এমন সংবাদে ভেঙে পড়েছেন তিনি। এ কারণে কাজেও মন দিতে পারছেন না রুবেল।

রুবেল হোসেন বলেন, আমি রাজমিস্ত্রির সঙ্গে দিনমজুরির কাজ করি। কখনও রিকশাও চালাই। কোনো দিন কাজ থাকে, আবার থাকে না। কাজ থাকলে মাসে যা আয় করি সেটা দিয়ে সংসার ও মেয়ের ওষুধ কিনতে শেষ হয়ে যায়। অপারেশনের টাকা জোগাড় করার মতো কোনো সম্পত্তি নেই আমার। কেউ আমার মেয়ের চিকিৎসায় সহযোগিতা করলে হয়তো বাঁচাতো পারবো রিস্তাকে। তার বেঁচে থাকা নির্ভর করছে হৃদয়বানদের দয়ার ওপর।

শিশুটির মা রুকসানা বেগম বলেন, এলাকার মানুষের কাছে সাহায্য তুলে রিস্তাকে জিয়া হার্ট ফাউন্ডেশনে নিয়ে গেছিলাম। ডাক্তার কয়েকটি টেস্ট করে জানিয়েছেন আমার মেয়ের হার্টে একটি ছিদ্র রয়েছে। তাড়াতাড়ি নাকি অপারেশন করাতে হবে। অনেক টাকার প্রয়োজন। আমাদের তো এত টাকা নেই। আমার স্বামী রাজমিস্ত্রির সঙ্গে দিনমজুরির কাজ করে। এখন এত টাকা কোথায় পাই? পরিবারের অভাবের কারণে রিস্তা এখন তার দাদির বাড়ি শহরের বালুবাড়ীতে থাকে। আরও আমরা থাকি গ্রামে।

Advertisement

রিস্তার বিষয়ে আরও জানতে কথা বলতে পারেন তার দাদি রওশনারার সঙ্গে। মোবাইল : ০১৭২২৬৪৯৫৮২।

এমদাদুল হক মিলন/এমএএস/পিআর