পঞ্চগড়ে দুটি ধর্ষণের ঘটনায় দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ১০ম শ্রেণির এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে জগদীশ চন্দ্র (৩০) নামে গৃহশিক্ষককে এবং সাত বছরের শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে আশরাফ আলী (৫৫) নামে এক রাজমিস্ত্রিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
Advertisement
এদের মধ্যে গৃহশিক্ষক জগদীশকে মঙ্গলবার এবং রাজমিস্ত্রি আশরাফকে বুধবার সকালে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। ধর্ষণের শিকার শিশু ও কিশোরীর ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে বলে পুলিশ জানায়।
পুলিশ ও মামলা সূত্রে জানা যায়, জেলা শহরের একটি মহল্লার এক ছাত্রীকে পাঁচ বছর ধরে প্রাইভেট পড়াতো গৃহশিক্ষক জগদীশ চন্দ্র (৩০)। সে পাশের জেলা ঠাকুরগাঁও এর রানীশংকৈল উপজেলার মহলবাড়ি এলাকার সুরেন চন্দ্রের ছেলে এবং পঞ্চগড় মকবুলার রহমান সরকারি কলেজে হিসাব বিজ্ঞান বিভাগে মাস্টার্সের শিক্ষার্থী। লেখাপড়ার জন্য সে পঞ্চগড় জেলা শহরে বসবাস করতো।
গৃহশিক্ষক জগদীশ মুসলিম হয়ে বিয়ে করার প্রলোভন দেখিয়ে সপ্তম শ্রেণি থেকে প্রাইভেট পড়ানোর আড়ালে ছাত্রীর সঙ্গে দৈহিক সম্পর্ক গড়ে তোলে। ছাত্রীর বাবা দ্বিতীয় বউ নিয়ে অন্য এলাকায় বাস করেন। ছাত্রীর মা এবং বড় ভাইসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা প্রতিদিন বাড়ির বাইরে কাজ করতে যান। এ সুযোগে ছাত্রীর সঙ্গে দৈহিক সম্পর্ক চালিয়ে যায় জগদীশ।
Advertisement
সম্প্রতি কিশোরী বিয়ের কথা বললে টালবাহানা শুরু করে জগদীশ। ৪ সেপ্টেম্বর ওই কিশোরী দৈহিক সম্পর্কে আপত্তি জানালেও জোরপূর্বক ধর্ষণ করে জগদীশ। পরে বিষয়টি কিশোরী তার পরিবারকে জানায়। ৯ সেপ্টেম্বর রাতে জগদীশ আবারও তাকে ধর্ষণ করতে গেলে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেন স্থানীয়রা। এ ঘটনায় ছাত্রীর বড় ভাই বাদী হয়ে থানায় ধর্ষণ মামলা করেন।
এদিকে, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জেলা শহরের পশ্চিম মোলানি এলাকার আশরাফ আলী নামে রাজমিস্ত্রিকে সাত বছরের শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আশরাফ শিশুটির সম্পর্কে প্রতিবেশী দাদা। প্রতিবেশী হওয়ায় শিশুটি আশরাফের বাড়িতে খেলতে যেত। বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে শিশুটিকে ধর্ষণ করে আশরাফ।
পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার সকালে আশরাফ ওই শিশুকে বাড়িতে ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করে। দুপুরে শিশুটির শরীরে রক্ত দেখে প্রাথমিকভাবে রক্ত আমাশয়ের ধারণা করে পরিবার। কিন্তু বিকেলে তাকে ফুসলিয়ে বাসায় নিয়ে আবারও ধর্ষণ করে আশরাফ। এ সময় চিৎকারে পরিবারের লোকজন শিশুটিকে উদ্ধার করে এবং আশরাফ আলীকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেন। এ ঘটনায় শিশুটির বাবা বাদী হয়ে আশরাফের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করেন।
সদর থানা পুলিশের ওসি আবু আক্কাছ আহমদ বলেন, ধর্ষণের অভিযোগে পৃথক মামলায় অভিযুক্ত দুইজনকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। শিশু ও কিশোরীর ডাক্তারি পরীক্ষা ও ২২ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়েছে।
Advertisement
পঞ্চগড় জেলা পরিষদের সদস্য ও নারী নেত্রী আক্তারুন নাহার সাকী বলেন, ধর্ষণের খবর পেয়ে দুটি ঘটনায় নির্যাতিতদের সঙ্গে কথা বলেছি। ঘটনা শুনে মনে হলো সামাজিক অবক্ষয় চরম পর্যায়ে নেমেছে। এদের কঠিন সাজা হওয়া দরকার। পাশাপাশি আমাদের সামাজিক আন্দোলন শুরু করা প্রয়োজন।।
সফিকুল আলম/এএম/এমএস